শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

শীত চলে এসেছে, শীতের একটি পছন্দের খাবার খেজুরের রস। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের সামনে আলোচনা করতে চলেছি। শীতকালে বিশেষ বিশেষ খাবারের মধ্যে খেজুরের রস একটি। খেজুরের রস খেতে সবাই পছন্দ করেন। তাইতো শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা উচিত।

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

তাই আর কিছু না ভেবে শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত ভাবে জানাতে চাই। তাহলে চলুন আর দেরি কেন শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা কি তা জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর রসের উপকারিতা

পুষ্টিগত দিক দিয়ে খেজুরের রসের  উপকারিতা অনেক। গ্রামে বা শহরে শীতকালীন কৈশোরের সঙ্গে  জড়িয়ে আছে খেজুরের রসের মাদকতা। খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর খনিজ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদান। তাই আজকের এ পোস্টে আপনাদের জন্য খেজুরের রসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানাতে চাই। তাহলে চলুন খেজুরের রসের উপকারিতা গুলো কি তা জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে তা জেনে নিন

১. প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক

খেজুরের রসে দ্রবীভূত শর্করা বা গ্লুকোজের পরিমাণ কমবেশি ১৫% থেকে২০% এবং এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন। সহজপাচ্য ফ্যাট এবং খনিজ বা মিনারেল। এত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং জলীয় অংশ বেশি হওয়ার কারণে খেজুরের রস কে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিঙ্ক বলা হয়ে থাকে।

২. হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি গুড়ে প্রচুর পরিমাণে লৌহ ও আয়রন থাকে। ফলে শীতকালে খেজুরের রস খেলে বা খেজুরের তৈরি গুড় খেলে রক্তে প্রচুর পরিমাণ হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।

৩. শরীরে ক্লান্তি দূর করতে

খেজুরের রসে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও সোডিয়াম রয়েছে। খেজুরের রস বা গুড় আমাদের পেশীকে গঠনকরতে ও শক্তিশালী করতে বিশেষ কার্যকরী। তাছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়ামের কারণে আমাদের অনেক সময় শরীরে ক্লান্তি বা ঘাটতি দেখা দেয়। তাই খেজুরের রস বা গুড় নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে শরীরে অবসাদ ফিরে আসে।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ উপাদান। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। ফলে সর্দি কাশির হাত থেকেও বাঁচায়।

৫. মেদ ঝরাতে

অতিরিক্ত শরীরের মেদ ঝরাতে এবং চিনির পরিমাণ কম খাওয়ার বিপরীতে আপনি খেজুরের গুড় খেতে পারেন। এক্ষেত্রে এর পরিবর্তন হিসেবে অন্য কিছু ভাবা যায় না। পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থাকায় শরীরের মেটাবোলিজম বৃদ্ধি পায়। যার ফলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

খেজুরের রসে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করার মতো ক্ষমতা রয়েছে। খেজুরের গুড়বা রস অনিদ্রা ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতেও বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।

৭. হজম শক্তি বাড়াতে

খেজুরের রস আমাদের হজমের সাহায্যকারী উৎসেচকগুলির ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়। আপনি যদি খাওয়ার পর প্রতিদিন খেজুরের রস খান তাহলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম

শীতের কুয়াশা ঢাকা ভরে খেজুরের রস যেন এক অমৃত। শহরাঞ্চলে খেজুরের রস পাওয়া বিরল হলেও গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে শীতকালে খেজুরের রস ছাড়া শীত যেন অমানান। খেজুরের রসে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ সকল পুষ্টি উপাদান। আজকের এই পোস্টে আমরা শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের সামনে কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে কি মধু জমে যায়

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে ।কিন্তু খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম কি আমরা সকলে সঠিকভাবে জানি? তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টে খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিই।

১। খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম হল ভোরবেলা। সারা রাত জমে থাকে খেজুরের রস সকাল-সকাল খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। 

২। দিনে বা বেলা করে খেজুরের রস খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে তখন গাজন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এবং রসে অম্লত্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। 

৩। যার কারণে খেজুরের রসের স্বাদ নষ্ট হয়। দেরিতে খেজুরের রস খেলে বমি বা পেট খারাপের মতো সমস্যা হতে পারে।

৪। তাই সারা রাত জমে থাকা খেজুর রস ভোরবেলায় খাওয়া উত্তম। জমে থাকা খেজুরের রসে কোন পাখি বা দূরে যেন মুখ না দেয় সেদিকে সাবধানতা অবলম্বন করা সকলের উচিত।

খেজুরের রস দিয়ে তৈরি খাবার

শীতকালে বিভিন্ন পলি পিঠার ধুম পড়ে যায় শীতের আমেজ চারিদিকে মৌ মৌ করে। আর শীতকালে খেজুরের রস ছাড়া শীত যেন একেবারেই বেমানান। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি খাবার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। আজকের এই পোস্টে আমরা শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। তাহলে চলুন খেজুরের রস দিয়ে তৈরি খাবার সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই।

খেজুরের রস বিশেষ করে প্রাকৃতিক ড্রিংকস হিসেবে আমরা খেয়ে থাকি। এছাড়াও খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় গুড় যা আমরা বিভিন্ন পিঠা পুলিত ব্যবহার করে থাকি। তেমনই কিছু বিশেষ বিশেষ পিঠা রয়েছে চলুন তাহলে নিম্নে সে পিঠাগুলো নাম জেনে নিই।

১। চালকুমড়ার মিঠাই

২। রস চিতই

৩। রসের পায়েস

৪। টইটম্বুর রসে চুটকি

৫। বিবিখানা পিঠা

৬। খেজুরের রসের ক্ষীর পায়েস

খেজুরের রসের অপকারিতা

খেজুরের রস গ্রাম অঞ্চল এবং শহরাঞ্চল সবার কাছেই একটি প্রিয় পছন্দের খাবার। শীতকালের খেজুরের রস ছাড়া যেন শীত একেবারেই বেমানান। খেজুরের রসে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উপাদান এছাড়াও প্রাকৃতিক ড্রিংস হিসেবে আমরা খেজুরের রস খেতে পারি। কিন্তু খেজুরের রসের কিছু অপকারিতা হয়েছে সেগুলো আমাদের জানা সকলেরই জরুরী।

আরো পড়ুনঃ কমলা লেবুর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

আজকের এই পোস্টে আমরা শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। চলুন তাহলে খেজুরের রসের উপকারিতা গুলো কি তা জেনে নিই।

শীতকাল নিয়ে কিছু পোস্টঃ

অপকারিতা 

খেজুরের রস প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এতে ১৫-২০% দ্রবীভূত শর্করা থাকে। খেজুরের গুড় আখের গুড় থেকেও বেশি মিষ্টি, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। খেজুরের গুড়ে প্রোটিন, ফ্যাট ও মিনারেল সবই রয়েছে। খেজুরের রসে যেন কোনো পোকামাকড় মুখ না দেয়। বাদুড় বা পাখির মুখ দেওয়া রস খেলে রোগ হতে পারে।

এছাড়াও রস যেহেতু খোলা অবস্থায় গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, তাই এতে জীবাণু থাকতে পারে।কাচা অবস্থায় না খাওয়াই উত্তম। তবে ডায়াবেটিস থাকলে খেজুরের রস খাওয়ার থেকে বিরত থাকবেন।তবে খেজুরের রসে অপকারিতা চাইতে উপকারিতা অনেক বেশি।

শেষ কথাঃ শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা যারা আজকের এ পোস্টটি আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। তারা নিশ্চয়ই শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। শীতকালে খেজুরের রস গ্রাম বাংলা মানুষের কাছে সকলেরই একটি পছন্দের খাবার হিসেবে বিবেচিত। খেজুরের রস দিয়ে বিভিন্ন পিঠাপুলিও শীতকালে বানানো হয়ে থাকে। শীতকালে খেজুর রস খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তাই আসুন শীতকালে নিয়ম মেনে খেজুরের রস খায় এবং সুস্থ থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন