মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য আমরা মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব। কারণ সামনেই গরম তাই এই গরমে আমাদের কম বেশি সকলেরই মুখে ঘামাচি সমস্যায় ভুগে থাকি। তাই অনেকে ভেবে থাকেন মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত।

মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত

তাই ভাবনা ছেড়ে মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ বিষয়ে জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করেই মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত সে বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত

ঘামাচি থেকে মুক্তির উপায়

গরমের দিনটি অনেকেরই অপছন্দ কেন জানেন? কারণ গরম এলে মানুষ ঘামাচি যন্ত্রণায় ভুগে থাকে। এবং অনেকেই মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ সম্পর্কে জানতে চান । আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য আমরা মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিতএ সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। থেকে থেকে মুক্তির উপায় জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

আরো পড়ুনঃ যক্ষা রোগের কারণ ও তার প্রতিকার

নিমপাতা

শরীরের যেকোনো ব্যাকটেরিয়া দূর করতে নিম পাতা এক বিশেষ কার্যকারী মহা ঔষধ।নিমপাতায় আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ঘামাচি নিরাময়ে সাহায্য করে। তাই নিমপাতার পেস্ট করে শরীরে লাগিয়ে ভালো ভাবে শুকাতে হবে। এভাবে ৪-৫ বার দিনে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ঘামাচি হারিয়ে যাবে।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেল ঘামাচিতে অনেক  উপকৃত। সপ্তাহে দুই দিন শরীরে নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে ঘামাচি ভালো হয়ে যায়। সেজন্য অ্যালোভেরা পাতা থেকে অ্যালোভেরা জেল বের করে তা শরীরে ভালোভাবে প্রলেপ করে মেখে নিতে হবে এবং জেলের প্রলেপ শুকিয়ে গেলে পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। ব্যবহারের ফলেই উপকার বুঝতে পারবেন।

মুলতানি মাটি

মুলতানি মাটি ঘামাচিতে অনেক উপকার করে। ৪/৫ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, গোলাপ জল ২/৩ টেবিল চামচ পরিমাণ মত পানি দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। ঘামাচির জায়গায় এই পেস্ট ২/৩ ঘন্টা রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে কয়েক দিনের মধ্যে ঘামচি ভালো হয়ে যাবে।

লেবুর রস

লেবুতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা ঘামাচি দূর করতে বেশ কার্যকরী। তাই আপনাকে দিনে ৩/৪ গ্লাস লেবুর রস মিশ্রিত পানি পান করতে হবে। এর ফলে আপনি ঘামাচি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডা তো আমরা বিভিন্ন জিনিস এই ব্যবহার করে থাকি, কিন্তু ঘামাচি সমাধান পেতে ব্রেকিং সোডা? হ্যাঁ বন্ধুরা, ১ কাপ ঠাণ্ডা পানিতে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড় বেকিং সোডার পানিতে ভিজিয়ে তা ভালো করে নিংড়ে ঘামাচির স্থানে লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

আলু

গরমে ঘামাচি দূর করতে আলু? আশ্চর্য হওয়ার কোন কারণ নেই, আলু শুধু ও রান্নার কাজে সবজি হিসেবেই নয় এটি ঘামাচি সমস্যা দূর করতেও বিশেষ কার্যকারিতা পালন করে। কাঁচা আলুর পেস্ট ব্যবহার করে এর ফলাফল নিজেই দেখুন।

ঘামাচি পাউডার কোনটা ভালো

গরমে আমাদের বিশেষ করে একটাই মেইন সমস্যা সেটা হল ঘামাচি। ঘামাচি সমস্যায় ভোগেন না এমন মানুষ কমই আছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য আমরা মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ সম্পর্কে কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি।

ঘামাচিতে আমরা বিভিন্ন রকমের পাউডার ব্যবহার করে থাকি কিন্তু কোন পাউডার আমাদের ঘামাচি ক্ষেত্রে কার্যকারিতা পালন করবে সে ক্ষেত্রে অনেকেই অসচেতন থাকি। তাই ঘামাচি পাউডার কোনটা ভালো তা  আপনাদের জানাবো। যা আপনাদের ঘামাচির ক্ষেত্রে অনেক উপকারে দিবে।

১। বোরো প্লাস (Boro Plus Ice Cool)

২। গোল্ড বন্ড পাউডার ও লোশন ( Gold Bond)

৩। ওয়াইল্ড স্টোন কুল ট্যাল্ক ( Wild Stone Cool Talk)

৪। ডুড বডি পাউডার ( Dude Body Powder)

৫। ক্যানডিড ডেসস্টিং পাউডার (Candid Dusting Powder Expert Skin Solution ) 

৬। মুলতানি মাটি পাউডার (Multani Mati Powder)

৭। ইত্যাদি পণ্যসমূহ ঘামাচির জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

ঘামাচি মারার সাবান

গ্রীষ্মকালীন সময় আমাদের শরীরে বিভিন্ন চর্মরোগ গুলো দেখা দেয় তার মধ্যে একটি হল ঘামাচি। ঘামাচি আমাদের গরমে শরীরের প্রধান শত্রু। অনেকেই মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভুগে থাকেন। তাই আপনাদের জন্য ঘামাচি মারা সাবান সম্পর্কে কিছু ধারণা দেব চলুন তাহলে ঘামাচি মারার সাবান কি তা জেনে নি।

আরো পড়ুনঃ কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা

আমরা শরীরে ঘামাচির উৎপত্তি দেখা দিলে কম ক্ষার যুক্ত ব্যবহার করতে হবে। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিম সাবান পাওয়া যায়। নিম সাবান গুলো আপনার ঘামাচি দূর করতে বিশেষভাবে কাজ করে থাকে।

দিনের কমপক্ষে দুইবার গোসল করলেও শরীর থেকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া গুলো দূর হতে সাহায্য করবে।এই সময় গোসলের পানিতে যে কোনও অ্যান্টি-সেপটিক লোশান ব্যবহার করতে পারেন। তা ছাড়াও গোসলের পানিতে লেবুর রস, নিম পাতার রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে ত্বক ফ্রেশ থাকবে এবং জীবাণুমুক্ত হবে। আর নিম পাতার রস ঘামাচি দূর করতেও সাহায্য করে। 

ঘামাচির ক্রিম

ঘামাচি আমাদের খুবই পরিচিত একটি সমস্যা।এটি যেমন অস্বস্তিকর, তেমনি যন্ত্রণাদায়ক। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ বিষয়ে আপনাদের সামনে কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি অনেকেই ঘামাচির ক্রিম সম্পর্কে জানতে চান তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ঘামাচির ক্রিম সম্পর্কে আপনাদের কিছু জানাবো।

অতিরিক্ত ঘামাচির কারণে অস্বস্তি, জ্বালাপোড়া, শারীরিক দুর্বলতা, ঘামে অসহনশীলতা, ক্ষুধামান্দ্য, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা হতে পারে। পরবর্তী সময়ে ঘাম নিঃসরণ প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঘামের পরিমাণ কমে যেতে পারে। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের ঘামাচি থেকে সংক্রমণ হতে পারে।

ক্যালামাইন লোশন কাজে দেয়। বেশি মারাত্মক সমস্যা হলে চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে স্টেরয়েড ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়

বড়দের মতো বাচ্চারাও ঘামাচি সমস্যায় ভুগে থাকেন। ওদের সাথে সাথে বাচ্চাদের ও ঘামাচির সমস্যা দূর করতে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন রয়েছে ।আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ বিষয়ে আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি। তাহলে চলুন বাচ্চাদের ঘামাচি হলে কি করণীয় সে সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নেওয়া যাক।

নিয়মিত গোসল

শিশুর শরীর সুস্থ রাখতে গরমে নিয়মিত গোসল করান। অতিরিক্ত গরমে শরীরের বিভিন্ন ব্যক্তির সৃষ্টি হতে পারে। এবং শিশুদের বড় চুল রাখলেও মাথা ঘেমে অনেক সময় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তাই শিশুকে সুস্থ রাখতে এবং ঘামাচি থেকে দূরে রাখতে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। মনে রাখবেন শিশু রোদে খেলাধুলা করে সাথে সাথে গোসল করাবেন না।এটি মোটেও ঠিক নয় কারন এজন্য রোদ লেগে বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা হতে পারে।

খেয়াল করে পোশাক পরিবর্তন করা

শিশুরা বড়দের মতো অতিরিক্ত ঘামে তাই আপনার উচিত ঘামে যেন বাচ্চার পোশাক না ভিজে থাকে সেজন্য খেয়াল করে করে আপনি বাচ্চার পোশাকগুলো পরিবর্তন করে দিবেন।

খেয়াল করে শিশুর ঘাম মুছে দিতে হবে

গরমে ঘামাচি থেকে বাঁচতে নিয়মিত  খেয়াল করে শিশুর ঘাম মুছে দিতে হবে । এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে না ঘামে। ঘাম ও ধুলাবালি থেকেই ঘামাচির জন্ম হয়। শিশুদের ত্বক খুব কোমল তাই শিশুর ত্বকে গরমে খুব দ্রুত ঘামাচি উঠতে দেখা  দিয়ে থাকে। এ সময় সকাল-বিকাল দুই বেলা গোসল এবং শিশুকে ঘাম আর ঘামাচিতে অনেকটাই স্বস্তি দিতে পারে। 

শিশুকে পানি পান করান

গরমে শিশুকে বেশি বেশি পানি পান করান। এবং ঠান্ডা জাতীয় খাবারগুলো খেতে দিন। এছাড়া বিভিন্ন ফলের জুস করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন। কারণ এসব জাতীয় খাবার আপনার শিশুর শরীরকে ঠান্ডা রাখবে এবং ঘামাচি থেকে দূরে রাখবে।

নিয়মিত পাউডার ব্যবহার

শিশুদের শরীর গরম অতিরিক্ত ঘেমে ঘামাচির সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই আপনার শিশুর শরীরে ঘামাচি দূর করা পাউডার হালকা প্রলেপে দিয়ে রাখবেন। মনে রাখবেন কখনোই বাচ্চাদের শরীরে মোটা প্রলেপে পাউডার দেবেন না কারণ এতে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়।

ঘামাচি হলে যে কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকবেন

ঘামাচি একটি বিরক্তিকর ব্যাকটেরিয়া যুক্ত সমস্যা যা গরম কালে বেশি আমাদের ত্বকে সৃষ্টি হয়ে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত এ নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক কিছু আমরা আলোচনা করেছি। ঘামাচি হলে যে কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকবেন তা অবশ্যই জানা জরুরী। তাহলে চলুন আমাদের ঘামাচি হলে যে কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকবো তা ভালোভাবে জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ দাঁত সহজে পরিষ্কার করার উপায়

১। ঘামাচি হলে অনেক সময় আমরা অসহ্য যন্ত্রণায় ঘামাচি গুলো চুলকাতে থাকি  যা ভুল করেও নখ দিয়ে ঘামাচি চুলকাবেন না এ থেকে বিরত থাকুন।

২। ঘামাচিতে মুখের অতিরিক্ত খারাপ অবস্থা হলে কোন রকম প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না।

৩। ঘামচি হলে নাইলনের কোনো কাপড় বা যেসব কাপড় পড়লে আলো বাতাস ঢুকবে না এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে এমন পরা থেকে বিরত থাকুন।

৪। ঘর কখনো স্যাঁতস্যাঁতে রাখবেন না। সব সময় ঘর রাখুন আলো বাতাসসমৃদ্ধ!

৫। শরীরকে অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে দূরে রাখুন।

মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিতঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠক গণ আজকের এই আর্টিকেলে মুখে ঘামাচি হলে কি করা উচিত, বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়, ঘামাচি মারার সাবান, ঘামাচির ক্রিম ঘামাচি পাউডার কোনটা ভালো? ঘামাচি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url