নিম পাতার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেলটি ওপেন করেছেন তারা নিশ্চয়ই নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন আজকের এই আর্টিকালে আপনাদের জন্য আমরা নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনারা অনেকেই আছেন যারা নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না।

নিম পাতার উপকারিতা

তাহলে আর দেরি কেন, আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি ঝটপট জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ নিম পাতার উপকারিতা

নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জন্য আমরা নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানাতে এসেছি। নিম পাতা আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু আপনি যদি নিয়ম মেনে নিমপাতাটি না খেতে বাবা ব্যবহার না করতে পারেন তাহলে আপনি ভাল ফলাফল পাবেন না। তাহলে চলুন নিমপাতা খাওয়ার নিয়ম গুলো কি সে সম্পর্কে জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ বড়ই খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

ডাক্তারের মতে আপনি যদি নিয়মিত নিম পাতা খান তাহলে আপনার দেহের ক্ষতিকর টনিকস গুলো বের করতে সাহায্য করবে। এবং রক্তের ক্ষতিকর পদার্থ হল ধ্বংস করতে সাহায্য করবে। আমাদের শরীরকে সব সময় সুস্থ এবং সতেজ রাখবে।

প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে এটি বহু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হিসেবেও একটি ঔষধি উপাদান এর ফুল, পাতা, শিকড় , ডাল, মূলেও রয়েছে বিশেষ গুনাগুন। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি শরীরের উপকার অরূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান তাহলে টানা এক মাসের বেশি নিম পাতা খাবেন না। কারন আপনি যদি অমনি নিয়মিত ভাবে এক মাসের বেশি নিম পাতা খেতে থাকেন তাহলে শরীরের উপকার হওয়ার থেকে অপকার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে।

কিন্তু টানা এক মাস, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে যদি ১ থেকে ২ টো নিম পাতা খাওয়া যায় তাহলে আপনার শরীরলে কোন রোগ আক্রমণ করতে পারবে না।

নিম পাতার উপকারিতা

আমাদের আশেপাশে রয়েছে বিভিন্ন রকমের উপকারী ঔষধি গুন সম্পূর্ণ উদ্ভিদ। এদের মধ্যে সবচাইতে উপকারী উদ্ভিদ হলো নিম গাছ। নিম পাতা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা। তাই আপনাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নিমপাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি।

রক্ত পরিষ্কার করতে

প্রতিদিন নিম পাতার রস সেবন করলে আপনার রক্তের শর্করা কমে আসবে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। নিমপাতা শরীরের রক্তচলাচল ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি রক্ত পরিষ্কার নিয়ে চিন্তিত থাকতেন তাহলে প্রতিদিন নিমপাতা রস টানা একমাস সেবন করুন। এতে করে আপনার রক্তে থাকা দূষিত টনিক্স গুলো বের হয়ে যাবে। এবং আপনার রক্ত পরিষ্কার করতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে।

দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করতে

দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন নিমপাতা ব্যবহার করুন। এটি মুখের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। আপনার মুখে দুর্গন্ধ সহ মুখের ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস করে থাকে নিমপাতা।

পাশাপাশি নিমের তেল বিভিন্ন টুথপেস্ট এবং ফেসওয়াশে ব্যবহার করা হয়। কারণ এতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে Anti-microbial Antibodies উপাদান। তাই আপনার দাঁত ও মাড়িকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন নিয়মিত নিম পাতার ব্যবহার করুন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম খুবই উপকারী একটি উপাদান। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে নিম পাতা সেবন করা উচিত। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে সুগার বা ডায়াবেটিস মত রোগ আপনার শরীরে আক্রমণ করতে পারে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মহা ঔষধ।নিম পাতায় উপস্থিত রয়েছে স্যাকারাইডস ও লিওমনোয়েডস নামক উপাদান, যা মানব শরীরে ক্যান্সার উৎপন্নকারী কোষগুলিকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। নিম পাতার নির্যাস প্রস্টেট ক্যান্সারের কোষ গুলোকে ধ্বংস করতে বিশেষ কার্যকরী।

তাই প্রতিনিয়ত নিয়ম করে নিম পাতা বা নিম পাতার নির্যাস সেবন করা প্রয়োজন। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিনিয়ত নিমপাতা বা নিম পাতার নির্যাস সেবনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। তাই আসুন আমরা নিয়মিত নিমপাতা বা নিমপাতা নির্যাস ব্যবহার করি এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করি।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে

ম্যালেরিয়া রোগে নিম পাতা একটি বিশেষ ঔষধ। ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু বহনকারী ব্যাকটেরিয়া গুলিকে মেরে ফেলতে সক্ষম নিম। কারণ নিমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া উপাদান, যা ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেই সকল ঔষধে নিমের ব্যবহার করা হয়।

কৃমি নাশক হিসেবে নিম পাতার

কৃমি নাশ করতে নিম পাতার ভূমিকা অনেক। যদি শিশুদের পেটে কৃমির জন্ম হলে ওই শিশুদের চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এই কৃমি নির্মূল করতে নিম গাছের মূলের ছাল যদি শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতিনিয়ত নিয়ম করে গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে তিনবার খাওয়ানো হয়, তাহলে খুব কৃমি নাশ করা সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা

অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ

নিমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা মানবদেহের যেকোনো রোগের জীবাণুকে ধ্বংস করতে সক্ষম। প্রধানত নিম গাছের পাতায় এই অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বেশি পরিমাণে উপস্থিত রয়েছে।

এছাড়াও নিম গাছের পাতায় উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান। এই উপাদান গুলি যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া কে মেরে ফেলতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। 

চর্ম রোগে নিম পাতার ব্যবহার

আমরা অনেকেই চর্ম রোগে ভুগে থাকি, তাই আমাদের চর্মরোগ সারাতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানা জরুরী। আজকের এই আর্টিকেলে নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে অনেক কিছু জানিয়েছি। চলুন তাহলে চর্ম রোগে নিম পাতার ব্যবহার কতখানি কার্যকারিতা ভূমিকা রাখে তা সম্পর্কে জেনে নিই।

নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও উচ্চ মানের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। যা নানা ধরণের সংক্রমন প্রতিরোধ করে।

প্রাচীনকাল থেকেই ভেষজ ওষুধ হিসেবে চর্মরোগের চিকিত্‍সায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে নিমপাতা। আলসার, চিকেন পক্স চিকিত্‍সায় নিম পাতার অবদান অনেক। গবেষণায় জানা গেছে, প্রতিদিন গোসলের জলে একমুঠ নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে চর্মরোগ দূরে থাকবে এবং শরীর ঠাণ্ডা হবে।

রূপচর্চায় নিমপাতা

নিম পাতা শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নয়, এটি রূপচর্চার কাজও বিশেষভাবে কাজ করে। আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই নিম পাতার উপকারিতা জানতে চান? তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। রূপচর্চায় নিম পাতা সম্পর্কে কখনো শুনেছেন কি ?তাহলে চলুন  রূপচর্চায় নিম পাতা  কতখানি গুরুত্ব রাখে তা সম্পর্কে জেনে নিন।

স্বাস্থ্যকর চুল পেতে

স্বাস্থ্যকর ও ঝলমলে চুল পেতে নিয়মিত নিমের ফেসপ্যাক বা নিম তেল ব্যবহার করতে পারেন।

২৫০ মিলি নারকেল তেল একটা পাত্রে নিয়ে গরম করুন। ফুটন্ত তেলের মধ্যে বেশ কিছু নিম পাতা ছেড়ে দিয়ে চুলা বন্ধ করুন। এভাব চার ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর তেলটুকু একটা পাত্রে সংরক্ষণ করুন। প্রতি রাতে এই তেল মাথার ত্বকে মালিশ করুন। পরের দিন ধুয়ে ফেলুন।

ব্রণের সমস্যা

ব্রণ সমস্যা নতুন কিছু নয় ছেলেমেয়েরা প্রায় সময়  এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। এই ব্রণ সমস্যা দূর করতে নিয়মিত নিমের ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন। ১০ থেকে ১২ টি পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ভেজানো পাতাগুলো ভালোভাবে পেস্ট করে মুখে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এর পর ধুয়ে ফেলে আপনার পছন্দমত ময়শ্চারাইজার লাগান দেখবেন ব্রণগুলো আস্তে আস্তে সেরে গেছে।

ত্বকের জন্য ফেস প্যাক

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও ময়শ্চেরাইজার বানাতে গোলাপ জলের সঙ্গে এক চা-চামচ নিম পাউডার ও এ চা-চামচ তুলসি পাউডার মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। সেটা মুখের ত্বকে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এটা ত্বককে শুধু মসৃন ও উজ্জ্বলই করবে না, কালো দাগও দূর করবে।

আরো পড়ুনঃ মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিম হেয়ার মাস্ক

চুলের যত্নে নিম হিয়ার মাস্ক  খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।এক চা-চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে দুই চা-চামচ টক দই মেশান। এটা চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।

ডার্ক সার্কেল দূর করতে

চোখের কালো দাগ দূর করতে নিম পাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিমপাতা বেটে রস বের করে তুলার প্যাড কিছুক্ষণ সেই রসে ভিজিয়ে রেখে হালকা নিংড়ে চোখের উপর দিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। দেখবেন আপনার ডাক সার্কেলগুলো নিমেষে গায়েব হয়ে গেছে ।

নিম পাতার উপকারিতাঃ শেষ কথা

নিম পাতার উপকারিতা, রূপচর্চায় নিমপাতা, চর্ম রোগে নিম পাতার ব্যবহার, নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url