কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। কান পাকা একটি জটিল সমস্যা। কারণ কান আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন হওয়া আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। তাই আপনাদের জন্য আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকলে করণীয় চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু আলোচনা করতে চলেছি।

কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা

তাহলে চলুন আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন এবং আগে থেকেই সতর্ক থাকুন।

সূচিপত্রঃ কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা

কান পাকা রোগের কারণ

প্রিয় পাঠক আপনারা যারা আমাদের এই পোস্টটি পড়ছেন নিশ্চয়ই কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা জানতে আমাদের এ পোষ্টটি ওপেন করেছেন তাই আপনাদের জন্য আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকা রোগের কারণ কি তা জানাবো।

কান পাকার অনেক কারণ রয়েছে। বেশিরভাগ এই সমস্যা দেখা দেয় কানে পানি গেলে এবং গোসলের পর কান ভাল করে না মোছলে কানে পানি জমে কান পাকে। তা ছাড়া ও ব্যাকটেরিয়া কিংবা ফাঙ্গাসের সংক্রমনে কান পাকতে দেখা যায়।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

তা ছাড়া ও অযথা বারবার কান পরিষ্কার করলে এবং কানের ভিতরে একজিমা হলেও কান পাকতে পারে। একবার কান পাকলে অল্প কোন কারণে আবার কান পাকতে পারে। ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে ও আমাদের কান পাকা রোগ দেখা দিতে পারে।

কান পাকলে করণীয়

কান পাকা রোগ আমাদের কাছে পরিচিত একটি রোগ। শিশুদের পাশাপাশি এটি বড়দের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকতে পারে। কারো আবার কানের পর্দা ফাটার কারণ ও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের সঠিকভাবে কিছু তথ্য জানাতে চাই। তাহলে আসুন আমরা কান পাকলে করণীয় কি তা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিই।

২। কানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। বহিঃকর্ণ যেটা আমরা সাধারণত দেখতে পাই, মধ্যকর্ণ যেটা কানের পর্দার ওপাশে থাকে এবং অন্তঃকর্ণ যেটা থেকে কানের স্নায়ু তৈরি হয়। কানের পর্দা কানের ফুটার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এ পর্দার কাজ হল আমরা যে শব্দ শুনি সেই শব্দটাকে মধ্য কান দিয়ে কানের স্নায়ুতে নিয়ে যাওয়া।

২। পর্দা ফাটা থাকলে অবশ্যই কান শুকনা রাখতে হবে। কানের ভেতর যেন পানি না যায়। 

৩। গোসল করার সময় তুলাতে তেল দিয়ে ভিজিয়ে তারপর তুলাকে চিপে কানে দিয়ে গোসল করতে হবে।

৪। কোনো সময়ই পানির তলে সাঁতার কাটা যাবে না বা পানিতে ঝাঁপ দেয়া যাবে না।

৫। কানে ইনফেকশন থাকলে কানটা ঠিকমতো পরিষ্কার করা দরকার এবং তারপর কানে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দিতে হয়।

৬। কান পরিষ্কার করা জরুরি এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে এটা করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কদাচিৎ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হবে বা ইনজেকশন দেয়া লাগতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ কান শুকনা অবস্থায় কানে দেয়া থেকে বিরত থাকুন- এটা কানে মারাত্মক ক্ষতি করে ফেলতে পারে। এমনকি কানে শোনা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কাজেই শুকনা কানে ইচ্ছামতো অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করার প্রবণতা থেকে  বিরত থাকবেন।

৭। কানে শোনা এবং কানের অন্যান্য ক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য অডিওগ্রাম করানো দরকার। এতে বুঝতে পারবেন কান কতখানি নষ্ট হয়েছে। অনেক সময় এই সমস্যা কতখানি মারাত্মক হয়ে চলেছে আমরা বুঝতে পারি না। 

৮। কিন্তু ভেতরে ভেতরে কানের ক্ষতি হতে থাকে এবং শ্রবণশক্তি ক্রমাগত কমতে থাকে। কাজেই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর কানের হেয়ারিং টেস্ট করে শ্রবণশক্তির পরিমাণ রেকর্ড করা উচিত।

কান পাকা রোগের লক্ষণ

কান পাকা রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এ রোগ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কান পাকা রোগের লক্ষণ বুঝে এর সঠিক চিকিৎসা করা জরুরী। আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকলে করণীয় চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের সামনে ইতিমধ্যে কিছু আলোচনা করেছি তা অবশ্যই আপনাদের জানা দরকার। তাহলে চলুন কান পাকা রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ এলার্জি ভালো করার উপায়

কান পাকা আবার দুই ভাগে বিভক্ত। সেভ ভ্যারাইটি ও আনসেভ ভ্যারাইটি

১। কান পাকলে কান দিয়ে তরল পদার্থ বের হয়

২। কান দিয়ে অনেক সময় পুঁজ বের হয়

৩। কান ব্যথা হতে পারে

৪। অনেকেই কানে কম শুনে 

৫। কান ফুলে যেতে পারে 

৬। কান চুলকাতে পারে

আনসেভ ভ্যারাইটিতে ঘন ঘন কান দিয়ে পুঁজ আসবে। মাঝে মধ্যে ব্যথা হবে, কানে কম শুনবে। দেখা যায় বাচ্চা বয়সের যারা রোগী তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে এই কারণে যে, যেহেতু কানে কম শোনে তাদের শিক্ষার পদ্ধতিটা এবং বিভিন্ন কাজে বাধাগ্রস্ত হয়।

কান পাকা রোগের ওষুধ

আজকের এই পোস্টে আপনাদের জন্য কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি। অনেকেই কান পাকা রোগে ভুগে থাকেন, তাই কান পাকা রোগের ঔষধ সম্পর্কে জানা জরুরী। তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকা রোগের ওষুধ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন।

কান পাকা রোগ তো অনেক কারনে হতে পারে ইনফেকশন থেকে হতে পারে, ওটাইটিস মিডিয়া থেকে হতে পারে,ট্রামাটিক কারনেও হতে পারে। যে জন্য হয়েছে তার চিকিৎসাই করতে হবে তাছাড়া ভালো হবে।আগে কারনটা বের করে সেটা নির্মূল করতে হবে।

আর এটা তো না দেখলে, ভালোমত না শুনলে করা সম্ভবই না।অযাথা কারো কথা শুনে কোন ঔষুধ খাবেন না এতে করে সারাজীবন আপনার কষ্ট হতে পারে।তাই আপনি একজন বড় নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

কান পাকা রোগের ড্রপ

আপনি নিশ্চয়ই কান পাকা আর রোগে ভুগছেন? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট হতে পারে। আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকলে করণীয় চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের সামনে কিছু তথ্য তুলে ধরেছি। কান পাকা রোগের ড্রপ সম্পর্কে চলুন তাহলে কিছু ড্রপের নাম জেনে নিন।

কানে ময়লা জমে থাকলে সেরুক্লিন অথবা ওয়াক্সিল জাতীয় কানের ড্রপ চার ফোঁটা করে তিন থেকে চারবার কানে দিলে উপকার পাওয়া যায়। এর ফলে ময়লা নরম হয়ে যায় এবং তা সহজেই পরিষ্কার করে ফেলা যায়।

Medicine composition: লিডোকেইন (Lidocaine), বেক্লোমিটাসোন (Beclometasone), ক্লোট্রিমাজোল (Clotrimazole), ক্লোরামফেনিকল (Chloramphenicol)

Prescription vs.

কানে ইনফেকশন কিংবা কান পাকলে আমরা উপরে উল্লেখিত ড্রপগুলো ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনার কানের কোন সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের সঠিক চিকিৎসা অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন।

কান পাকা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

কান পাকা রোগটি আমাদের ছোট বাচ্চা থেকে মধ্য বয়সী  মানুষের হয়ে থাকে। কান পাকার ব্যাথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। কান পাকলে কানের ছিদ্র পথে পানি বের হয়, পুঁজ হয়। যা খুবই ভোগান্তিতে ফেলে। আপনাদের জন্য আজকের এই পোস্টে আমরা কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে কিছু জানাতে চলেছি। কান পাকা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আজকের এই পোস্টে বিশেষ কিছু আলোচনা করব। তাহলে চলুন কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা ও কান পাকা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

গরম সেক দিতে হবে

কান পাকার কারণে পুঁজ বের হতে দেখলে তাহলে কানে গরম সেক দিন। গরম সেক দেওয়ার কারণে ভিতরে থাকা পুঁজ আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসবে এবং ব্যাথা ও কমে যাবে।গরম পানিতে একটি সুতির কাপড় চুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে হবে। তারপর সেটা ২-৩ মিনিট কানের উপরে ধরে রাখুন। তারপর মাথাটা একটু ঝুঁকিয়ে যে কানে পুঁজ ওই কানটা নিচে রেখে শুয়ে থাকুন আস্তে আস্তে পুঁজটা বের হতে থাকবে। বার বার করথে থাকুন। সেরা ইসলামিক ওয়েবসাইটের নাম জানান

সাদা ভিনেগার

কান পাকা রোধে সাদা ভিনিগার দারুন কাজ করে। এই ধরনের ভিনেগারের মধ্যে অ্যাসিডিক এলিমেন্ট থাকায় এটি কানের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কে মারতে কাজে আসে।একটি ছোট পাত্রে অল্প অ্যালকোহল নিয়ে সাথে অল্প এই ভিনিগার ভালভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর সেখান থেকে কয়েক ড্রপ নিয়ে কানে দিন। অল্প সময়ের মধ্যে দেখবেন আরামবোধ করবেন।

রসুন

কান পাকা ভাল করতে রসুন ভাল কাজ করে। কেননা এতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ থাকায় কান পাকার জন্য দায়ী জীবানুগুলিকে মারতে এটি দারুন কাজে করে।কয়েকটি রসুনের কোয়া দু চামচ অলিভ অয়েলের সাথে মিশিয়ে তেলটিকে কিছুক্ষণ গরম করুন।গরম হলে তা উঠিয়ে ঠান্ডা করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে কয়েক ফোটা রসুন মিশ্রিত অলিভ অয়েল কানে দিন। এতে কান পাকা সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

পেঁয়াজ

পেঁয়াজ শুধু রান্নার কাজেই ব্যবহার হয় তা নয় এই পেঁয়াজ কখনো রোগ সারাতে কাজে আসে।পেঁয়াজ ডিসইনফেকটেন্ট হওয়ায় কান পাকা রোগ সারাতে দারুন কাজে আসে। এবং কানের পুঁজ বের করতে সাহায্য করে।পেঁয়াজ কে থেঁতো করে তার থেকে রস বার করে কয়েক মিনিট গরম করুন। তারপর পেঁয়াজের রস কয়েক ফুটা কানে দিলে দেখবেন জমে থাকা পুঁজ আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসবে । আর পুঁজ বের হলেই ব্যাথা কমে যাবে।

পুদিনা

পুদিনার পাতা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং যে কোন ব্যাথা দূর করতে ও সহায়তা করে। কান পাকা ও কানের ব্যাথা দূর করতে পুদিনা পাতা ভাল কাজ করে।কয়েকটি পুদিনা পাতা নিয়ে ভাল করে ধুয়ে তা থেঁতো করে রস বের করুন। তারপর দুই-তিন ফোঁটা রস কানে দিন। কান পাকা প্রতিরোধের জন্য এটি খুব প্রচলিত একটি ঘরোয়া উপায়।

শেষ কথাঃ কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা

প্রিয় পাঠক আপনারা যারা এতক্ষণ আমাদের এই পোস্টের সাথেই ছিলেন, তারা নিশ্চয়ই কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। কারণ আমাদের শরীরের একটি বিশেষ অঙ্গ এবং আমাদের সম্পদ। তাই সুস্থ থাকতে এবং কানের সমস্যা দেখা দিলে আপনার কানের সঠিক চিকিৎসা করুন। আশা করি কান পাকলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url