পায়ের গোড়ালি ব্যথার ৮টি কারণ ও প্রতিকার

আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাবো। আপনি যদি পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি আপনার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে যদি সঠিকভাবে জানতে চান তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিন। পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আটিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

সূচিপত্রঃ পায়ের গোড়ালি ব্যথার ৮টি কারণ ও প্রতিকার

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার 

পায়ের গোড়ালি আমাদের শরীরের একটি বিশেষ অঙ্গ পায়ের গোড়ালি আমাদের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে এর জন্য আমরা সঠিকভাবে চলাচল করতে পারি। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় আমাদের পায়ের গোড়ালির নিচে ব্যথা করে আমাদের হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হয়।

আরো পড়ুনঃ হাত পা ব্যথা করার ৮টি কারণ

তাই পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি সঠিকভাবে পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতে পারবেন।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ হলো প্লান্টার ফ্যাসাইটিস অথবা ক্যালকেনিয়াম স্পার (গোড়ালির নিচের হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি) কারণে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে এবং এই ব্যথাটি সকালবেলায় যখন আমরা ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা ফেলি তখনই বুঝতে পারি। পায়ের গোড়ালি ব্যথা হলে আমরা সঠিকভাবে ধাপ ফেলতে পারি না পায়ের নিচে গোড়ালিতে সূচের মতো বা পিনের মতো খোঁচা মারে এবং হাঁটাচলা করতে করতে এ ব্যথা আপনা আপনি কমে যায়।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হলে আগে আপনাকে পায়ের অংশ সম্পর্কে জানতে হবে পায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি কি দ্বারা তৈরি পায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি কিছুটা হার দিয়ে তৈরি এবং কিছুটা বড় ক্যালকানিয়াস নামক হাড় দিয়ে গঠিত।

এবং এ হারগুলোর সংযোগ রক্ষা করে লিগামেন্টস।পায়ের গোড়ালি থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত একটি শক্ত ব্যান্ড থাকে যাকে প্লান্টার ফাসা বলে।প্লান্টার ফাসার প্রধান কাজ হল শরীরে সমস্ত ওজন যেন সরাসরি হাড়ের উপর চাপ প্রয়োগ করতে না পারে এবং পায়ের আকৃতির ঠিক থাকে। এখন আমরা পায়ের গোড়ালি ব্যথার মেইন কারণ গুলো আপনাদের সামনে আলোচনা করব।

১। প্লান্টার ফাসাইটিসঃ অনেক সময় প্লান্টার ফাসাইটিস কারণে পায়ের গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে। এটি পায়ের ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ। শরীরের এই অংশে দীর্ঘমেয়াদী চাপের ফলে ফাসা বা ব্যান্ডে ইনজুরি হতে পারে। প্রথম অবস্থায় ব্যথা কম থাকলেও পরবর্তীতে হাঁটাচলা অব্যাহত থাকে এই ইনজুরি গভীর হয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ ও ব্যথা অনুভূত হয় যাকে প্ল্যানটার ফাসাইটিস বলে। অনেকক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর বা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্যথাটা বেশি টের পাওয়া যায়৷

২। গাটে বাতঃ আমাদের শরীরে যখন রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণে বেড়ে যায় তখন পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের গোড়ায়, গোড়ালি এবং তার আশেপাশের জয়েন্ট গুলোতে প্রদাহ তৈরি হয় যার ফলে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে।

৩। ক্যালকেনিয়াম স্পার (গোড়ালির নিচের হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি) - সাধারণত গোড়ালির হাঁড়ে (ক্যালকানিয়াস) ক্যালসিয়াম জমে তীক্ষ্ণ সূচালো দাঁতের মতো বাড়তি অংশ তৈরি হয় এই বাড়তি অংশ গোড়ালি নিচের মাংসপেশি, ফাসা, লিগামেন্ট ও টিস্যুতে হাঁটাচলা করার সময় খোঁচা দেয় যার ফলে গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।

৪। সেভার্স ডিজিসঃ কিশোর-কিশোরী অথবা প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে গোড়ালির গ্রোথ প্লেটে মাইক্রোট্রমার ফলে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৭-১৫ বছরের বাচ্চাদের এই কারণে গোড়ালিতে ব্যথা হয়৷

৫। হাড় ভাঙ্গা (ফ্র্যাকচার): খুব বেশি পরিশ্রম , অতিরিক্ত ব্যায়াম, খেলাধুলো এবং হাঁটাচলা করে কাজ করলে গোড়ালির হাড়ে খুব চাপ পড়ে। যা থেকে হাড়ে চিড় ধরে৷ যাঁরা বেশি দৌড়াদৌড়ি করেন তাদের এ কারণে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে।

৬। টারসাল টানেল সিনড্রোমঃ গোড়ালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নার্ভের মধ্যে ট্রমা অথবা দীর্ঘমেয়াদী চাপ থাকলেও গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে

৭। অ্যাকিলিস টেন্ডিনাইটিসঃ আমাদের কাফ মাসেল অ্যাকিলিস ট্যান্ডনের মাধ্যমে গোড়ালির সাথে সংযুক্ত থাকে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এই টেনশনে প্রদাহ তৈরি হয় এতে করে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে ।

৮। পায়ের লিগামেন্ট ইঞ্জুরি (পা মচকানো): অনেক সময় পা মচকানো বা আঘাত জনিত করানো পায়ের গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে।

উপরের উল্লেখিত বিষয়গুলো বা পায়ের জয়েন্টের কারণে আমাদের পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ গুলো হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় পায়ের গোড়ালি ব্যথা কোন কারণ থাকে না  কিন্তু হুটহাট করে পায়ের গোড়ালি ব্যথা আরম্ভ হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পায়ের গোড়ালি ব্যাথার ঝুঁকি একটু বেশি রয়েছে। সাধারণত পায়ের গোড়ালি ব্যথার সম্ভাবনা কাদের মধ্যে বেশি থাকে এ বিষয়ে জেনে নিন।

১। নারী পুরুষ উভয়ের বয়স এর বয়স যদি ৪০ থেকে ৬০ এর মধ্যে হয় তাহলে পায়ের গোড়ালি ব্যথার ঝুঁকি থাকে। তবে পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ পুরুষের চাইতে নারীদেরই বেশি হয়ে থাকে।

২। যাদের পায়ের পাতা জন্মগতভাবে ফ্লাট ফুট সমস্যা বা আর্চ কম থাকে । অথবা যাদের আর্চ স্বাভাবিক চেয়ে অনেক বেশী উচু থাকে তাদের গোড়ালিতে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক চাপ অনুভূত হয় যার ফলে গোড়ালি ব্যথার ঝুঁকি বহু অংশে বৃদ্ধি পায়।

৩। নেক সময় আমাদের জুতা পড়ার কারণে পায়ের গোড়ালি ব্যথা হতে পারে আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে উঁচু হিল বা জুতা পড়ে হাঁটাচলা করেন তাহলে আপনার পায়ের গোড়ালি ব্যাথার অনুভূত হবে এবং এই ব্যথা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাবে।

৪। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূল গোড়ালি ব্যথার কারণ হতে পারে। কারণ তাদের গোড়ালিতে স্বাভাবিকের তুলনায় চাপবেশি পড়ে ফলশ্রুতিতে গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা অধিক লক্ষ্য করা যায়।

৫। যারা আর্থাইটিস, এনকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, অস্টিওকন্ড্রসিস এবং ডায়াবেটিকস সমস্যায় ভুগছেন তাদের গোড়ালি প্রবণতা বৃদ্ধি পায়

৬। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কোন পেশায় আপনি যদি করে থাকেন তাহলে আপনার পায়ের গোড়ালি ব্যাথার সম্ভাবনা বেশি। যেমন-গার্মেন্টস কর্মী, সিকিউরিটি গার্ড, ট্রাফিক পুলিশ এবং বিউটিশিয়ান তাদের গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা বেশি থাকে।

৭। যাদের কোমরের পেশীর ভারসাম্যহীনতা, পেলভিস ডেভিয়েশন, নকনি, পায়ের সুপাইনেশন এবং প্রানেশন, পেশীর ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি কারণে গোড়ালিতে ব্যথার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকারঃ

১। আমাদের পায়ের যদি গোড়ালি ব্যথা হয় তাহলে নিম্ন আলোচনার মাধ্যমে বা উপায় এর মাধ্যমে আমরা পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার করতে পারি।

২। পায়ের গোড়ালি ব্যথা হলে আপনাকে অবশ্যই রেস্ট নিতে হবে। এবং অবশ্যই শোয়া বা বসার সময় আপনার পায়ে উঁচু করে রাখতে হবে।

৩। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে কারণ অধিক ওজন হলে পায়ের গোড়ালের ব্যথা কমানো কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।

৪। ব্যথাজনিত স্থানে কিছুক্ষণ পর পর বরফ লাগাতে হবে। কারণ বরফ ব্যাথা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৫। এ সময় অবশ্যই আপনাকে নরম আরামদায়ক জুতা পড়তে হবে। এবং শক্ত জুতা ও হিল পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৬। অধিক সময় দাঁড়িয়ে বসে কোন কাজ করা যাবে না এতে করে সম্পূর্ণ শরীরের ভার পায়ে পড়ে। এবং গোড়ালি ব্যাথার সৃষ্টি হয়ে থাকে।

৭। আপনার পা দিনে অন্তত দুইবার গরম উষ্ণ পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে।

৮। নিয়মিত পায়ের গোড়ালের ব্যায়াম করতে হবে। এজন্য স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ গুলো বেশ ভূমিকা রাখে। এবং পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমাতে ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন।

পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের ইতিমধ্যে আমরা পায়ের গোড়ালি ব্যাথার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছি। বিভিন্ন কারণে বা অকারনে আমাদের পায়ের গোড়ালি হুটহাট করে ব্যথা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ মাথা ভারী হলে করণীয় - মাথা ভারী লাগার কারণ

এবং এ ব্যথা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই আপনাদের জন্য আমরা পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে কিছু তথ্য নিয়ে এসেছি। ঘরে বসে আপনি পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমাতে পারবেন।

আইস প্যাকঃ আইসপ্যাক যে কোন ব্যথা কমাতে বা প্রদাহ কামাতে বিশেষ কার্যকরী। ব্যথাজনিত আক্রান্ত স্থানে আইসপ্যাক দিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এতে করে রক্ত চলাচল কমে ব্যথা অনুভূতিটা কম মনে হবে।

সরিষার তেলঃ যেকোনো ব্যাথা সারাতে সরিষার তেলের মাসাজ বিশেষ উপকারী একটি উপাদান। তাই ব্যথা জনিত স্থানে সরিষার তেল দিয়ে কিছুক্ষণ মাসাজ করুন। দেখবেন ব্যথা কিছুক্ষণ পর দূর হয়ে গেছে।

আদা বাটাঃ আদাব ব্যথার প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে কাজ করে থাকে তাই ব্যথা জনিত স্থানে আদাবাটা দিয়ে নারিকেল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানের আগিয়ে রাখুন। আশা করি সমস্যার সমাধান পাবেন।

হলুদ বাটাঃ হলুদ শুধু জীবাণু ধ্বংস করতেও নয় এটি পায়ের ব্যথা বা যে কোন ব্যথা দূর করত বেশ উপকারী। হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে নিন কিছুটা পরিমাণে অলিভ তেল। তারপর ব্যথার জায়গায় লাগান। দেখবেন খুব সহজেই সমস্যার সমাধান আপনি করে ফেলতে পেরেছেন। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই।

নারিকেল তেলঃ পায়ের ব্যথা কমাতেও নারকেল তেল অনেক উপকারী। হালকা গরম নারকেল তেল দিয়ে মালিশ করলে আপনার জমানো ক্যালসিয়াম গুলো বলতে সাহায্য করবে।

বেকিং সোডাঃ বেকিং সোডায় কয়েক ফোঁটা পানি মিশিয়ে পেস্ট করে ভালোভাবে ব্যথা স্থানে লাগিয়ে পরিষ্কার ব্যান্ডেজ কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখবেন। অবশ্যই আপনি ব্যাথা থেকে মুক্তি পাবেন।

আপেল সাইডর ভিনিগারঃ এই টক জাতীয় তরল মাখনের মাধ্যমে গোড়ালিতে জমে থাকা ক্যালসিয়াম গলতে সাহায্য করে। তাই আপেল সাইডার অভিনগর এক টুকরো পরিস্কার কাপড়ে ডুবিয়ে আকারান্ত স্থানে বেঁধে দিবেন। আর এটি করার পর অবশ্যই আপনাকে শুয়ে থাকতে হবে এবং বিশ্রাম গ্রহণ করতে হবে কয়েক দিনে এই পদ্ধতি করলেই ব্যথা কমে যাবে।

বাঁধাকপির পাতাঃ ব্যথাজনিত স্থানে বাঁধাকপির পাতা হালকা গরম করে আক্রান্ত ব্যথাজনিত স্থানে বেঁধে দিবেন এবং শুকিয়ে গেলে আবার বাঁধাকপির পাতা নতুন করে বেঁধে দিবেন এতে করে আপনার পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমে যাবে।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম

পায়ের গোড়ালি ব্যথা অনেক সময় আমার দৈনন্দিন কর্মক্ষেত্রের মাধ্যমে হয়ে থাকে আবার অনেক সময় আমাদের পায়ের গোড়ালে জয়েন্টের সমস্যার জন্য হয়ে থাকে বিভিন্ন কারণে পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ হয়ে থাকে এ ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হবে এবং পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর জন্য পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়ামো রয়েছে আপনি যদি পায়ের গোড়ালি ব্যাথার এই ব্যায়ামটি নিয়মিত করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমে যাবে চলুন তাহলে পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নিন।

১। পায়ের গোড়ালি যদি আপনার ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার হাঁটাচলা-বসা শোয়া সব দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

২। আপনি যদি মেঝেতে বা চেয়ারে বসেন তাহলে অবশ্যই আপনার একটি পাপ সোজা রাখবেন।

৩। এবার একটি বড় ফিতা পায়ের পাতার সামনে আটকে দুই প্রান্ত দুই হাত দিয়ে ৩০ সেকেন্ড বা কিছুক্ষণ টেনে বা চেপে রাখুন। আর এটি উভয়পায়ে করুন।

৪। হাত দিয়ে পায়ের পাতা গুলো ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে।

৫। সিঁড়িতে সামনের দিকে পায়ের পাতার অংশ রেখে বাকি অংশ পেছনে রেখে ৩০ সেকেন্ড চাপ দিয়ে যেকোনো এক পায়ে ভারসাম্য রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।

৬। আপনি যদি নিয়মিত উপরের উল্লেখিত উপায় গুলোর মাধ্যমে পায়ের ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি পায়ের গোড়ালি ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার ওষুধ

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমাদের আগে থেকে সজাগ থাকা জরুরী। কারণ আমরা যে কোন সময় পায়ের গোড়ালি ব্যাথার শিকার হতে পারি। আপনার যদি পায়ের গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি পায়ের গোড়ালি ব্যাথার ওষুধ খেতে চাইবেন কিন্তু ওষুধ না খাওয়ার আগে আপনি উপরে উল্লেখিত ব্যায়ামটি করেও পায়ের গোড়ালি ব্যথা সরাতে পারেন।

কিন্তু যারা পায়ের গোড়ালি ব্যথার ওষুধ সম্পর্কে জানতে চান এবং পায়ের গোড়ালি ব্যাথার ওষুধ খেতে চান তারা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের মাধ্যমে পায়ের গোড়ালি ব্যথা সারাতে পারবেন এবং আপনার ব্যথা যদি দিন দিন গুরুতর হয়ে ওঠে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় আপনি মাধ্যমে পায়ের গোড়ালি ব্যথা সারতে পারবেন।

পায়ের গোড়ালি ব্যথা হলে কখন আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত বা কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এ বিষয়ে চলুন নিচে আলোচনা করা যাক। পায়ের গোড়ালি ব্যথা হলে কখন ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে

হুটহাট করে আমাদের পায়ের গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে এবং সে ক্ষেত্রে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমেও পায়ের গোড়ালি ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে বাসায় বসে চিকিৎসা নিতে পারবেন। কিন্তু আপনার পায়ের গোড়ালি ব্যথার যদি বেশ কিছু লক্ষণ বা কারণ আপনি বুঝতে না পারেন এবং এটি যদি দিনের গুরুতর হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

১। প্রথমত পায়ের গোড়ালি অতিরিক্ত ব্যথার সাথে পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়া।

২। পায়ের গোড়ালি অবশ হয়ে গেলে।

৩। পায়ের পাতায় ভর দিয়ে দাঁড়াতে সমস্যা হলে।

৪। হাঁটাচলা করার সময় পা ভাঁজ করতে অসুবিধা হলে।

৫। জ্বরের সাথে গোড়ালি ব্যথা হলে অথবা গোড়ালি ব্যথার জন্য জ্বর আসলে।

৬। কাফ মাসেল প্রচন্ড ব্যথা হলে এবং ফুলে গেলে।

৭। সাত দিনের বেশি গোড়ালিতে ব্যথা হলে এবং হাঁটা চলাফেরা ছাড়াও সব সময় গোড়ালিতে ব্যথা করলে।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার চিকিৎসা

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের আমরা বেশ কিছু তথ্য জানাবো এ তথ্যগুলো আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন, তাহলে অবশ্যই পায়ের গোড়ালি ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। যারা পায়ের গোড়ালি ব্যথা সমস্যায় ভুগছেন তারা পায়ের গোড়ালি ব্যথা চিকিৎসা সম্পর্কে আজকের এ তথ্যটি পড়লে অনেক উপকৃত হবেন।

পায়ের গোড়ালি ব্যথার বেশ কিছু চিকিৎসা রয়েছে তার মধ্যে হলঃ

  • টিগার পয়েন্ট ইঞ্জেকশন
  • পিআরপি  
  • ফিজিওথেরাপি 

ফিজিওথেরাপিঃ পায়ের চিকিৎসার সবচাইতে উন্নতম এ তিনটি। বর্তমান সময়ে পায়ের গোড়ালির জন্য ফিজিওথেরাপি বেশ জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ও এক্সরে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অন্যতম চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। কেউ যদি পায়ের গোড়ালি ব্যথা সমস্যায় ভোগে থাকেন তাহলে নিয়মিত এক সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা করলে পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমে যাবে।

আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা

ট্রিগার পয়েন্ট ইনজেকশনঃ পায়ের গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা হলে এবং ব্যথার ফলে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হয়। সে ক্ষেত্রে ট্রিগার পয়েন্ট ইনজেকশনের মাধ্যমে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে ব্যথা কমানো যায়। তবে স্টেরয়েড প্রয়োগের পূর্বে তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

পিআরপিঃ পিআরপি বর্তমান সময়ে খুবই আধুনিক একটি চিকিৎসা। এ পদ্ধতি এতে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত মেশিনে দিয়ে রক্তকণিকা আলাদা করে এই পিআরপি তৈরি করা হয়। যাতে প্রচুর পরিমাণে গ্রোথ ফ্যাক্টর থাকে যা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয় পূরণের সহায়তা করে। দীর্ঘ মেয়াদী ও জটিল প্লান্টার ফ্যাসাইটিস জনিত গোড়ালি ব্যথায় পিআরপি থেরাপি খুব ভালো কাজ করে। এটি একটি স্থায়ী এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা।

আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার, পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়, পায়ের গোড়ালি ব্যথার ব্যায়াম, পায়ের গোড়ালি ব্যথা হলে কখন ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে, পায়ের গোড়ালি ব্যথার ওষুধ, পায়ের গোড়ালি ব্যথা চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কারণ আমরা অনেকেই এ সমস্যায় ভুগে থাকি তাই আমাদের সকলকেই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েব সাইটে এ ধরনের আর্টিকেল নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url