চুলকানি কি কারনে হয় - চুলকানি দূর করার সহজ উপায়

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চুলকানি কি কারনে হয় এ বিষয়ে আপনাদের জানাবো। অনেকের চুলকানির সমস্যা রয়েছে, কিন্তু চুলকানি কি কারনে হয় এ বিষয়ে সঠিকভাবে কেউ জানে না। তাই আপনাদের আমরা চুলকানি কি কারনে হয় এবং চুলকানি বিষয়ক নানা প্রশ্নের উত্তর আপনাদের সামনে আলোচনা করব।

চুলকানি কি কারনে হয়

তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে চুলকানি কি কারনে হয় এ সম্পর্কে জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ চুলকানি কি কারনে হয় - চুলকানি দূর করার সহজ উপায়

চুলকানি কি কারনে হয়

চুলকানি কি কারনে হয়ে থাকে এ বিষয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের আমরা বিস্তারিত ভাবে কিছু আলোচনা করব। আপনারা আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকলে অবশ্যই চুলকানি কি কারনে হয় সে বিষয়ে জানতে পারবেন। চুলকানি একটি স্বাভাবিক রোগ কিন্তু এটি চিকিৎসা যথাসময়ে না নিলে এ রোগটি গুরুতর হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার

চুলকানি রোগটি আমাদের দেশে প্রায় কম বেশি সকলেরই শরীরে দেখা দেয়। চুলকানি ত্বকের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। তাই চুলকানি কি কারনে হয় এ বিষয়ে আমাদের সকলেরই জানা জরুরী। চুলকানি বিভিন্ন কারণ হয়ে থাকে সে কারণগুলো আজকে আমরা আপনাদের সামনে আলোচনা করব।

স্ক্যাবিজঃ স্ক্যাবিজ এক ধরনের চর্মরোগ, হলো স্ক্যাবিজ জীবাণু। এটি জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। এর কিছু প্রধান লক্ষণ রয়েছে যেমন: চুলকানি হয় ও  শরীরে গুটি গুটি র‌্যাশ ওঠে। আর এই উপসর্গগুলো শরীরের যে অংশে বেশিরভাগ দেখা যায় যেমনঃ আঙুলের ভেতর, কব্জি বা কোমরের আশপাশে হতে পারে। প্রায় কম বেশি সকল রোগেরই রাতের বেলায় তীব্রতা বেড়ে থাকে তাই চুলকানির ক্ষেত্রেও একই এটি রাতের বেলা এই রোগের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পায়।

এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। স্পর্শের মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। তাই সাবধানতা অবলম্বনে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, গামছা, বিছানার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে না হলে একটি স্বাভাবিক মানুষের শরীরও এই রোগ এগুলোর মাধ্যমে ছড়াতে পারে। বড়দের পাশাপাশি শিশুরা বিশেষ করে এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

সোরিয়াসিসঃ সোরিয়াসিস এক ধরনের প্রদাহ জনিত রোগ এবং এটির সৃষ্টি হয়ে থাকে ত্বকে। তাই এটি কে ত্বকের প্রদাহ জনিত রোগ সোরিয়াসিস বলে। এই রোগের কারণেও আমাদের শরীরে চুলকানির উৎপত্তি হয়। সকল বয়সের নারী-পুরুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

এ রোগটি ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ নয়, সংস্পর্শের মাধ্যমে ছলানোর কোন আশঙ্কা নেই। আপনার যদি সোরিয়াসিস প্রদাহ জনিত রোগ হয়ে থাকে ঠিকমতো চিকিৎসা করতে হবে, নতুবা আরও বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চুলকানি হলে অবহেলা নয়, সঠিক চিকিৎসা জরুরী।

ফাঙ্গাল ইনফেকশনঃ এটি হচ্ছে একটি সংক্রামক রোগ। যা জীবানুর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। আমাদের আবহাওয়ায় অনেক জীবাণু বসবাস করে, যা আমাদের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্য দিয়ে ত্বকে প্রবেশ করে। এবং এ রোগের উৎপত্তি করে। সাধারণত শরীরের একটি নির্দিষ্ট অঙ্গ এ রোগটি দেখা দেয়। এর তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা না করা হলে ক্রমশ শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তারা ঘন ঘন ফাঙ্গাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হয় এবং স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, তৈলাক্ত ত্বক, পানির সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকা ইত্যাদি কারণে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। এর কারণে ত্বকে চুলকানি হয়, জ্বলুনি বা অস্বস্তি দেখা দেয়। ত্বকে ক্রমশ অস্বাভাবিক লাল আভা দেখা দেয়। তারা দ্রুত ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

লিভারে সমস্যা হলেঃ লিভারের সমস্যার কারণে আমাদের শরীরের চুলকানির আবির্ভাব ঘটে। একটি অসুস্থ লিভার শরীরের সর্বত্র চুলকানির উদ্রেক করতে পারে। যেমন যখন শরীরে জন্ডিস দেখা যায় আর সঙ্গে চুলকানি হয়, তখন বুঝবেন লিভারের সমস্যার কারণেই এটা হচ্ছে।

কিডনির সমস্যায়ঃ কিডনি শরীর থেকে যখন বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বের করে খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না তখন ত্বক শুষ্ক ও ফেটে গিয়ে ত্বকে চুলকানি ও র‌্যাশ তৈরি করতে পারে। এগুলো ছাড়া আরও কিছু কারণে চুলকানি আমাদের শরীরে দেখা দিতে পারে নিচে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানানো হলো:-

বিশেষ করে ত্বকের ময়েশ্চারাইজার কমে গেলে

  • ডায়াবেটিস থাকলে
  • হরমোনে সমস্যা থাকলে
  • পানির কারণে
  • রক্তশূন্যতা হলে

যখন আমরা চামড়ায় চুুলকায় তখন বেশি বেশি হিস্টামিন নিঃসরিত হয় এবং সে স্থানটি আরো চুলকাতে ইচ্ছা হয়। এটি করা থেকে সাবধান থাকুন। কারণ বেশি চুলকালে চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয়, জীবাণুর সংক্রমণও হতে পারে। তাই চুলকানি স্থানটি চুলকানো থেকে বিরত থাকুন। আপনার শরীরে চুলকানি যদি দেখা দিয়ে থাকে তবে সেটিকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

উপরে ইতিমধ্যে আপনারা চুলকানি কি কারনে হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন চুলকানি একটি সাধারন থেকে জটিল আকার ধারণ করতে পারে তাই সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা নিন।

চুলকানি দূর করার সহজ উপায়

চুলকানি রোগে ভেগেনি এমন মানুষ পাওয়া পৃথিবীতে দুষ্কর। আর এই চুলকানির প্রকপ যখন বেড়ে যায় তখন অসহ্যকর অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় আমাদের জীবন। অধিকাংশ মানুষই এই সমস্যা দূর করার জন্য মলম বা ক্রিমের ব্যবহার করেও ভালো ফল পায় না এবং সেটি ত্বকের জন্য বেশ ক্ষতিকর হয়ে থাকে। চুলকানি এমন একটি সমস্যা যা শরীরে আঁচড়ের ইচ্ছা জাগায়‌।

আর আপনার শরীর যতই আঁচড়াবেন ততই আপনি মজা পাবেন এবং বেশি চুলকানোর ফলে আমাদের শরীরে ক্ষতসৃষ্টি হয়ে এতে জীবন ও খুব সহজে প্রবেশ করে রোগটিকে আরো গুরুতর করতে পারে।শরীরের যেকোনো একটি জায়গায় চুলকানি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে চুলকানি ও মাত্রাতিরিক্ত চুলকানি মোটেও স্বাভাবিক নয়। তাই দ্রুত ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়া জরুরী।

চুলকানির মতো অস্বস্তিকর অনুভূতি আর একটিও নেই।তাছাড়াও ত্বকের সমস্যা ও বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণেও ত্বক চুলকাতে পারে যেমনঃ অন্যের স্পর্শেও চুলকানির সমস্যা হতে পারে অন্যের সংস্পর্শে যে রোগ ছড়ায় তাকে আমরা সংক্রমণ রোগ বলে থাকি, আবার অনেক সময় বস্তুু, খাদ্য ও রাসায়নিক উপাদান ও বিভিন্ন ছোঁয়াচে গাছের পাতা থেকেও হতে পারে। আর এই চুলকানি দূর করতে আপনার জন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে চুলকানি কি কারনে হয় এবং চুলকানি দূর করার সহজ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।

নারকেল তেলঃ নারকেল তেল অনেক গুনসম্পন্ন একটি উপাদান। বিশেষ করে নারকেল তেল আমরা চুলকে সুন্দর রাখতে ও ঘন দৈর্ঘ্য করতে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এর পাশাপাশি নারকেল তেল যে চুলকানি প্রতিরোধ করতে বা সহজভাবে আমাদের চুলকানি দূর করতে পারে এ বিষয়ে অনেকেই জানিনা। নারকেল তেলের রয়েছে এমন বিশেষ কার্যকারী উপাদান যা চুলকানি দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।

নারকেল তেল দিয়ে যদি আপনার চুলকানি দূর করতে চান তাহলে প্রতিদিনরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলকানিযুক্ত স্থানটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে সেখানে নারকেল তেল লাগাতে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার সেই স্থানটি পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে খুব শীঘ্রই চুলকানি রোগ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

নেমের তেলঃ নিমকে বলা হয় প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক। নিমের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। নিমের পাতা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে বিশেষভাবে কাজ করে থাকে এটি ত্বকের ব্রণ, দাদ, চুলকানি বা চর্মরোগ দূর করতে বেশ উপযোগী। আক্রান্ত স্থানে নিমের তেল দিলে বেশ উপকার পাবেন।

এজন্য আক্রান্ত স্থানে আপনাকে নিয়মিত খুব অল্প পরিমাণে নিমের তেল দিতে হবে। কিছুদিন এভাবে ব্যবহারে আপনি নিজেই এর ভালো ফল দেখতে পাবেন। আরো ভালো ফলাফল পেতে চাইলে নিমের তেলের সাথে অ্যালোভেরা রস ব্যবহার করলে আরো বেশি উপকার পাবেন।

কাঁচা হলুদঃ হলুদ শুধু রান্নার কাজ নয় এটি চর্মরোগ সারাতেও বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। হলুদের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। চুলকানি দূর করতেও হলুদ বেশ উপকারী উপাদান। হলুদ দিয়ে চুলকানি দূর করতে হলে প্রথমে কয়েকটি হলুদ নিয়ে সেগুলোকে বেটে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর এই হলুদ বাটা আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন। যদি কাঁচা ও টাটকা হলুদ ব্যবহার সম্ভব হয় তাহলে খুব দ্রুতই ভালো ফল পাবেন।

আরো পড়ুনঃ গলার ক্যান্সার থেকে বাঁচতে কি করবেন

পুদিনা পাতাঃ পুদিনা পাতা একটি উপকারী উপাদান এটি রান্নার  স্বাদ যেমন বাড়াতে পারে তেমনি চর্মরোগ ও সরাতে পারে।পুদিনা পাতা দিয়ে চুলকানি দূর করার জন্য অল্প কিছু পুদিনা পাতা ও সাথে লেবুর রস নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর চুলকানি যুক্ত স্থানে লাগিয়ে নিন। এভাবেই পুদিনা পাতা দিয়ে খুব সহজেই চুলকানি দূর করা সম্ভব।

রসুনঃ রসুন শুধু রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় না, রসুনে অনেক প্রাকৃতিক গুনাগুন রয়েছে। রসুনে থাকা অ্যান্টিফাঙ্গাল বা ফাঙ্গাস প্রতিরোধক উপাদান চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। রসুনে এন্টিফাঙ্গাল ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধ উপাদান থাকায় চুলকানি খুব দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। রসুন দিয়ে চুলকানি সারানোর জন্য আপনাকে প্রথমে কয়েকটি রসুন কেটে চুলকানিযুক্ত স্থানে লাগিয়ে নিতে হবে।

কিছুক্ষণ রাখার পর সেই স্থানটি খুব ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। অন্যভাবে রসুনের পেস্ট তৈরি করে চুলকানি যুক্ত স্থানে লাগিয়ে নিন এবং কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে খুব সহজেই চুলকানি দূর করা যায়।

অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা যেমন ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে, মুখের ব্রণ দূর করতে ও চুলকে ঝলমলে উজ্জ্বল করতে অ্যালোভেরার রস বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অ্যালোভেরা তে এতগুলো উপকার থাকার পাশাপাশি চুলকানি দূর করতে বেশ কার্যকরী। শরীরের যে স্থানে চুলকানি সেখানে কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত অ্যালোভেরার প্রাকৃতিকভাবে বা বাজারের কৌটার অ্যালোভেরা জেল কিছুদিনের ব্যবধানেই চুলকানি দূর হয়ে যাবে। খুব ভালো ফলাফল পেতে প্রাকৃতিক অ্যালোভেরার রস ব্যবহার করুন।

সারা শরীরের চুলকানির ওষুধ

চুলকানি রোগ আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে বাধা‌ সৃষ্টি করে। এ রোগে আক্রান্ত রোগী‌ চুলকানির কারণে দৈনন্দিন কাজগুলো শান্তিমত করতে পারে না। এ রোগ দূর করতে ঔষুধের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি সারা শরীরে চুলকানি দূর করতে পারবেন।

নিমপাতাঃ নিম পাতা এমটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ বা আন্টিসেপটিক ঔষধি হিসেবে কাজ করে। চুলকানি যুক্ত স্থানে নিম পাতা বেটে লাগান এবং গোসলের পানিতে নিমের পাতা দিয়ে সিদ্ধ করে গোসল করবেন এতে করে আপনার সারা শরীরে চুলকানি দূর হবে।

লেবুর রসঃ আপনার যে স্থানে চুলকানি হয়েছে সেই স্থানগুলোতে লেবুর রস লাগিয়ে চুলকানি সারাতে পারবে।

অ্যালোভেরার রসঃ অ্যালোভেরার চুলকানি দূর করতে বিশেষ কার্যকরী ওষুধ। টাটকা অ্যালোভেরা রস চুলকানি যুক্ত আক্রান্ত স্থানে দেখে নিন এতে করে চুলকানি দ্রুত সারবে।

নারিকেল তেলঃ যেকোনো চুলকানি সারাতে নারকেল তেল বেশি উপকারী তাই আপনার চুলকানি অনুভব হলে সারা শরীরে নারিকেল তেল ভালোভাবে মেখে নিন।

ত্বকের চুলকানি দূর করার উপায়

আপনাদের যাদের চক একটু সেনসিটিভ এবং যাদের কোনো আবহাওয়াতে ই ত্বক ভালো থাকে না ত্বকের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে গরম ও বর্ষাকালে স্যাঁতস্যাতে আবহাওয়া ও গরমে ঘাম জমে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় চুলকানির মত সমস্যা দেখা দেয়। এসব বিরক্তিকর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, জেনে নেই, শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গা যেমনঃ হাতে চুলকানি হলে করণীয়, পায়ে চুলকানি দূর করার উপায়, কুচকিতে চুলকানির সমাধান ইত্যাদি সম্পর্কে।

১। আপনার চুলকানিযুক্ত স্থানে ঠান্ডা কিছু লাগিয়ে রাখতে হবে যেমন বরফের টুকরা বা ঠান্ডা পানি ইত্যাদি।

২। প্রত্যেকদিন গোসলের সময় অটোমিল দিয়ে স্ক্রাবার বানিয়ে নিয়মিত স্ক্রাব করুন। এতে করে চুলকানি, এলার্জি ও জ্বালা ভাব দূর হবে।

৩। গোসলের সময় পানিতে বেকিং সোডা কিংবা এপসম সল্ট মিশিয়ে গোসল করলে ভালো ফল পাবেন। এতে করে এলার্জি ও চুলকানি খুব সহজে দূর হয়ে যাবে।

৪। নারকেল তেল চর্ম রোগের জন্য একটি উপকারী উপাদান।ত্বকে রুপ ও শুষ্ক হওয়ার কারণে চুলকানি হতে পারে। সেজন্য ত্বকে নারকেল তেলের ব্যবহার করুন। যেসব স্থানে চুলকানি হয় সেসব স্থানে নারকেল তেল লাগিয়ে নিন। নারিকেল তেল খুব ভালো মশ্চারাইজার।

৫। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের মাধ্যমে খুব সহজেই ত্বকের চুলকানি দূর করতে পারেন।

৬। টি ট্টি অয়েল ত্বকের চুলকানি দূর করতে বেশ কার্যকর। টি ট্টি অয়েল চুলকানি যুক্ত আক্রান্ত স্থানে লাগান। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখবেন কোন ক্রিম বা তেলের সঙ্গে মিশাবেন না। তাহলে কোন কার্যকারিতা দেখতে পাবেন না।

মুখে চুলকানি দূর করার সহজ উপায়

মুখ শরীরের একটি বিশেষ অংশ। এটি রক্ষা করতে আমরা বিভিন্ন উপায় গুলো অবলম্বন করে থাকি। বিশেষ করে গরমকালে যখন আমাদের মুখে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমন ব্রণ, চুলকানি, অতিরিক্ত মুখে ঘাম ইত্যাদি। এ সমস্যা গুলোর সমাধানের জন্য আপনাদের আমরা কিছু উপায় সম্পর্কে জানাবো এটি ব্যবহার করলে আপনি খুব সহজেই মুখে চুলকানি দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে এবং ব্যবহার করে অনেক উপকার পাবেন।

নিম পাতার প্যাকঃ বিশেষ করে গরম কালে ত্বক নানা ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই সমস্যার সমাধানে নিম পাতার প্যাক বেশ কার্যকর। কারণ নিমপাতা হলো এন্টি ব্যাকটেরিয়া যুক্ত উপাদান যা খুব সহজেই আমাদের শরীরের জীবাণুগুলো ধ্বংস করতে পারে। এ জন্য নিমপাতা বেটে তার সাথে অল্প পরিমাণে হলুদ মিশে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এরপর মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে শুকান। পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার পর ধুয়ে ফেলে নিজেই এর উপকার বুঝতে পারবেন।

হলুদ ও ওটস ফেসপ্যাকঃ প্রথমে ওটস ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এর সাথে কয়েক টুকরা হলুদ বাটা ও পানি মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। এটা বেশ উপকারী।

টমেটো শসার প্যাকঃ টমেটো ও শসা দিয়ে চুলকানি দূর করা কি সম্ভব? অবাক নয় পড়তে থাকুন। এক টুকরা শসা ও সম পরিমাণ টমেটো কেটে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এ থেকে রস আলাদা করে নিন। মুখে লাগিয়ে শুকানোর পর ধুয়ে ফেলুন। চুলকানির জন্য এই প্যাকটি বেশ উপকারী। খুব সহজে চুলকানি দূর করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ স্কিন ক্যান্সারের লক্ষণ - স্কিন ক্যান্সার কেন হয়

শসা ও হলুদের প্যাকঃ চুলকানি সমস্যা দূর করতে চাইলে এ প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। এই প্যাকটি চুলকানি দূর করতে বেশ উপকারী। এর জন্য শসা কেটে ব্লেন্ড করে এর ভেতর থেকে রস বের করে নিন। এবার ব্লেন্ড করা শসার সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে নিন। ১৫ থেকে২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলুন।

চন্দনের প্যাকঃ মুখের উপকারিতার জন্য চন্দনের ব্যবহার বহুকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে।চন্দনের প্যাক মুখের জন্য বেশ উপকারী। মুখের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাদা চন্দন বেটে তার সাথে অল্প পরিমাণ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। কিংবা বাজারে পাওয়া চন্দনের গুঁড়োর সাথে গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন।

চুলকানি কি কারনে হয় - চুলকানি দূর করার সহজ উপায়ঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে চুলকানি কি কারনে হয়? চুলকানি দূর করার সহজ উপায়, সারা শরীরের চুলকানির ওষুধ, ত্বকের চুলকানি দূর করার উপায়, মুখে চুলকানি দূর করার সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যেহেতু এ সমস্যাটি এখন বড় আকার ধারণ করেছে তাই আমাদের সকলকেই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url