কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয়

প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিশেষ কিছু আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই আছেন যারা কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয়

কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব। তাহলে চলুন কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয়

কোরবানি দেওয়া কি ফরজ 

সারা বিশ্বে মুসলমানদের জন্য কোরবানি ঈদ একটি বড় উৎসব বছরে আমাদের ইসলাম ধর্মে দুইটি উৎসব পালন করা হয় ঈদুল আযহা। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিশেষ কিছু আলোচনা করতে চলেছি।

আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসে কয়টি রোজা করতে হবে

কোরবানি দেওয়া কি ফরজ এ সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না। তাহলে চলুন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কোরবানি দেওয়া কি ফরজ সেই বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে নিন।

অনেক স্বাবলম্বী মানুষ রয়েছে যারা ঈদুল আযহা উপলক্ষে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কোরবানি দিয়ে থাকেন।ইসলাম ধর্মে কুরবানী একটি গুরূত্বপূর্ণ ইবাদত। প্রত্যেক সামর্থবান ব্যক্তির ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব। যে ব্যক্তির সামর্থ রয়েছে কিন্তু কুরবানি করলো না তার জন্য কঠিন তিরস্কার করা হয়েছে। তাই আমাদের সকলের উচিত সকল মুসলমান স্বাবলম্বীদের কোরবানি দেওয়া।

কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে আপনাদের কাছে বিশেষ কিছু আলোচনা করতে চলেছি। কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবাদত তাই আমাদের সকলেরই উচিত কোরবানির ওপর গুরুত্ব দেওয়া। কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে আমাদের সকলেরই জানা জরুরী কারণ আপনার কোরবানি কবুলের জন্য অবশ্যই আপনার কোরবানির প্রসাথির দিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

কোরবানি হলো আল্লাহ তায়ালার নামে একটি পশু উৎসর্গ করা বা যবেহ করা। এবং সেই পশুটি যদি সুস্থ সবল না হয় তাহলে কখনোই আমাদের সেই পশুটি দ্বারা কোরবানি আল্লাহতালার কাছে কবুল হবে না। কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে চলুন তাহলে কিছু তথ্য জেনে নিই।

মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য কোরবানির পশুটিকে হতে হবে প্রিয় ও পছন্দনীয়।

কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু পছন্দ করে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে । ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছর, গরু, মহিষ দু’বছর এবং উট পাঁচ বছরের কম হলে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। পশুগুলোও হতে হবে যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত।

কোরআনের ভাষায় এ ধরনের পশুকে বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম অর্থাৎ অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।’

এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছি। জীবনোপকরণ স্বরূপ তাদের যেসব ‘বাহিমাতুল আনআম’ দিয়েছি সেগুলোর ওপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ {সূরা হজ, আয়াতঃ ৩৪}

কোরবানির পশুটি অবশ্যই আপনার আকর্ষণীয় এবং সবার কাছে পছন্দনীয় এবং প্রিয় হওয়া উচিত। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া চাই। চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ নয়।যেমন: অন্ধ, রোগা, পঙ্গু এবং আহত।

নাসায়ির বর্ণনায় ‘আহত’ শব্দের জায়গায় ‘পাগল’ বলা হয়েছে। (সুনানে নাসায়ি।) শিং ভাঙা, কান কাটা, লেজ কাটা, ওলান কাটা, লিঙ্গ কাটা ইত্যাদি ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করাকে মাকরুহ বলেছেন ফকিহরা।

কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয়

আল্লাহ তাআলা সকল সামর্থ্যবান এর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব করেছেন। সামর্থ্যবান কোন ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয় করার পর যদি চুরি হয়ে যায় বা মারা যায় অথবা হারিয়ে যায়, তাহলে তাকে আরেকটি পশু কুরবানী করতে হবে। কারন সামার্থবানদের জন্য কুরবানীর দিনগুলোতে কুরবানী করা ওয়াজীব। কুরআান শরীফে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

فصل لربك وانحر

অর্থঃ আপনি আপনার রবের জন্য সালাত আদায় করুন এবং কোরবানী করুন।

সুরা কাউসার-২

তবে লোকটি যদি গরীব হয় অর্থাৎ যার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়, তার জন্য আরেকটি পশু ক্রয় করে কুরবানী করা ওয়াজিব নয়।

নতুন পশু ক্রয়ের পর হারানোটা পাওয়া গেলে, কুরবানীর পশু হারিয়ে যাওয়ার পরে যদি আরেকটি কেনা হয় এবং পরে হারানোটিও পাওয়া যায় তাহলে কুরবানীদাতা গরীব হলে (যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়) দুটি পশুই কুরবানী করা ওয়াজিব। আর ধনী হলে কোনো একটি কুরবানী করলেই হবে। তবে দুটি কুরবানী করাই উত্তম।

কোরবানি করার গুরুত্ব

আপনারা যারা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে ইতিমধ্যে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পেরেছেন কোরবানি সকল সামর্থ্যবানদের প্রতি আল্লাহতালা ওয়াজিব করেছেন। কোরবানির করার গুরুত্ব অনেক এ বিষয়ে হযরত মুহাম্মদ সাঃ হাদিস শরীফে বিভিন্ন বর্ণনা দিয়েছেন। তাই আমাদের সকলের কুরবানী করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের ঈদুল আযহা কয় তারিখ - ঈদুল আযহা কত তারিখ ২০২৩

হাদিস শরিফে এসেছে, হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার কুরবানির সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু সে কুরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (আত-তারগিব ওয়া আত-তারহিবঃ ২/১৫৫)

প্রত্যেক মুসলমান সামর্থ্য বানদের জন্য ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ পালনের জন্য অবশ্যই তাদের একটি সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কিনে কোরবানি করা উত্তম কাজ। এতে করে আপনার আত্মশুদ্ধি এবং আত্মত্যাগের পরিচয় পাওয়া যায় এবং আল্লাহ তায়ালার প্রতি ভালোবাসার আত্মপ্রকাশ ঘটে।

কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় ভিডিও

অনেক সময় আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কারণে কোরবানির পশু হারিয়ে যায় অথবা চুরি হয়ে যায়। যদি আপনার সাথে কখনো আপনার কোরবানি পশু হারিয়ে গিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশ কিছু করনীয় রয়েছে। কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয় ভিডিও করে প্রকাশ করা হলো।

কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয়ঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ কোরবানির পশু হারিয়ে গেলে করণীয়, কোরবানি করার গুরুত্ব, কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত? কোরবানি দেওয়া কি ফরজ? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমাদের কোরবানি দেওয়ার আগে উক্ত বিষয়গুলো জেনে নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ তওবা নামাজের গুরুত্ব - তওবা নামাজের নিয়ম

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url