তওবা নামাজের গুরুত্ব - তওবার নামাজের নিয়ম

পাপ থেকে মুক্তির উপায় হল তওবা করা। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তওবা নামাজের গুরুত্ব এবং তওবা নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জানাতে এসেছি। আপনারা যারা তওবা নামাজের গুরুত্ব এবং তওবা নামাজের নিয়ম জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন।

তওবা নামাজের গুরুত্ব

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তওবা নামাজের গুরুত্ব সহ তবে নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আপনার জানাবো। তাহলে আসুন আর দেরি না করে তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ তওবা নামাজের গুরুত্ব - তওবার নামাজের নিয়ম

তওবা নামাজ সুন্নত না নফল

আল্লাহ তাআলার প্রতিটা বান্দাই পাপী তাই পাক থেকে মুক্ত হতে হলে অবশ্যই তওবা করা ফরজ। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তওবা নামাজের গুরুত্ব এবং তওবার নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব যারা তওবা নামাজ সুন্নত না নফল এ বিষয়ে জানতে চান তারা মনোযোগ সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

আরো পড়ুনঃ যাকাত কখন দিতে হবে

বান্দার কোনো গোনাহ হয়ে গেলে; আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা ইস্তিগফার করে, দরুদ শরিফ পড়ে কান্নাকাটিসহ আল্লাহর কাছে দোয়া ও মোনাজাত করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হয়। এবং এ নামাজ কে সালাতুত তওবা বলা হয়।আপনার কোন গুনাহ হয়ে গেলে সালাতুত তওবার মাধ্যমে আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন। সালাতুত তওবা হল নফল নামাজ।

তওবা নামাজের নিয়ম

আমাদের গুনা খাতা মাফের জন্য অবশ্যই তওবা নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানা জরুরী তওবা নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাকে গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি তওবা নামাজের নিয়ম এবং তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে যথারীতি ভাবে জানতে পারবেন।

প্রত্যেক নামাজের জন্য অজু ফরজ তাই আপনাকে তওবা নামাজেও আগে উত্তম রূপে অজু করে নিতে হবে।

প্রথমে উত্তমরূপে অজু করতে হবে। তারপর একাগ্রচিত্তে নফল নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়বে। তওবার নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সুরা নেই। তাই যেকোনো সুরা দিয়েই তওবার নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের অজু ও নামাজের মাঝখানে কোনো দুনিয়াবি কাজ বা কথা না বলা উত্তম।

কারণ হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মতো এভাবে অজু করবে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং এর মাঝখানে দুনিয়ার কোনো খেয়াল করবে না, তার আগের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ -সহিহ বোখারি : ১৫৯

নামাজ শেষে আল্লাহর তাসবিহ তাহলাল পড়বে, আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ইস্তেগফার পড়ে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।

তওবার দোয়া

তওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো- সাইয়েদুল ইস্তিগফার। তা হলো- ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খলাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়া‘দিক মাসতাতা‘তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবু-উ লাকা বিনি‘মাতিকা আলাইয়া ওয়া আবু-উ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’

অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা। আমি যথাসাধ্য আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকব। আমি আমার নিকৃষ্ট আমল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, আপনার যে অসংখ্য নেয়ামত ভোগ করছি এ জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। আমি আমার কৃত অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। -সুনানে আবু দাউদ : ৫০৭০

তওবা নামাজ কত রাকাত

প্রত্যেকটা নামাজের নির্ধারিত নিয়ম ও রাকাত রয়েছে। আজকেরে আর্টিকেলে আমরা তো আবার নামাজের গুরুত্ব এবং তওবার নামাজ কত রাকাত সে বিষয়ে আপনাদের জানাবো। সাধারণত তওবা নামাজ একটি নফল ইবাদত। এবং এটি দুই রাকাত আদায় করতে হয়।

আরো পড়ুনঃ ওযু ছাড়া কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কিনা

তওবা নামাজের নিয়ত

প্রতিটা নামাজের সময় অবশ্যই নিয়ত করা জরুরী। গোনাহ হয়ে গেলে তওবার নিয়তে নামাজ পড়াকে তওবার নামাজ বলে। গোনাহ সংঘটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ নামাজ পড়া উচিত। বিগত জীবনের গোনাহ থেকে অবশ্যই তওবার নামাজ পড়া জরুরী। তাই আবার নামাজের নিয়ত সম্পর্কে জেনে নিন।

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ফরজ। ফরজ নামাজের পাশাপাশি রয়েছে সুন্নাত, ওয়াজিব এবং নফল। এই নামাজগুলো আদায়ের মাধ্যমে আমরা সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।

নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া-লিল্লাহি তা'আলা রাকাআতি ছালাতিল নফলি মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই-রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি আল্লাহ আকবার।

যারা আরবিতে এই নিয়োগটি করতে পারবেন না তারা সালাতুত তওবা নামাজের নিয়তে তাকবীরে তাহরীমা আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে যাবেন।

তাওবা নামাজ পড়ার ফজিলত

তওবার নামাজের ফজিলত নবীজি (সা.) নিজে উম্মতের পাপমুক্তির জন্য তওবার নামাজের বিধান রেখে গেছেন। এ তওবার নামাজ গুনাহ মার্জনার শ্রেষ্ঠ উপায়। কারণ উম্মতরা নিষ্পাপ নয়। তাদের মধ্যে অন্যায়, অবিচার, অপরাধ ইত্যাদি সংঘটিত হবে, কিন্তু সেই অপরাধ থেকে তওবা বা তওবার নামাজের মাধ্যমে নিজের কৃত মন্দ কাজের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে।

এ নামাজ হলো বান্দার পাপমুক্তির চাবিস্বরূপ। এ মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন কোনো গুনাহ করে ফেলে, অতপর সে দাঁড়িয়ে ওজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন আল্লাহ তায়ালা অবশ্য তাকে ক্ষমা করে দেন।

তারপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আয়াতটি পাঠ করলেন, মুত্তাকি তারাই, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা কোনো মন্দ কাজে জড়িয়ে নিজের ওপর জুলুম করে বসলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (তিরমিজি : ৪০৮)

এমনকি নবীজি দৈনিক একশবার তওবা করতেন। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘হে মানব জাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর। নিশ্চয় আমি দৈনিক একশবার তার নিকট তওবা করি।’ (মুসলিম : ৭০৩৪)। রাসুল আরও বলেন, ‘গুনাহ থেকে তওবাকারী ওই ব্যক্তির ন্যায়, যার কোনোই গুনাহ নেই।’ (ইবনে মাজাহ : ৪৩৯১)

আল্লাহ তায়ালা মহান করুণাময় ও শ্রেষ্ঠ দয়ালু। তিনি বান্দাকে জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য তওবার বিধান রেখেছেন। যাতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে পাপমুক্ত হতে পারে এবং দোজখের আজাব থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

আল্লাহ তাআলার এমন কোন বান্দা নেই যে তার গুনহা নেই তাই আমাদের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই আমাদের সালাতুল তাওবা নামাজ আদায় করা জরুরী।

তওবা নামাজের গুরুত্ব - তওবার নামাজের নিয়মঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে তওবা নামাজের গুরুত্ব, তওবার নামাজের নিয়ম, তওবা নামাজ সুন্নত না নফল? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেল পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url