জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলেই ভাল আছেন, জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে যারা জানতে আজকের এই আর্টিকেলটি গুগলের সার্চ করে ওপেন করেছেন তাদের জন্য আমরা এই প্রতিবেদনটি সাজিয়েছি। জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত

যারা জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। তাহলে চলুন জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত

জিলকদ মাসের আমল

আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত মর্যাদার চার মাসের একটি মাস জিলকদ। আল্লাহ তাআলা এ মাসে যে কোনো রক্তপাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ বা বাদানুবাদকে হারাম করেছেন। মুসলিম উম্মাহ মাসটি ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করবে। যারা হজে যাওয়ার নিয়ত করেছেন, তারা এ মাসে হজের আমলগুলো সম্পর্কে ভালো মতো জেনে নেওয়ার সময় পান।

আরো পড়ুনঃ ইশারাক নামাজ কাকে বলে - ইসারাক নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদুল ফিতরের পর এবং ঈদুল আযহার পূর্বের মাস হল জিলকদ মাস এই মাসকে বিশ্রামের মাস। জিলকদ মাসের আমল সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলা হয়নি। কারণ এই মাসটি হলো বিশ্রামের মাস।

জিলকদ মাসকে বিশ্রামের মাস বলা হয়, কারণ এ মাসের আগের চার মাস ও পরের দুই মাস ইবাদতে ব্যস্ত থাকতে হয়। আল্লাহ তাআলা এ মাসে যে কোনো রক্তপাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ বা বাদানুবাদকে হারাম করেছেন।

জিলকদ মাসে প্রতিদিন বেশি বেশি কোরআন তেলওয়াত করা খুবই ভালো। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত বা দুহা) আদায় করতে পারেন।

জিলকদ মাসের পর জিলহজ মাস। তাই এ মাসে হজ ও কোরবানির প্রস্তুতি নেওয়া ভালো। এছাড়া জিলহজ ও মহররম মাসের প্রস্তুতি হিসেবে নফল রোজা করা। এ মাসের ১, ১০, ২০, ২৯ ও ৩০ তারিখে নফল রোজা পালন করা। জিলকদ মাসে রোজা পালন করা।

এ মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বিদের রোজা রাখা। প্রত্যেক শুক্রবার নফল রোজা পালন করা। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার সুন্নতে নববি রোজা রাখা। জিলকদ  মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে জিলহজ মাসে রোজার প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং কোরবানি এবং হজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা এটি এবাদতের অন্তর্গত।

জিলকদ মাসের গুরুত্ব

ঈদুল ফিতর (রোজার ঈদ) বিগত ও ঈদুল আজহা (কোরবানির ঈদ) সমাগত, মাঝে এই জিলকদ মাসে নির্দিষ্ট কোনো ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুআক্কাদা আমল নেই বিধায় এটি জিলকদ মাস বা বিশ্রামের মাস। এই সময় আরবের লোকজন বাণিজ্য থেকে ফিরে আসত, যুদ্ধ থেকে ফিরে আসত, তাই এই মাস বিশ্রামের মাস।

আরবি মাসের বিশ্রামের মাস হল জিলকদ মাস জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলোচনা করতে চলেছি। জিলকদ মাসের গুরুত্ব কতখানি তা আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবো।

এই একটি মাস ইবাদতে লিপ্ত হতে পারলে বছরের বারোটি মাসের মধ্যে রজব থেকে মহররম পর্যন্ত আটটি মাস একটানা ইবাদতে শামিল হয়ে যায়, যা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখনই অবসর পাও দাঁড়িয়ে যাও, তোমার রবের ইবাদতে মশগুল হও।’ (সুরা ইনশিরাহ, আয়াতঃ ৭-৮)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শপথ! সময়ের, নিশ্চয় সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, তবে তারা নয়, যারা ইমান আনে, সৎকর্ম করে, সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্যের উৎসাহ প্রদান করে।’ (সুরা আসর, আয়াতঃ ১-৩)। হাদিস শরিফে আছে, তোমরা পাঁচটি জিনিসের আগে পাঁচটি জিনিসকে গুরুত্ব দাও, ব্যস্ততার আগে অবসরকে, অসুস্থতার আগে সুস্থতাকে, দারিদ্র্যের আগে প্রাচুর্যকে, বার্ধক্যের আগে যৌবনকে, মৃত্যুর আগে জীবনকে। (মুসলিম শরিফ ও তিরমিজি শরিফ)

তাই আমাদের সময় থাকতে আল্লাহর দেওয়া বারটি মাসকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত এবং বারোটা মাসেই আল্লাহ তায়ালা আমলে পরিপূর্ণ থাকা একান্ত জরুরী।সময় বা আয়ু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দেওয়া শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। রোজ কিয়ামতে কঠিন হাশরের ময়দানে আল্লাহর আদালতে বিচারের সময় প্রতিটি নেয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। 

জিলকদ মাসের ফজিলত

আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠতম মাসের মধ্যে জিলকদ মাস একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস এই মাসকে বিশ্রামের মাস বলা হয়ে থাকে কারণ এই মাসের আগের চার মাস এবং পরের দুই মাস আল্লাহতালার ইবাদতে সকলেই ব্যস্ততা দিন কাটান তাই মধ্যবর্তী এই জিলকদ মাসে আল্লাহ তায়ালা বিশ্রামের সুযোগ করে দিয়েছেন। আজকের এ আর্টিকেলে আমরা জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি।

আরো পড়ুনঃ তওবা নামাজের গুরুত্ব - তওবা নামাজের নিয়ম

যারা জিলকদ মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জিলকদ মাসের ফজিলত সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার তৌফিক দান করুন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারটি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এতে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। (সূরা তাওবা, আয়াত নং ৩৬)

সৈয়দ ইবনে তাউস জিলক্বদ মাসের ফযিলত সম্পর্কে বলেছেন: জিলক্বদ মাস হচ্ছে দোয়ার জন্য উত্তম মাস এবং অত্যাচারির অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।(ইক্ববাল, পৃষ্ঠা ৩০৬)

তিনি আরো বলেছেন, যে উক্ত মাসটিকে দোয়া কবুলে মাস বলা হয়েছে সুতরাং এ মাসে প্রত্যেকটি মূহুর্তকে মূল্যায়ন করা উচিত। (ইক্ববাল, পৃষ্ঠা ৩০৭)

আল্লাহ তায়ালার প্রত্যেক মাস দিন ও সময়ের কিছু করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় থাকে, যেগুলোর ব্যাপারে অবহেলা না করে তা সঠিকভাবে পালন করা জরুরী। ঠিক তেমনিভাবে এ মাসেও কিছু করণীয় ও বর্জনীয় কাজ রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা সেগুলোর ব্যাপারে আমাদেরকে যত্নবান হওয়ার তাউফিক দান করুন। (আমিন)

জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলতঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জিলকদ মাসের আমল, জিলকদ মাসের ফজিলত, জিলকদ মাসের গুরুত্ব এবং জিলকদ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই আরবি প্রতিটি মাসের গুরুত্ব এবং ফজিলত সম্পর্কে জানা উচিত।

আরো পড়ুনঃ কাজা নামাজ কিভাবে পড়বো - কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম

এখন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url