আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চলেছি আপনারা অনেকেই আছেন যারা আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আরাফার দিবসের রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন। তাহলে চলুন আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।

আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম

সূচিপত্রঃ আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম

আরাফার দিবসে কেন রোজা রাখা হয়

আল্লাহর প্রত্যেকটি এবাদতে বন্দেগী অধিক মর্যাদাবান তেমনি হজের সাথে সকল সংশ্লিষ্ট এবাদত বন্দেগিও আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদাবান। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আরাফা দিবসে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিস্তারিত কিছু আলোচনা করব আরাফার দিবসে কেন রোজা রাখা হয় এ বিষয়ে অনেকেই হয়তো জানেন না।

আরো পড়ুনঃ তওবা নামাজের গুরুত্ব - তওবা নামাজের নিয়ম

জিলহজ মাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে একটি হল আরাফার দিনে রোজা রাখা। এই দিনে যে ব্যক্তি রোজা রাখবেন তিনি বিশেষ মর্যাদাবান ও কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত হবেন।

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বছরের মধ্যে এমন কোনো দিন নেই যে, আল্লাহ তাআলা আরাফার দিন অপেক্ষা বেশি সংখ্যায় তার বান্দাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আর আরাফার দিন আল্লাহ তাআলা বান্দার একেবারেই কাছাকাছি থাকেন। এরপর ফেরেশতাদের কাছে গৌরব প্রকাশ করে জানতে চান- আমার এ (রোজাদার) বান্দারা কী চায়? (মুসলিম)

তাই আমাদের প্রত্যেক মুমিন মুসলমানদের উচিত আরাফার দিন রোজা রাখা এবং সেই দিনটি আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের জন্য এবাদত বন্দেগী করে  অতিবাহিত করা। আশা করি আরাফার দিন কেন রোজা রাখা হয় সে বিষয়ে সঠিকভাবে জ্ঞান লাভ করতে পেরেছেন।

আরাফার দিন কোনটি

আরাফার দিন একটি বিশেষ মর্যাদাবান দিন। এর দিনে রয়েছে বিশেষ কিছু ফজিলত। অনেকেই আরাফার দিনে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না আরাফার দিন কোনটি তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম এবং আরাফার দিন কোনটি সে বিষয়ে জানাবো।

জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে নবম দিনের রোজা সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ।

হজের দিনটিই আরাফার দিন। হজের দিনেই মুমিন মুসলমান আরাফার রোজা পালন করে থাকেন। এবং হজের দিনটিকে আরাফার দিন বলা হয়।চাঁদের হিসাবে আগামী ৮ জুলাই শুক্রবার আরাফার দিন। যারা আরাফার দিনের রোজা রাখতে চান; তাদেরকে অবশ্যই বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাতে সেহরি খেতে হবে। এছাড়াও যেসব দেশে ১০ জুলাই কোরবানি হবে, তাদের অনেকে ৯ জুলাইও রোজা রাখেন।

আরাফার দিবসে কয়টি রোজা রাখা হয়

জিলহজের প্রথম দশ দিন অতি বরকতপূর্ণ। আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য বিশেষ উপহার ও মর্যাদাপূণ্য।

এই দশ দিনের আমল ও ইবাদত আল্লাহর কাছে বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি প্রিয়। কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য বর্ণনায় জিলহজের দশ দিনের আমল-ইবাদতের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আজকেরে আর্টিকেলে আমরা আরাফা দিবসের রোজা করার নিয়ম এবং আরাফার দিবসে কয়টি রোজা রাখতে হয় সে বিষয়ে জানব।

আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসে কয়টি রোজা করতে হবে

জিলহজের ১ থেকে ৯ তারিখ প্রতিদিনের রোজা ১ বছরের রোজার সওয়াব এবং প্রতিরাতের ইবাদত ১ বছরের ইবাদতের সমান সওয়াব। (তিরমিযী, খণ্ড:১, পৃষ্ঠা: ১৫৮)।

জিলহজের ৮ থেকে ১৩ তারিখ হজের কার্যক্রম, ৯ থেকে ১৩ তারিখ আইয়ামে তাশরীক, ৯ তারিখ হজ, ১০ তারিখ ঈদ, ১০ থেকে ১২ তারিখ কোরবানি এবং ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ আইয়ামে বীদ এর রোজা, যা প্রতি মাসেই রয়েছে। এক সাথে এত অধিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ইবাদত অন্য কোনো মাসে দেখা যায় না।

কেউ যদি থেকে নয় তারিখ রোজা পালন করলে এর মধ্যেই আরাফার রোজা পালন হয়ে যাবে, এটাই সর্বোত্তম। নয়টি রোজা না রাখলেও আট ও নয় তারিখ দুটি রোজা করলেও আরাফার রোজা আদায় হয়ে যাবে।

আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম

আপনারা অনেকেই আছেন যারা আরাফা দিবসে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আরাফা দিবসে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারবেন। আরাফার দিন বিশেষ একটি মর্যাদাবান এবং এবাদতের গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।

আরাফার দিবসে রোজা করার ফজিলত

জিলহজ মাস মানে হজের মাস। হজের তিনটি মাস শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ। এর মধ্যে প্রধান মাস হলো জিলহজ মাস। এ মাস হল আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিক পবিত্র ও ইবাদতের মাস। এ মাস গুলোতে লাখো কোটি মুসলমান হজ পালন করে থাকে। আরবি ১২ মাসের সর্বশেষ মাস জিলহজ মাস। এ মাসটি বছরের চারটি সম্মানিত মাসের একটি।

এই মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। জিলহজ মাসের নবম দিন। আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়ার দিন। যেখানে উপস্থিত হওয়াই হচ্ছে হজের প্রধান কাজ। এ দিনে রোজা রাখার ফজিলত অনেক। আজকের আমরা আরাফাত দিবসে রোজা করার নিয়ম সম্পর্কে এবং আরাফা দিবসে রোজা করা ফজিলত সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আরফার দিনের রোজার ছওয়াব এক হাজার দিন রোজা রাখার সমান। (তারগিব)

জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত দিনে রোজা পালন করা, রাতে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত। যথা: নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, তওবা-ইস্তিগফার ইত্যাদি।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়, প্রতিটি দিনের রোজা এক বছরের রোজার মতো আর প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের মতো’ (তিরমিজি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা: ১৫৮)।

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের ঈদুল আযহা কয় তারিখ - ঈদুল আযহা কত তারিখ ২০২৩

আরাফার দিন, অর্থাৎ ৯ জিলহজ নফল রোজা রাখা বিশেষ সুন্নত আমল। তবে আরাফায় উপস্থিত হাজি সাহেবদের জন্য এই রোজা প্রযোজ্য নয়। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তাআলা তার (রোজাদারের) বিগত এক বত্সরের ও সামনের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (তিরমিজি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা: ১৫৭)

আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়মঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম, আরাফার দিবসে রোজা করার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা আরাফার দিবসে রোজা করার নিয়ম এবং অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেহেতু বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই অবশ্যই আমাদের এ সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারন আমাদের ওয়েবসাইটে এইরকম আর্টিকেল নিয়মিত প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url