শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? এ বিষয়ে কিছু তথ্য জানাতে এসেছি। অনেকেই আছেন যারা ইসলামী আকীদায় না চলে ইসলামী ধর্মের ভিতরে বেদাত পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এ বিষয়ে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচনা করব।

শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

আপনারা যারা শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সে বিষয়ে জানতে চান, তারা আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। তাহলে আসুন শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন। এবং ইসলামের সঠিক আকীদা অবলম্বন করি।

সূচিপত্রঃ শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

শবে বরাতের গুরুত্ব

ইসলাম ধর্মের একটি মহামান্বিত ও গুরুত্বপূর্ণ রাত শবে বরাত। এ রাত কে ভাগ্য রজনীয় বলা হয়। এ রাতের অনেক ফজিলত ও তাৎপর্য রয়েছে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এ বিষয়ে আপনাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে চলেছি অনেকেই আছেন যারা শবে বরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত নন আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সামনে আমরা শবেবরাতের সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এবং শবে বরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করব।

আরো পড়ুনঃ রমজানের প্রস্তুতি কিভাবে নেব

মহিমান্বিত এ রাত অশেষ ফজিলতের। হজরত রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, শবেবরাত হলো-‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’। অর্থাৎ শাবান মাসের ১৫তম রজনী। বিখ্যাত সাহাবি হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহতায়ালা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক-বিদ্বেষী লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৩৯০, সহিহ ইবনে হিব্বান : ৫৬৬৫)।

যে সব মাসে আল্লাহতায়ালা বান্দার জন্য বিশেষ বরকত রেখেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো- পবিত্র শাবান মাস। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখতেন।

উম্মত জননী হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) রমজান মাস ব্যতীত অন্য কোনো মাসে পূর্ণ রোজা রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে অন্য কোনো মাসে এতো বেশি রোজা রাখতে দেখিনি। -(সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

তাই আমাদের সকলেরই উচিত এই রাতে বিশেষ নজর দেওয়া আল্লাহর জিকির আজগরে নফল নামাজে এবং কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে রাতটিকে পার করা।

শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

শবে বরাতের হালুয়া রুটির সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এ বিষয়ে জানতে হলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যা জানা সকল মুমিন মুসলমানদের জরুরী অনেকেই আছেন যারা ইসলামের ভেতরে অনেক বেদাত ও কুসংস্কার ঢুকিয়ে থাকে এবং ইসলামকে বিভিন্ন বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে থাকে।শবে বরাতের হালুয়া রুটি কতটুকু ইসলামে গ্রহণযোগ্য তা আমরা জেনে নিব।

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজে দাঁড়ালেন এবং এতো দীর্ঘ সিজদা করলেন যে, আমার ধারণা হলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি ধরে নাড়া দিলাম। তখন তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ে উঠল। তিনি সিজদা থেকে উঠে নামাজ শেষ করে আমাকে বললেন, আয়েশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তা নয়, আপনার দীর্ঘ সিজদা দেখে আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা।

তখন আল্লাহর রাসুল আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন। আল্লাহর রাসুল বললেন, এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত। আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানে তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ নজর দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।’ (বায়হাকি : ৩য় খ-, ৩৮২ পৃষ্ঠা)

এই হাদিস দ্বারা জানা যায়, এখানে কোন শবে বরাতের হালুয়া রুটি খাওয়া এবং বুলানো সম্পর্কে কোন উদাহরণ দেওয়া নেই।

এ রাতে দীর্ঘ নফল নামাজ পড়া উত্তম একটি কাজ। এই নামাজের সিজদাও দীর্ঘ হবে। এছাড়াও এই রাতে একা একা কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার ইত্যাদি আমল করা সর্বোত্তম। সম্মিলিত কোনো আমলকে এই রাতে আবশ্যকীয় মনে করা বিদআত। 

অনেকে আছেন যারা এই রাতকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকেন এবং বিভিন্ন কুসংস্কার গুলো ঢুকিয়ে থাকেন। তেমনি একটা হল শবে বরাতের হালুয়া রুটি খাওয়া এবং পাড়া-প্রতিবেশীকে হালুয়া রুটি বিলানো। যা ইসলামে কোন শুদ্ধ দলিল ও হাদিস নেই। তাই আমরা শবে বরাতের হালুয়া রুটি বানানো এবং বিলানো থেকে বিরত থাকি।

ইসলামের মধ্যে ঢুকে যাওয়া কুসংস্কার ও বেদাআত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখি। আল্লাহ আমাদের সকল মুমিন মুসলমানদের এইসব কুসংস্কার থেকে যেন দূরে রাখেন এবং আল্লাহ তায়ালার জিকির আজগারে যেন এ রাতটিকে আমরা পার করতে পারি আল্লাহ যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করেন। (আমিন)

শবে বরাতের হাদিস

শবেবরাত একটি মহিমান্বিত রাত। শবেবরাত শব্দটি ফারসি। শব অর্থ রাত, বরাত অর্থ মুক্তি; শবেবরাত অর্থ মুক্তির রজনী। এর আরবি হলো ‘লাইলাতুল বরাত’। হাদিসে শবেবরাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্যরাত বলা হয়েছে। এ রাতটিকে ভাগ্য রজনীয় বলা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালে রোজার ক্যালেন্ডার

আজকেরে আর্টিকেলের বিশেষ ট্রাফিক ছিল শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে যা সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা কিছু জানতে পেরেছি শবে বরাতের অনেক হাদিস রয়েছে যারা এ সম্পর্কে অবগত না চলুন তাহলে শবে বরাতের হাদিস সম্পর্কে কিছু জ্ঞান লাভ করি।

শবে বরাত সম্পর্কে আমাদের সমাজে আলেমদের মধ্যে অনেক মতবাদ রয়েছে। কেউ এদিকে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত মনে করেন আবার কেউবা অন্য রাতের মত নয় প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

তবে এ রাতটির রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত যা সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।সম্মিলিত কোন রূপ না দিয়ে এবং এই রাত উদযাপনের বিশেষ কোনও পন্থা উদ্ভাবন বা উদযাপন না করে বেশি  বেশি নফল ইবাদত করা সহীহ ও বিশুদ্ধ। এ রাত্রি একটি গুরুত্বপূর্ণরা তাই এ রাত টিকে আমরা আল্লাহ তাআলার বিশেষ এবাদত করে পার করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য জরুরী ও মর্যাদাবান ইবাদত হিসেবে বিবেচিত।

এই রাতকে অন্য সাধারণ রাতের মতো মনে করা এবং এ রাতের ফজিলতের ব্যাপারে যত হাদিস এসেছে তার সবগুলোকে মওযূ বা যয়ীফ মনে করা একটি ভ্রান্ত ধারণা।

হযরত আলী বিন আবু তালীব রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন শাবান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে [শবে বরাত] তখন তোমরা রাতে নামায পড়, আর দিনের বেলা রোযা রাখ। নিশ্চয়ই আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডুবার সাথে সাথে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন-কোন গোনাহগার ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি আমার কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব।

কোন রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দিব। কোন বিপদগ্রস্থ মুক্তি পেতে চাও কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করে দিব। আছে কি এমন, আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফযর পর্যন্ত। (সূনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-১৩৮৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদিস নং-৩৮২২)

শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ

শবে বরাত অর্থ হচ্ছে মুক্তির রাত। এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের গুনাহ মাফের এবং দোয়া কবুলের জন্য বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। শবে বরাতকে লাইলাতুল বরাতও বলা হয়। আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য আমরা শবে বরাতে হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এই নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।

অনেকেই শবে বরাত সম্পর্কে নানা রকম ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে থাকেন। শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ এর সম্পর্কে অনেকেই অবগত না চলুন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ এ সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিই।

শবে বরাত পালন করা অবশ্যই জায়েজ এবং একটি বিশুদ্ধ ইবাদত। কিন্তু যখন শবে বরাত পালনের কর্মকাণ্ড আল্লাহর ইবাদতের বাহিরে চলে যায়, তখন তা অবশ্যই না জায়েজ কিংবা বিদআত হয়ে যাবে।

ইসলাম এবং নবীজি মুহাম্মদ (সা:) এর আদেশ অনুযায়ী শাবানের রাত বা শবে বরাত পালন করা জায়েজ।

তবে আমাদের দেশে শবে বরাত উপলক্ষে অনেক  অনেকে হালুয়া রুটি বিলানো শুরু করেন যা কখনো এগুলো ইসলামের প্রাধান্য দেয় না। এবং অনেকেই আছে যারা শবে বরাত উদযাপনে বিভিন্ন আতশবাজি পটকা ফুটানো এবং লাইটিং করে থাকেন এগুলো একটি অসামাজিক কর্মকাণ্ডের ভিতর পড়ে।এগুলো শুধু শবে বরাতেই নয় বরং কখনোই জায়েজ নাই।

নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শবে বরাতের রাতে এমন কোনও ব্যক্তিও যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান যার গুনাহের পরিমাণ ভেড়া- বক্রির পশমের থেকেও পরিমানে বেশী তবুও আল্লাহ তার ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেন”।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাত কবে ২০২৩ - শবে বরাত কত তারিখ ২০২৩

সোর্সঃ তিরমিজি ৭৩৯ থেকে।

তাই আসুন আমরা ইসলামের যেগুলো জায়েজ এবং যে নিয়মের শবেবরাত পালন করা হয় আমরা সেই নিয়মে শবে বরাতটি আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকি। এ রাতে নফল ইবাদত এবং কোরআন তেলাওয়াত জিকির আজগর এর মাধ্যমে এই দিনটি যেন পার করতে পারি আল্লাহ যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করেন। (আমিন)

শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ভিডিও

আমরা অনেকেই শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া রুটি করে থাকি। এ বিষয়টি কতটুকু ইসলামসম্মত তা জানতে হবে। কারণ ইসলামের বহিরভুক্ত কোন জিনিস ইসলামের নামে চালিয়ে দেওয়া সব থেকে বড় পাপের কাজ। তাই আপনাদের সুবিধার্থে শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ভিডিও উল্লেখ করা হলো।

শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলেঃ শেষ কথা

শবে বরাতের হালুয়া রুটি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ? শবে বরাতের হাদিস, শবে বরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url