সেহরী কোন সময় করা উত্তম

আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি। যা সেহরী কোন সময় করা উত্তম। কারণ সামনে রমজান মাস, আর রমজান মাসে আমরা সকলেই সঠিক সময়ে সেহরি খাওয়া শুরু ও শেষ করতে পারি না। আজকেরে আর্টিকেলে আপনাদের জন্য আমরা সেহরী কোন সময় করা উত্তম সে বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব।

সেহরী কোন সময় করা উত্তম

সেহেরী কোন সময় করা উত্তম তা জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে সেহরী কোন সময় করা উত্তম তা ঝটপট জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ সেহরী কোন সময় করা উত্তম

সেহরী কোন সময় করা উত্তম

আল্লাহ তাআলার রহমতের মাস নাজাতের মাস এবং মাগফিরাতের মাস রমজান। এই মাসে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সমস্ত গুনাহ খাতা আমাদের ইবাদতের মাধ্যমে মাফ করে থাকেন। রোজা রাখার পর্ব শুরু হয়ে থাকে সেহেরির মাধ্যম দিয়ে তাই সেহরী কোন সময় করা উত্তম তা জানা অবশ্যই সকল মুসলমানদের জন্য জরুরী। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সেহরী কোন সময় করা উত্তম এ বিষয়ে আপনাদের সঠিকভাবে জানাবো।

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালে রোজার ক্যালেন্ডার

সেহেরির ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে মূলত তাখির করা। তাখিরুস সাহুর, তাজিরুল ইফতার। ইফতারটা আগে হবে, আগে বলতে আবার সময়ের আগে না, সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে। আর সেহেরির ক্ষেত্রে বিলম্ব হবে। যত আপনি সুবহে সাদিকের আগ মুহূর্তে সেহেরি খেতে পারবেন, ততই উত্তম।

বিলম্বে সাহরি খাওয়া উত্তম। আগে খাওয়া হয়ে গেলে শেষ সময়ে কিছু চা, পানি, পান ইত্যাদি খেলেও সাহরির ফজিলত অর্জিত হবে। (হেদায়া, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা ১৮৬)

হজরত জায়েদ ইবনে সাবেত (রা.) বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে সেহরি খেলাম অতঃপর নামাজে দাঁড়ালাম। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সেহরি খাওয়া ও নামাজে দাঁড়ানোর মধ্যে সময়ের ব্যবধান কতটুকু ছিল? তিনি উত্তরে বললেন, ৫০ আয়াত পাঠ করার মতো সময়ের ব্যবধান ছিল।’ (বুখারিঃ ১৯২১)।

তাই সুবহে সাদিকের পর সেহরি খেলে রোজা হবে না। যদি নিদ্রা বা অন্য কোনো কারণে কেউ সেহরি খেতে না পারেন, তাহলে সেহরি না খাওয়ায় তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সেহরি না খাওয়ার কারণে রোজা ছেড়ে দেওয়া বড়ই গুনাহের কাজ।

সেহরী খাওয়ার উপযুক্ত সময়

আমাদের মুসলমান উম্মাহর জন্য রমজান মাসের এক মাস রোজা ফরজ করা হয়েছে। এবং রোজা রাখতে সেহরি খাওয়ার সুন্নত করা হয়েছে। অনেকেই তারাতারি সেহরি খেয়ে নেন আবার অনেকেই একেবারেই শেষ সময়ে সেহরি খান।

সেহরি খাওয়ার উপযুক্ত সময় জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সেহরী কোন সময় করা উত্তম সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানানোর চেষ্টা করব। চলুন তাহলে সেহরি খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন তা সঠিকভাবে জেনে নিন।

সেহরি সম্পর্কে হদিসে আরও এসেছে, সুবহে সাদিকের কাছাকছি সময়ে সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। এত দেরি করা মাকরুহ, কারণ সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। (ফাতওয়ায়ে আলমগীরী ১/২০০)

সেহেরির শেষ সময় হচ্ছে সুবহে সাদিক। পূর্ব আকাশে হালকা সাদা আলোর আভা দেখা যাবার সাথে সাথেই সেহেরির খাওয়ার শেষ সময় হয়। আর সুবহে সাদিকের পর থেকেই ফজরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে থাকে। এবং তার সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত সময় থাকে।

সেহরী করার ফজিলত

রোজা পালনের নিয়তে সুবহে সাদিকের আগে যে পানাহার করা হয় তাকে সেহরি বলে। সেহরি খাওয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত। এর মধ্যে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আজকের আর্টিকেলে আমরা সেহরী কোন সময় করা উত্তম এবং সেহেরি করার ফজিলত সম্পর্কে আপনাদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে চলেছি তাহলে চলুন সেহেরি করার ফজিলত কতটুকু তা জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের আমল ও ফজিলত

সেহরির সময় নিদ্রা পরিহার করে জাগ্রত হওয়া আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ ও ইবাদত। এতে শেষ রাতে ওঠার অভ্যাস হয়। কেননা শেষ রাতে আল্লাহর রহমত অবিরাম ধারায় বর্ষিত হতে থাকে। এ সময় আল্লাহ প্রেমিকেরা সৃষ্টিকর্তার কাছে কায়মনোবাক্যে মোনাজাত, নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে লিপ্ত থাকেন। এ সময়টি আল্লাহর পক্ষ থেকে মাগফিরাত বা ক্ষমা লাভের সর্বোত্তম সময়।

হাদিস শরিফে সাহরি খাওয়ার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আহলে কিতাব আর আমাদের মুসলমানদের রোজার মধ্যে শুধু সাহরি খাওয়াই পার্থক্য। অর্থাৎ তারা সাহরি খায় না আর আমরা সাহরি খাই।’ (মুসলিমঃ ১৮৪৩, তিরমিজি : ৬৪২)

যদি ক্ষুধা না থাকে আর খাওয়ারও ইচ্ছা না থাকে, তবু দুই একটা খেজুর খেয়ে নিলে অথবা এক ঢোক পানি পান করে নিলেও সুন্নাতের ওপর আমল হয়ে যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। অর্থাৎ শরীরে প্রফুল্লতা ও শক্তি থাকে। (বুখারি, মুসলিম) তিনি আরও বলেছেন, তোমরা সহিরি খেয়ে রোজা রাখার জন্য সাহায্য গ্রহণ করো। (সহিহ ইবনে খুজায়মা)

সেহরির সময় আল্লাহ তায়ালার বিশেষ রহমত অবতীর্ণ হয়। এ সময়টিতে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, তাহাজ্জুদের নামাজ ও অন্যান্য নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা লাভের সর্বোত্তম সময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের সেহরির সময় দোয়া কবুল হয়।’ (তাবরানি)

সেহরী খাওয়ার সঠিক সময় কতক্ষণ

সেহরি খাওয়ার সময় শুরু হয় মধ্যরাত থেকে। আর শেষ হয় ফজরের আগে। তবে ফজরের আগে তথা শেষ রাতে সেহরি গ্রহণ করাই হলো মোস্তাহাব।সেহেরির অনেক ফজিলত ও বরকত রয়েছে যা আমরা ইতিমধ্যে আজকে আর্টিকেলে জানতে পেরেছি। সেহরি খাওয়ার সঠিক সময় কতক্ষণ তা আজকেরে আর্টিকেলে আমরা জেনে নেব তাহলে চলুন আর দেরি না করে সেহরি খাওয়ার সঠিক সময় কতক্ষণ সে সম্পর্কে জেনে নিন।

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যায়েদ বিন সাবেত তাকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সাহরি খেয়ে (ফজরের) নামাজ পড়তে ওঠে গেছেন।

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সাহরি খাওয়া ও ফজরের আজান হওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান কতটুকু? উত্তরে যায়েদ বিন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ’৫০ অথবা ৬০ আয়াত পড়তে যতক্ষণ সময় লাগে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)

আরো পড়ুনঃ শাবান মাসে কি আমল করব - শাবান মাসের ফজিলত

৫০/৬০ আয়াত বলতে মধ্যম ধরনের আয়াত। যা তেলাওয়াতে ১৫/২০ মিনিট সময় লাগবে। সে আলোকে ফজরের আজানের ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে সাহরি খাওয়া। অতএব সাহরি খাওয়ার সুন্নাত সময় হলো ফজরের ১৫/২০ মিনিট আগে সাহরি।

আপনি যদি মধ্যরাতের আগে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন তাহলে আপনাকে সাহরি গ্রহণের জন্য শেষ রাতে ওঠতে হবে। এবং মধ্যরাতের পরে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে সাহরি খাওয়ার বরকত ও হুকুম আদায় হয়ে যাবে।

সেহরী কোন সময় করা উত্তমঃ শেষ কথা

সেহরী কোন সময় করা উত্তম? সেহেরী খাওয়ার সঠিক সময় কতক্ষণ? সেহেরী করার ফজিলত, সেহরী খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে সেহরী কোন সময় করা উত্তম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url