শীতকালে কোন ফুল ফোটে - শীতকালীন ফুলের নাম
শীতকালে কোন ফসল ভালো জন্মায়শীতকালে কোন ফুল ফোটে এ বিষয়ে আপনাদের জানাবো। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রকমের ফুল ফুটে থাকে কিন্তু শীতকালীন ফুলের নাম এ বিষয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। আজকের এই আর্টিকেলের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আমরা শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব। তাহলে চলুন শীতকালে কোন ফুল ফোটে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন।
সূচিপত্রঃ শীতকালে কোন ফুল ফোটে - শীতকালীন ফুলের নাম
শীতকালে কোন ফুল ফোটে
শীত আসে বিভিন্ন ফুল ফলের বাহার নিয়ে। শীতকালে কোন ফুল ফোটে এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানাবো। কারন এমন অনেকে আছেন যারা শীতকালে কোন ফুল ফোটে এ বিষয়ে এখনো সঠিকভাবে জানে না। কারণ বাংলাদেশে শীতের সময় যে ফুলগুলো সচরাচর দেখা যায় সে কয়েকটি ফুল ছাড়া শীতকালে যে আরো বিভিন্ন রকমের ফুল ফোটে সে বিষয়ে অনেকেই জানেনা।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে কোন ফল ভালো হয়
শীতকালের এই ফুলগুলো যেমন রয়েছে সুবাস তেমন রয়েছে সৌন্দর্য যা শীতের মৌসুমকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলে। শীতের প্রাকৃতিক দৃশ্য যেন অপরূপ সুন্দর হয়ে আমাদের মাঝে ধরা দেয়। শীতকালে এই ফুলগুলো আমাদের সকলের কাছে অনেক প্রিয়। কারণ ফুল পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। তাই ফুল প্রেমি মানুষেরা ফুলের সম্পর্কে বেশি জানতে আগ্রহী হয়।
বিভিন্ন প্রিয় ফুলগুলোর চারা বাড়ির ছাদে বা আশেপাশে ও টবে চাষ করে থাকে। বিভিন্ন ঋতুতে ফোটে বিভিন্ন রকমের ফুল কিন্তু, শীতকালে কোন ফুল ফোটে এবং কোন ফুল গুলো আপনি চাষ করলে অধিক লাভবান হতে পারবেন এবং আপনার বাড়ির আশেপাশে সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলবে সে ফুলগুলো সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সামনে আলোচনা করব।
শীতকালীন ফুলের নাম
শীতকালীন ফুলের নাম সম্পর্কে আপনাদের আমরা জানাবো কারণ শীত আসেন বিভিন্ন ফুলের রং নিয়ে। বিভিন্ন ঋতুতে ফুটে বিভিন্ন রকমের ফুল কিন্তু শীতকালে ফুলের মেলা যেন আরো দ্বিগুণ পেয়ে বসে। শীতে ফোটে বাহারি রকমের ফুল। কিন্তু শীতকালে কোন ফুল ফোটে কত রকমের শীতকালীন ফুল রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা।
শীতকালীন ফুলের নাম আমরা কেইবা বেশি জানি সচরাচর কয়েকটা হয়তো জানি। তাই আপনাদের জন্য আমরা শীতকালীন ফুলের নাম নিয়ে হাজির হয়েছি চলুন তাহলে শীতকাল ফুলের নাম গুলো কি সে সম্পর্কে জেনে নিন।
- গাঁদা
- গোলাপ
- ডালিয়া
- ক্যামেলিয়া
- কারনেশন
- চন্দ্রমল্লিকা
- জারবেরা
- কৃষ্ণকলি
- অ্যাস্টার
- সুইট পি
- মর্নিং গ্লোরি
- ক্যালেন্ডুলা
- সূর্যমুখী
- কসমস
- ডেইজি
- হলিহক
- ভারবেনা
- ন্যাস্টারশিয়াম
- ডেইজি
- প্যানজি
এ সকল ফুলগুলো শীতকালে ফুটে থাকে। এই ফুলগুলো চারিদিকে যেন সুবাস ছড়িয়ে থাকে। শীতকালে এই ফুলগুলো যেন শীতের আরো সুন্দর্য ও মাধুর্য বাড়িয়ে তোলে।
শীতকালে কয়েকটি জনপ্রিয় ফুল
শীতকালে কয়েকটি জনপ্রিয় ফুল রয়েছে যে ফুলগুলো আমাদের সকলের কাছে অনেক পরিচিত এবং প্রিয়। শীতকালে যে ফুলগুলো বাংলাদেশে খুবই পরিচিত এবং জনপ্রিয় সে ফুলগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানাবো এবং শীতকালে কোন ফুল ফোটে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
গাঁদাঃ শীতের খুবই পরিচিত একটি ফুল গাঁদা। শীতকালে বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এই ফলটি সবার কাছে সুপরিচিত। এবং এই ফুলটির সৌন্দর্য ও গন্ধ খুবই জনপ্রিয়। সকলে গাঁদা ফুলকে অনেক পছন্দ করে। গাঁদা ছাড়া শীত যেন বেমানান। তাই শীতের মৌসুমকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে গাঁদা আমাদের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি ফুল।
আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের গাধা ফুল দেখতে পাওয়া যায় কারণ গাঁদা ফুলের রয়েছে বিভিন্ন জাত। রক্ত গাঁদা, বড় চাকা কমলা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা , চায়না গাঁদা,ইনকা গাঁদা ছাড়াও বিভিন্ন রকমের গাঁদা রয়েছে।
চন্দ্রমল্লিকাঃ শীতকালীন একটি জনপ্রিয় ফুল হলো চন্দ্রমল্লিকা। এই চন্দ্রমল্লিকা প্রাকৃতিক এ যেন আরও সুন্দর করে তুলেছে। এ রয়েছে বাহারি রং এবং বাহারি প্রজাতি।
সূর্যমুখীঃ খুব আকর্ষণীয় একটি ফুল সূর্যমুখী। সূর্যমুখী যখন বাগানে ফোটে তখন মনে হয় সকল ফুলের রাজা এই সূর্যমুখী। শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের মধ্যে সূর্যমুখী ও আমাদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
গোলাপঃ বলা হয় ফুলের রাজা গোলাপ। এই ফুলটি শীত ছাড়াও বারোমাসি চাষ করা হয়।এর সৌন্দর্য ও রঙে মুগ্ধ হয় হাজারো প্রেমী। বিভিন্ন ভালবাসা নিবেদনের জন্য গোলাপকেই বেশি ব্যবহার করা হয়। গোলাপ মানেই ভালোবাসার রং। আর এই গোলাপ ফুল আমাদের সকলের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
ডালিয়াঃ শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের পাশাপাশি ডালিয়াও রয়েছে জনপ্রিয় শীর্ষে। এর চোখ জোড়ালো বাহারি রং ও পাপড়ি যেন আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলেছে। ডালিয়ার বাহারি রং লাল সাদা হলুদ চকলেট রঙের এই বাহারি প্রজাতির ফুল খুব সহজেই মানুষের মন আকৃষ্ট করে তোলে।
কৃষ্ণকলিঃ কৃষ্ণকলি গাছটি ছোট হলেও এর মন কাড়া বাহারি রঙের ফুল শীতকালীন বাগানকে আরো ভরিয়ে তোলে। আমাদের দেশে যারা ফুল প্রেমি রয়েছে তাদের অধিকাংশই কৃষ্ণকলি ফুলের কাছে নত। অনেকের কাছে এই কৃষ্ণকলি ফুলকে সন্ধ্যা মালতী নামে পরিচিত।
শীতকালীন ফুল চাষ
শীতকালীন ফুল চাষ সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। শীত মানেই বিভিন্ন ফুলের বাহার। আমাদের প্রতিটা মানুষেরই বিভিন্ন ফুল গাছ চাষ করার সখ রয়েছে। আমরা বাড়ির ছাদে বা আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ফুলের চারা লাগিয়ে থাকি। ফুল বিভিন্ন ভাবে চাষ করা যায় আপনি ইচ্ছা করলে আপনার বাড়ির ছাদে তবে ফুল চাষ করতে পারেন।
তবে যদি আপনার বাড়ির আশেপাশে কোন জায়গা থাকে তাহলে সেখানে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ফুল চাষ করতে পারবেন। তবে আপনি যদি শীতকালীন ফুল চাষ করতে চান তাহলে আপনাকে শীতকালীন ফুল চাষের কিছু নিয়ম এবং শীতকালীন যে ফুলগুলো চাষ করবেন সে সম্পর্কে জানতে হবে।
শীতকালীন সময় যে গাছগুলো লাগাবেনঃ গোলাপ, ক্যামেলিয়া, গাঁদা, ডালিয়া, কারনেশন, স্যালভিয়া জারবেরা এজালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা ইত্যাদি বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগাতে পারেন। এ কাজগুলো আপনি চাইলে টবেও লাগাতে পারেন। তাহলে অবশ্যই আমাদের টবের আকার সম্পর্কে জানতে হবে।
টবের আকারঃ উপরোক্ত এই গাছগুলো যদি আমরা টবে লাগিয়ে লাগাতে চাই তাহলে আমাদের উপযুক্ত একটি বড় আকারের টব সংগ্রহ করতে হবে। কারণ আপনি যদি বড় চারা গাছ সংগ্রহ করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে টবের আকার বড় হতে হবে না হলে গাছের অনেক ক্ষতি হবে। তাই অবশ্যই আমাদের বড় পরিমাণের একটি টপ সংগ্রহ করে তাতে বেলে দোআঁশ মাটি এবং কিছু পরিমাণ গোবর মাটি মিশিয়ে টবটি পরিপূর্ণ করতে হবে।
মাটি তৈরিঃ শীতকালীন যে ফুলের চারা গাছগুলো আপনি তবে চাষ করতে চান তাহলে প্রতি টবের জন্য দোআঁশ মাটির সঙ্গে তিন ভাগের এক ভাগ জৈব সার বা পচা গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে। এর সঙ্গে একমুঠো হাড়ের গুঁড়ো, দুই চা-চামচ চুন, দু’মুঠো ছাই মিশালে গা চারা গাছের উর্বর ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং গাছ সুস্থ থাকবে।
চারা গাছ নির্বাচনঃ শীতকালীন সময়ে আপনি যে চারা গাছগুলো চাষ করতে চান তাহলে অবশ্যই মাস কয়েক খানিকের চারা গাছ নির্বাচন করতে হবে। কারণ এ বয়সে চারা গাছগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি এবং খুব সহজে নষ্ট হয় না। তাই তবে ছাড়া রোপন করতে চাইলে কয়েক মাসে চারা গাছ সংগ্রহ করবেন এছাড়াও আপনি যদি গাছে কলম করতে চান তাহলে অল্প বয়সের চারা গাছগুলো সংগ্রহ করবেন।
বীজ বপনের সময়ঃ শীতকালীন ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাস
চারা গাছ সেচঃ চারা গাছ লাগানোর পর চারার গোড়ার মাটি গুলো শক্ত করে চেপে দেবেন এবং চারা গাছের ওপরে আস্তে আস্তে করে পানি ছিটিয়ে দেবেন এবং খেয়াল রাখবেন গাছের গোড়ার মাটিগুলো যেন শুকিয়ে না যায় এজন্য নিয়মিত সেচ প্রদান করতে থাকবেন।
বেড়া বা বাঁধঃ চারা গাছ লাগানোর পর অনেক গাছ গুলো নিয়ে পড়ে যায় এজন্য চারা গাছকে সোজা রাখতে বেড়া বা বাঁধ ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে গাছকে সোজা রাখতে সাহায্য করবে।
মাটি আলগা করনঃ গাছের গোড়ার মাটি একেবারে গুঁড়ো না করে চাকা চাকা রেখে খুঁচে দেওয়া ভালো। এর গভীরতা হবে ৩-১০ সেন্টিমিটার বা ১-৪ ইঞ্চি। আর প্রতি ১০ থেকে ১২ দিন পর পর মাঠে আলগা করন কাজটি করতে হবে।
সারঃ চারা গাছে যখন কুঁড়ি আসা শুরু হবে তখন ৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ২৫ গ্রাম এমওপি মিশিয়ে প্রতি গাছে এক চা-চামচ করে ১০ দিন অন্তর দিতে হবে। এবং খেয়াল রাখতে হবে সার যেন গাছের শিকড়ে না পৌঁছায়। এবং এ সার গুলো এক মৌসুমে এক থেকে দুই বারের বেশি দেওয়া উচিত নয় কারণ এতে করে গাছের অনেক ক্ষতি হয়।
আরো পড়ুনঃ শীতে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা
ফুল সংগ্রহঃ ফুল গাছ থেকে অধিক ফুল সংগ্রহ করতে চাইলে গাছে ফুল কখনোই শুকাবেন না ফুল শুকানোর আগেই ফুলগুলো কেটে ফেলুন। ফুল গাছে যখন প্রথম ফুলের কুড়ি আসে তখন সে কুড়ি গুলো কে চিমটি কেটে ছেঁটে ফেলুন। এতে করে পরবর্তীতে গাছে অধিক ফুল আসবে।গাঁদা, অ্যাস্টার, চন্দ্রমল্লিকা প্রভৃতি গাছ থেকে বেশি ফুল বেশি দিন ফুল পেতে চাইলে প্রথমদিকের কুড়িগুলো ছেঁটে ফেলতে হবে।
আমাদের শেষ কথা
শীতকালে কোন ফুল গুলো ফোটে সাধারণত এই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনি যদি শীতকালীন ফুল সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে করুন। আশা করি আপনারা আমাদের এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত হবে শীতকালীন ফুল এবং ফুলের নাম সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল করতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url