শীতকালে কোন ফল ভালো হয় - শীতকালীন ফলের গুনাগুন

শীতকালে কোন ফসল ভালো জন্মায় শীতকালে কোন ফল ভালো হয়? এ বিষয়ে যারা জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শীতকালে কোন ফল ভালো হয় সে বিষয়ে আলোচনা করব। আশা করি শেষ পর্যন্ত থেকে বিষয়গুলো জেনে নেবেন।

শীতকালে-কোন-ফল-ভালো-হয়

যদি আপনি একজন কৃষক ভাই হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শীতকালে কোন ফল ভালো হয় এবং শীতকালীন ফল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ শীতকালে কোন ফল ভালো হয় - শীতকালীন ফলের গুনাগুন

শীতকালীন ফলের তালিকা

শীতকালে কোন ফল ভালো হয় এ বিষয়ে অনেক সময় কৃষি ভাইয়েরা জানতে চাই কারণ যারা চাষাবাদ করে থাকে তারা শীতকালে বিভিন্ন রকমের ফল চাষাবাদ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাই শীতকালীন কোন ফল ভালো হয় এ বিষয়ে জানা থাকলে তারা শীতকালীন ফল চাষে আরো আগ্রহী হবেন। তার আগে চলুন শীতকালীন ফলের তালিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ শীতে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

শীতকালে বিভিন্ন রকমের ফল পাওয়া যায় এবং শীতকালীন ফলগুলো সতেজ এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে। শীতকালীন ফলের তালিকার মধ্যে রয়েছেঃ

  • আপেল 
  • আঙ্গুর 
  • ডালিম 
  • কমলা
  • পেয়ারা 
  • শালুকা
  • সফেদা
  • ফুটি
  • বড়ই 
  • আমলকি 
  • জলপাই

এ ফলগুলো ছাড়াও শীতের বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু ফল পাওয়া যায় যে ফলগুলো খেয়ে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়ে থাকে।

শীতকালে কোন ফল ভালো হয়

শীতকালে কোন ফল ভালো হয় এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আপনাদের আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানাবো। শীতকালে আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের ফল চাষাবাদ হয়ে থাকে যে ফলগুলো বাজারজাত করে অনেক লাভবান হওয়া যায় এবং শীতকালে কোন ফল ভালো হয় এর সকল তথ্য জেনে কৃষকদের সে সকল ফল চাষে আগ্রহী হতে হবে তাহলে তারা তুলনামূলক লাভবান হতে পারবেন।

শীতকালে বিভিন্ন ফল ফল ও সবজির সমূহ লেগে থাকে কারণ এর সময় সূর্যের তাপমাত্রা এবং জলবায়ু তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকে এ কারণে ফসল উৎপাদনে এই সময়টি খুব উপযোগী। এই সময়ে কৃষকেরা বিভিন্ন রকমের ফসল চাষাবাদ করে থাকে এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শাকসবজি ও ফলমূল।

শীতকালীন যে ফলগুলো ভালো হয়ে থাকে সে ফল গুলোর মধ্যে রয়েছে: বড়ই, জলপাই, আপেল, কমলা, আঙ্গুর, ডালিম, পেয়ারা ফেদা ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের ফল শীতকালীন এ ফলগুলো ভালো হয়ে থাকে। যে সকল কৃষক ভাইয়েরা শীতকালীন ফল সঠিকভাবে উৎপাদন করে ও বাজার যত করে অর্থ উপার্জন করতে চাই তারা এই ফলগুলো চাষাবাদ করতে পারেন।

শীতকালীন ফলের গুনাগুন

শীতকালীন কোন ফল ভালো হয় এ বিষয়ে আমরা উপরে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো শীতকালীন ফলের গুনাগুন সম্পর্কে জানিনা তাহলে চলুন আমরা শীতকালীন ফলের গুনাগুন সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।

আমাদের শরীরকে সুস্থ সবার রাখতে অবশ্যই বিভিন্ন ভিটামিনের প্রয়োজন রয়েছে আর এইসব ভিটামিন পূরণ হয়ে থাকে বিভিন্ন ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের দেশে বিভিন্ন সুস্বাদু ফল রয়েছে এবং শীতকালে যে ফলগুলো রয়েছে সে ফলগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন খনিজ আয়রন ইত্যাদি বিভিন্ন পুষ্টিগুণ। তাই চলুন শীতকালীন ফলের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন।

কমলাঃ শীতকালীন একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল কমলা। কমলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে বেটা ক্যারোটিন, ফ্ল্যাভনয়েড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আমরা একটি খনিজ সমৃদ্ধ ফল যা ক্যান্সার কোষ বিরোধের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ড ঠিক রাখে।

আপেলঃ দেহকে সুস্থ সবল ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন একটি করে আপেল যথেষ্ট। আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকার কারণে টিস্যুর ক্ষয়রোধ করতে সাহায্য করে আপেল।

আমলকিঃ আমলকিতে রয়েছে বহু উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ। পেয়ারার চাইতে আমলকিতে ১০ গুণ ভিটামিন সি এবং লেবু চাইতে তিন গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। সর্দি কাশি মাথা ব্যথা অনিদ্রা এবং বমি ভাব দূর করতে আমলকি বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি হটপিণ্ড ও ফুসফুস শক্তিশালী করে এবং মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ভালো রাখতে আমলকি বেশি মজবুত করে এবং শরীরকে শক্তিশালী বানাতে সাহায্য করে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমলকি বিশেষ কার্যকরী একটি ফল। এছাড়াও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও আমলকি জুড়ি নেই।

বড়ইঃ বড়াই রয়েছে প্রচুর আঁশ খনিজ উপাদান। এছাড়াও রয়েছে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট। বরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। শুকনো বড়ই এর মধ্যে স্যাপোনিন, অ্যাল্কালয়েড এবং ট্রাইটারপেনয়েড উপাদান রয়েছে যারা রক্তকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।

আমাদের স্নানের যন্ত্র ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং হজমের জন্য বেশ উপযোগী। বড়ই রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাশাপাশি ভিটামিন খনিজ ও প্রোটিন।

জলপাইঃ জলপাই একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত ফল। জলপাইয়ে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং সর্দি কাশি প্রতিরোধ করে।নিয়মিত জলপাই খেলে গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে পাথর, বাতের ব্যথা কিংবা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের প্রতিরোধ করে।

জলপাইয়ে রয়েছে ভিটামিন সি ও এ যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমাদের দাঁত, ত্বক, চুল ও হাড় শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে। জলপাইয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

সফেদাঃ বাংলাদেশের খুব জনপ্রিয় একটি ফল সফেদা। এটি স্বাদে ও গুনে অতুলনীয়। সফেদা আমাদের দেহের শক্তি উৎপন্ন করতে সাহায্য করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে সফেদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।এতে রয়েছে এতে রয়েছে ভিটামিন সি এ ও ক্যালসিয়াম ফসফরাস আয়রন ও কপার  সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান।

ডালিমঃ ডালিম আমাদের সকলের কাছে খুব পরিচিত একটি ফল অনেকে এটি আনার, বেদানা, বা ডালিম বলে চিনে থাকে। ডালিম আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে যেমন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি আমাশয় নিরাময় করে এবং খাওয়াতে রুচি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও অনিদ্রা কমায়, অজীর্ণ, রক্তপিত্ত কৃমি প্রতিরোধ করে থাকে।

শীতকালীন ফল খাওয়ার নিয়ম

শীতকালীন ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই হয়তো আমরা জানিনা এ যেন না বুঝে যখন তখনই ফল খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনি যদি সঠিক নিয়মে ফলগুলো খান তাহলে আপনার শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। চলুন তাহলে শীতকালীন ফল খাওয়ার বেশ কয়েকটি নিয়ম গুলো জেনে নিন।

শীতকালীন-ফল-খাওয়ার-নিয়ম

সকালে শুরুতে ফল খাওয়াঃ সকালে যদি আমরা ভারী রাস্তার অভ্যাস করি তাহলে আমাদের শরীর বিভিন্ন পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হবে। তাই আপনাকে এমন কিছু ডায়েট ফল বাছাই করতে হবে যে ফলে রয়েছে পর্যন্ত পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করবে এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার রয়েছে সেটাও নিরাময় করতে সকালে ফল খাওয়া জরুরি।

পানির ঘাটতি পূরণ করতেঃ আমাদের দেহে যখন প্রাণের ঘাটতি দেখা দিয়ে থাকে তখন আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যে ফলগুলোতে পানির পরিমাণ বেশি রয়েছে সে ফলগুলো সকালে ডায়েটে রাখা জরুরী। আপনি যদি এই ফল গুলো বাছাই করে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের ক্যালোরির পরিমান নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আর শীতকালে আমাদের এ সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে কারণ শীতের সময় আমাদের পানি অনেকটাই কম খাওয়া হয় তাই যে ফলগুলোতে পানির পরিমাণ বেশি সেই ফলগুলো বাছাই করে আপনি খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে ঘি খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

শীতকালে সংক্রমণ রোদ করতেঃ শীতের সময় বিভিন্ন ভাইরাস চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে তাই এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সকালের নাস্তায় প্রতিদিন ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এ সময় ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলো বাছাই করুন ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল সর্দি কাশি সহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।

শীতে রোগ প্রতিরোধ করতে ভিটামিন সি জাতীয় ফলঃ  কমলা , ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ও ভিটামিন সি যুক্ত ফল হার্টের জন্য বেশ উপকারী। সকালের নাস্তায় এই ধরনের ফল খেতে পারেন। হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকবে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

দিনের যেকোনো সময় ফল খেতে পারেনঃ আপনি দিনের যেকোনো সময় পেট ভরে ফল খেতে পারেন। তবে উপযুক্ত সময় যদি আপনি সকালের নাস্তা ও দুপুরে খাওয়ার মাঝে যদি আপনি ফল দিয়ে পেট ভরাতে পারেন তাহলে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হবে। এতে করে আমাদের শরীর ও কম ক্যালরি পাবে এবং ওজন ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আমাদের শেষ কথা

শীতকালে কোন ফল ভালো হয়? এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি ফলের চাষ করে থাকেন তাহলে আপনার অবশ্যই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে একটা ধারণা রাখা উচিত। কারণ এখান থেকে আপনি কখন কোন ফল ভাল হয় এই বিষয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা পাবেন। আশা করি আপনারা আমাদের এই আর্টিকেল থেকে বিষয়গুলো বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরও পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url