ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা

ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে বাদামের তেল খুবই উপকারী। তাই যারা ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই প্রতিবেদনটি। আজকের এই প্রতিবেদনের  আমরা ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই আমাদের এই প্রতিবেদনটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা

তাই কথা না বাড়িয়ে চলুন আমরা ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকি। ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

সূচিপত্রঃ ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা

বাদাম তেলের উপকারিতা

ত্বক ও চুলের জন্য আমরা নানা প্রকার প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি জানেন কি বাদামের তেল ত্বক ও চুলের জন্য কতটুকু উপকারী একটি উপাদান। হ্যাঁ বন্ধুরা বাদামের তেল ত্বক ও চুলের জন্য একটি শ্রেষ্ঠ তেল হিসেবে চিহ্নিত।বাদাম তেল চুল এবং ত্বকের যত্ন জন্য একটি শ্রেষ্ঠ তেল। এর শক্তিশালী পুষ্টি উপাদান এবং উপকারী বৈশিষ্ট্য চুল এবং ত্বক ভালো রাখতে চমৎকার কাজ করে।

আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যথার ওষুধের নাম কি

এটি শরীরের ত্বকের জন্যেও একটি চমৎকার ময়েশ্চারাইজার। শুধু ত্বক ও চুলের জন্য নয় এ রয়েছে আরো বেশ কিছু উপকারিতা। তাই ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতার পাশাপাশি চলুন তাহলে আজকে আমরা বাদাম তেলের উপকারিতা কি সে সম্পর্কে জেনে নেব।

ভিটামিন ইঃ বাদামের তেলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ই। ভিটামিন ই আমাদের ত্বকের সুরক্ষা করে। সূর্যের অতিবেগুনি থেকে ত্বককে রাখে সুরক্ষিত এবং বিভিন্ন ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা করে।যাদের ত্বকে সান বার্ন আছে, তারা এটি থেকে পরিত্রাণ পেতে কাঠবাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন।

মনসেচুরেটেড ফ্যাটঃ কাঠবাদামে আছে মনসেচুরেটেড ফ্যাট। যা শরীরে কলেস্ট্রল এর পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কাঠ বাদাম খেলে শরীরে ভালো কলেস্ট্রল বাড়াতে সাহায্য করে। একটি রিসার্চ এ দেখা গিয়েছে যারা প্রতিদিন ১ টি করে কাঠবাদাম খেয়েছে তাদের কলেস্ট্রল ৪.৪% কমেছে এবং যারা প্রতিদিন দুটি করে খেয়েছে তাদের কমেছে ৯.৪%। তাই শরীরের কোলেস্ট্রল এর পরিমাণ কমাতে আজ থেকে কাঠ বাদাম খাওয়া শুরু করুন।

ময়েশ্চারাইজারঃ কাঠবাদাম তেল হলো প্রাকৃতিক ময়েশচারাইজার। এতে কোন কেমিক্যাল বা প্রিজেরভেটিভ নেই। তাই এই তেল কে সিরাম হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

মাসল রিলাক্সেশনঃ মাংসপেশি মাঝে ম্যাসাজ করতে অনেকে বিভিন্ন ধরনের তেল ব্যবহার করে থাকে কিন্তু আপনি একবার বাদামের তেল ব্যবহার করে দেখুন। কারণ বাদাম তেল দিয়ে মাংসপেশী ম্যাসেজ করলে তা মাংসপেশীর জন্যে চমৎকার কাজ করে।

এন্টি প্রদাহজনকঃ আপনি যদি চর্ম রোগের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে কাঠ বাদামের তেল আপনার জন্য একটি উপকারী ঔষধি উপাদান কাঠবাদাম তেলে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড। তাই এটি স্কিন এর যেকোনো চর্ম সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এবং প্রদাহ হ্রাস করে।

বেদনানাশকঃ ব্যথা নাশক সমস্যাই যারা ভুগছেন তারা বাদামের তেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ব্যাথা স্থানে বাদাম তেল ম্যাসেজ করলে হালকা ব্যথা দূর হয়ে যায়।

রেচকঃ এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চমৎকার রেচক হিসেবে কাজ করে।

এন্টি-অক্সিডেন্টঃ বাদাম তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এটি শরীরের শক্তি সঞ্চালন করে। এতে আছে রিবফ্লাবিন, ফসফরাস, কপার, যেটা শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ডায়বেটিসঃ যারা ডায়াবেটিসের উপর রয়েছেন তারা কাঠবাদামের  তেল সারা শরীরে মালিশ করুন। কাঠবাদাম শরীরে ব্লাড সুগার এর ব্যালেন্স রাখে। তাই ডায়বেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী।

ত্বক সাদা করার জন্য বাদাম তেল

ত্বক সাদা করার জন্য বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার কর সুফল পাচ্ছেন না তাই আপনাদের জন্য আমরা ত্বক সাদা করার জন্য বাদামের তেলের উপকারিতা সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য জানাতে এসেছি যারা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তারা নিশ্চিন্তে বাদামের তেল ব্যবহার করে উপকারিতা পেতে পারেন। কারণ ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা বহু গুণ যা বলে শেষ করার নয়। তাই এই সকল উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত তকে বাদামের তেল ব্যবহার করতে হবে।

বাদামের তেল দিয়ে ত্বক সাদা করার উপায়ঃ

যারা বাদামের তেল ব্যবহার করেন না তারা অনেকেই হয়তো জানেন না বাদামের তেল ত্বকের সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে থাকে। যারা বর্তমান সময়ে বাজারের নামিদামি ব্যান্ডের সানস্ক্রিন গুলো ব্যবহার করে থাকেন তারা অযথা টাকা খরচ না করে বাড়িতেই বসে বাদামের তেল সানস্ক্রিন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

বিশেষ করে যারা সব সময় রোদের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করেন এবং বাইরে যারা বেশিরভাগ সময় কাটান তাদের ত্বকের সূর্যের অতিবেগুনি রশি থেকে সুরক্ষা করতে বাদামের তেল বিশেষভাবে কাজ করবে। রোদে পোড়া ভাব দূর করতে ও টার্নিং কমাতে আজ থেকে শুরু করুন ত্বকে বাদাম তেলের ব্যবহার।

বাদাম তেল দিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতাঃ

আপনার ত্বক যদি ব্রণ ফুসকুড়ি মেছতা সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত বাদাম তেল ব্যবহার করুন। এছাড়াও বাদামের তেল ত্বকের চুলকানি ও জ্বালাপোড়া কমাতে ও ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আপনি আমাদের এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।

আরো পড়ুনঃ হাত পা ব্যথা করার ৮টি কারণ

এক চা চামচ লেবুর রসের সাথে দুই চা চামচ বাদাম তেল মেশান। এবার মুখে লাগান। এটি ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন তারপর ঠান্ডা জলের স্প্ল্যাশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার চেষ্টা করুন। কিছুক্ষণ পরে, আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার ত্বকে কী ধরণের জাদুর আভা এসেছে।

বাদাম তেল (স্কিন ময়শ্চারাইজিং)

আপনার ত্বক কি রুক্ষ এবং শুষ্ক তাহলে নিয়মিত বাদাম তেল দিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। এটি আপনার ত্বককে শুষ্ক হতে বাধা দেয়। বিশেষ করে শীতকালে এই তেল ওষুধের মতো কাজ করে। মেকআপ রিমুভার বা অপসারণ  হিসাবে বাদাম তেলের ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই এটি প্রাকৃতিক মেকআপ অপসারণকারী।

এই তেল মেকআপ দূর করতে খুবই উপকারী। কারণ এই তেল হালকা এবং আঠালো নয়। এই তেল ত্বকের ছিদ্রগুলোকে ভালোভাবে খুলে দেয় এবং মেকআপ পুরোপুরি পরিষ্কার করে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তাই এই তেলটি যেকোন ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।

এছাড়াও ঠোঁটের সুরক্ষাতে এই তেল অনেক উপকারী। ঠোঁটের যত মেয়ে তেল আপনি অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ঠোঁট অনেক ফাটে তারা নিয়মিত দুই ফোটা করে তেল ঠোঁটে মালিশ করবেন। এই অনেক আদ্রতা তাই আপনার ঠাট সমস্যা দূর করবে।

কিভাবে ত্বকের যত্নে বাদামের তেল ব্যবহার করবেন

ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের আমরা বিস্তারিতভাবে জানাবো অনেকে আছেন যারা ত্বকের চুলের অটুট এর বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তাদের এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা অনেক। তাই আপনারা যারা ভাবছেন কিভাবে তাদের সাথে বাদামের তেলের ব্যবহার করবেন তারা আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন।

আপনার ত্বকের যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে বাদামের তেল দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করে ভালো ফল পাবেন। আর এজন্য প্রতিদিন ঘুমানোর সময় মুখে পাঁচ মিনিট বাদামের তেল ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং ত্বক পরিষ্কার করে মুছুন। কয়েকদিন পর আপনার ত্বকের কতখানি উন্নতি হয়েছে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

চুলের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা

শুধু ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা আছে তা নয়। ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্নেও বাদাম তেলের উপকারিতা বহুগুণ। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন দূর করতে বাদামের তেল কাজ করে থাকে তেমনি আমাদের চুলের সমস্যা দূর করতেও বাদামের তেল দূর করতে বেশ কার্যকারী। চলুন তাহলে বাদামের তেল চুলের যত্নে কতটুকু উপকারী সে বিষয়ে জেনে নিই।

১। কাঠবাদামে ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে বিভিন্ন রকম ভিটামিনও আছে। এই ভিটামিনগুলো চুলের গোড়া থেকে পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে ভেতর থেকে শক্ত ও মজবুত করে।

২। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুল নরম, স্ট্রেইট ও সিল্কি রাখতে সাহায্য করে। খুশকির সমস্যা থেকে দ্রুত রেহাই পেতে চাইলে নিম তেলের সঙ্গে সমান অনুপাতে বাদাম তেল নিয়ে রাতে ভালো করে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করে নিন। এরপর সকালে ভালো করে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৩। ঘুমানোর আগে শুধু বাদাম তেল আঙুলের ডগায় নিয়ে মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। এতে মৃত কোষ ও খুশকি নরম হবে। সকালে শ্যাম্পু করলে নরম হয়ে যাওয়া খুশকি, মৃতকোষ ও ময়লা ধুয়ে মাথার ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে।

৪। ১টি ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ বাদাম তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর গরম পানিতে একটি তোয়ালে ডুবিয়ে পানি চিপে শুকিয়ে নিন। কিন্তু তোয়ালেতে যেন গরম ভাপ থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এরপর সেই তোয়ালে পুরো মাথায় ভালো করে পেঁচিয়ে নিন। এভাবে ৪ থেকে ৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে অন্তত এক দিন এ মিশ্রণ ব্যবহারে নতুন চুল গজাবে এবং চুল পড়া কমে আসবে। 

৫। চুল পড়া কমাতে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন মাথার ত্বকে ভালো করে বাদাম তেল ম্যাসাজ করুন।

৬। এই তেলের সঙ্গে নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল, মেথির গুঁড়া মিশিয়ে ভালোভাবে মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিলে চুলের গোড়া শক্ত হবে এবং চুল বড় হবে।

৭। উপরে উল্লেখিত নিয়ম গুলো সঠিক উপায়ে ব্যবহার করলে আপনার চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে চুল হবে ঝলমলে উজ্জ্বল মসৃণ।

ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতাঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে ত্বকের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা, বাদাম তেলের উপকারিতা, ত্বক সাদা করার জন্য বাদাম তেল, কিভাবে ত্বকের যত্নে বাদামের তেল ব্যবহার করবেন? চুলের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আমরা অনেকেই বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখি না। তবে এটি ব্যবহার করার আগে অবশ্যই আমাদেরকে উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মাথা ভারী হলে করণীয় - মাথা ভারী লাগার কারণ

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেলে প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url