কোন কিছু পাওয়ার আমল - দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আমরা কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। আপনি যদি কোন কিছু পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিছু আমল করতে হবে এবং কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।

কোন কিছু পাওয়ার আমল

তাই কথা না বাড়িয়ে চলুন কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকি। কোন কিছু পাওয়ার আমল জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ কোন কিছু পাওয়ার আমল - দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল

সুখবর পাওয়ার দোয়া

মানুষের জীবনে প্রায় সময় সুখ দুঃখ লেগেই থাকে, আর সুখ দুঃখ নিয়ে মানুষের জীবন সংসার তৈরি হয়ে থাকে। মানুষের যখন সুখ আসে তখন মানুষ সুখের সাগরে ভেসে থাকে এবং দুনিয়ার ও আখেরাতের সব কিছু ভুলে যায় এবং যখন একটি মানুষের জীবনে দুঃখ নেমে আসে তখন সে আল্লাহকে স্মরণ করে। কিন্তু এটা কখনো করার উচিত নয়।

আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তায়ালার হুকুম মানার জন্যই এবং অনেক কিছু নেয়ামত আল্লাহ দান করেছেন সেগুলোর শুকরিয়া আদায় করার জন্য। কিন্তু আল্লাহ তাআলার নিয়ামতগুলোর জন্য আমরা শুকরিয়া আদায় করি না এবং আমাদের কাছে কোন সুসংবাদ এলেও আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি না। আপনার জীবনে যদি দুঃখ নেমে আসে বা সুখ আসে তাহলে এ দুটি সময়ে বিশেষ করে আল্লাহর শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ নেক সন্তান লাভের দোয়া - নেক সন্তান লাভের আমল

আপনার জীবনে যদি কোন আনন্দের মুহূর্ত আসে তবে অবশ্যই আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে। ঠিক তেমনি দুঃখের সময়ও আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে। আপনি যদি কোন কিছু পেতে চান তার জন্য আপনাকে এমন কিছু আমল করতে হবে যে আমলগুলো করে আপনি উপকৃত হতে পারেন। তাই কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে আপনাকে সবসময় অবগত থাকতে হবে।

আমল করা ছাড়া কখনই ভালো কোন আশা পূরণ হয় না। কোন কিছু পাওয়ার আমল যদি আপনি সঠিক নিয়মে করতে পারেন এবং সেটি যদি আপনি পেয়ে যান তাহলে অবশ্যই আপনার জন্য সেটি একটি সুসংবাদ হবে আর এ সুসংবাদে অবশ্যই আপনাকে কিছু দোয়া পড়তে হবে তাই চলুন আমরা সুসংবাদ পাওয়ার দেওয়া সম্পর্কে জেনে নিন।

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي بِنِعْمَتِهِ تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ

উচ্চারণঃ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাযি বিনিমাতিহি তাতিম্মুস সালিহাত।

অর্থঃ সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যার নেয়ামতের মাধ্যমে ভালো কাজগুলো সম্পন্ন হয়।

আপনার জীবনে যদি কোন সুখবর আসে তাহলে অবশ্যই আপনি আল্লাহর শরণাপন্ন হয়ে এই দোয়াটি পাঠ করবেন এতে আল্লাহ তা'আলা আপনার উপর খুশি হবেন।

কোন কোন দোয়া পড়লে মনের আশা পূরণ হয়

কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল আপনাদের জন্য আমরা বিশেষ কিছু দোয়া সম্পর্কে জানাবো। এই দোয়াগুলো আমল করলে আপনি বিশেষভাবে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় এবং সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবেন। মানুষের জীবনে চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই আল্লাহ তাআলার অফুরন্ত ভান্ডারের ও কোন কমতি নেই।

আল্লাহ তাআলার কাছে তার বান্দা যত চাইবে আল্লাহ তাআলা তত খুশি হয় এবং যদি কেউ আল্লাহ তাআলার কাছে না চায় তাহলে আল্লাহ তায়ালা নারাজ হয়। তাই প্রত্যেক বান্দার উচিত সবসময় আল্লাহতালার কাছে দোয়া করা। বা মনের আশা পূরণের জন্য আল্লাহতালার কাছে কিছু চাওয়া। প্রতিটা মানুষই চায় তার মনের সকল আশা ইচ্ছে গুলো পূর্ণতা পাক।

তাই কোন কোন দোয়া পড়লে মনের আশা পূরণ হয় এ বিষয়ে আমাদের সকলকে জানতে হবে। কারন আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য দোয়া নাযিল করেছেন আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য এবং এই দোয়াগুলোতে এমন ফজিলত রয়েছে যা মুখে উচ্চারণ করলে এবং আমল করলে আল্লাহ তা'আলা তার সকল মনের আশা গুলো পূরণ করবে।

সালাতুল হাজাত আরবি শব্দ। সালাত মানে নামাজ আর হাজাত মানে হলো প্রয়োজন। অর্থাৎ সালাতুল হাজাত মানে হলো প্রয়োজনের নামাজ। মানুষের প্রয়োজনে তাগীদে সালাতুল হাজাত নামাজ আল্লাহ তাআলা পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিপদে পড়লে আল্লাহ তায়ালা তার সকল আশা গুলো পূরণ করবেন এ নামাজের অসিলায়। বিশেষ কিছুর প্রয়োজন হলে কিংবা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দিলে বা ইচ্ছা পূরণের জন্য যে বিশেষ নামাজ পড়তে হয় তাকেই সালাতুল হাজাত বা ‘প্রয়োজনের নামাজ বলা হয়।

সালাতুল হাজাত অনান্য নামাজের মতই এটি একটি নফল নামাজ। শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বে মনের নেক ইচ্ছের বিষয়টির কথা নিয়তের মধ্যে এনে নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করবেন।

اَللَّهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ-

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রববানা আ-তিনা ফিদ্দুন্ইয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আ-খেরাতে হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা আযা-বান্না-র।

অর্থঃ হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দিন ও আখেরাতে মঙ্গল দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব হ’তে রক্ষা করুন।

সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া যায়। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ

অর্থঃ হে ইমানদাররা, তোমরা স্বীয় প্রভুর নিকটে ছবর ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবে’ নিশ্চই আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন।(সূরা-বাক্বারাহঃ ২/১৫৩)।

হযরত হুযায়ফা (রাঃ) বলেন,

كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا حَزَبَهُ أَمْرٌ صَلَّى

অর্থঃ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন ছালাতে রত হ’তেন’।( আবুদাঊদ হা/১৩১৯ ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-৩১২; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৭০৩; ঐ, মিশকাত হা/১৩১৫)।

কেউ যদি দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে তার কোনো আশা পূর্ণ হবে (ইনশাআল্লাহ)। তাই সকলেরই উচিত দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা। আপনি যদি দুই রাকাত নফল নামাজ এই নিয়মে পালন করেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আপনার মনের সকল আশা গুলো পূর্ণ করবে তাহলে দুই রাকাত নফল নামাজের নিয়মটা কি তা জেনে নিন।

নিয়মঃ নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার সঙ্গে দশবার সূরা কাফেরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে দশবার সুরা ইখলাস পাঠ করে নামাজ শেষ করতে হবে এবং নামাজ শেষে সালাম ফিরাইবার পর পূণরায় একটি সিজদায় গিয়ে যে কোনো দরুদ দশবার পাঠ করবে এবং উপরোক্ত দুয়াটি ১০ বার পাঠ করিবে। এতে আপনি এক, তিনি, সাত দিনের মধ্যে আপনার মনের আশা পূরণ হবে।

এছাড়াও ইসমে আজম এর মাধ্যমে আল্লাহতালা আপনার মনের আশা গুলো পূরণ করবে। ইসমে আজমের নানা ফজিলত রয়েছে। ইসমে আজম মানে আল্লাহর গুণবাচক নাম। এ নাম গুলো স্মরণ করলে এবং আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা আমাদের মনের আশা গুলো পূরণ করে থাকে।

দোয়া কবুলে ইসমে আজম গুরুত্বপূর্ণ এক আমল। ‘ইসম’ শব্দের অর্থ নাম। ‘আজম’ শব্দের অর্থ মহান বা শ্রেষ্ঠ। পুরো ইসমে আজম অর্থ মহান-শ্রেষ্ঠ নাম। মহান আল্লাহ তাআলার অনেক নাম রয়েছে। বিভিন্ন হাদিসে ৯৯টি নামের কথা এসেছে। সে নামগুলোর রয়েছে অসংখ্য ফজিলত যা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুল (সা.) এর সঙ্গে বসা ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি নামাজ আদায় করে এই বলে দোয়া করল, ‘আল্লাহুম্মা লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল মান্নান, বাদিয়ুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।’ নবী (সা.) বলেন, এই ব্যক্তি ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে, যে নামে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নামে তার কাছে চাওয়া হলে তিনি দান করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৯৫)

আসমা বিন ইয়াজিদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ইসমে আজম এই দুটি আয়াতের মধ্যে নিহিত। সুরা বাকারার ৩৬৩ নম্বর আয়াত এবং সুরা আল ইমরানের ১ নম্বর আয়াত।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৪৯৬)

আপনারা যারা ইসমে আজম দ্বারা আপনাদের মনের আশা গুলো পূরণ করতে চান তারা কোরআনের মাধ্যমে এই আয়াতগুলো সম্পর্কে জেনে আমল করতে পারেন। এ আমল দ্বারা আল্লাহতালা অবশ্যই আপনার মনের সকল আশা পূরণ করবে।

কোন কিছু হারালে খুঁজে পাওয়ার দোয়া

কোন কিছু পেতে গেলে অবশ্যই আপনাকে কোন কিছু পাওয়ার আমল অবশ্যই করতে হবে। কারণ আমল ছাড়া এবং আল্লাহর আদেশ ছাড়া কোন কিছু পাওয়া সম্ভব নয়। আর যদি কোন ব্যক্তি কোন কিছু পাওয়ার জন্য আমল করে থাকে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা তার আমলগুলো কবুল করে তাকে তার মনের আশা পূরণ এবং সকল চাওয়া গুলো পূরণ করে থাকেন।

মুসলমানের জন্য প্রত্যেকটা দিনই আল্লাহ তালার মনোনীত দিন এ দিনগুলোতে বান্দার উচিত বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে পার করা। মানুষের জীবনে বিভিন্ন রকমের চাওয়া পাওয়া সুখ দুঃখ লেগে রয়েছে তাই প্রতিনিয়ত আল্লাহকে স্মরণ করা উচিত। যেন আল্লাহ আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে।

নিত্যদিনের প্রয়োজনে আমাদের অনেক কিছু হারিয়ে থাকে এবং সে হারানো জিনিস ফিরে পেতে আমরা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকি, কিন্তু হারানো জিনিস খুঁজে পেতে আল্লাহ তাআলা বিশেষ কিছু দোয়া নাযিল করেছেন । যে দোয়া গুলো আমল করলে আপনি হারানো জিনিস এবং চুরি খুঁজে পাবেন। তাই কোন কিছু হারালে খুঁজে পাওয়ার দোয়া সম্পর্কে জেনে নিন।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘কারো কোনো কিছু হারিয়ে গেলে সে যেন অজু করার পর‌ দুই রাকাত নামাজ আদায় করে এবং তাশাহুদ পড়ার পর নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করে-

بسم الله يا هادي الضلال وراد الضالة اردد علي ضالتي بعزتك وسلطانك فإنها من عطائك وفضلك

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি ইয়া হাদিয়াদ দ্বালাল, ওয়া রা-দ্দাদ দ্বাল্লাহ; উরদুদ আলাইয়া দ্বাল্লাতি, বিইজ্জাতিক ওয়া সুলতানিকা; ফাইন্নাহা মিন আত্বায়িকা ও ফাদ্বলিক।

অর্থঃ আল্লাহর নামে শুরু। হে হারানো জিনিসের সন্ধানদাতা, হারানো বস্তু প্রত্যাবর্তনকারী; আপনার সম্মান ও ক্ষমতার উসিলা দিয়ে প্রার্থনা করছি, আপনি আমাকে আমার হারানো জিনিসটি ফিরিয়ে দিন। এটি আপনার দান এবং অনুগ্রহ।

এ হাদিসের ওপর বিশ্বস্ততার সাথে আমল করতে পারেন। কেননা মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা আল বাকারা, হাদিস : ৪৫)

আর হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসুল (সা.) যেকোনো বিপদাপদে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।

সুতরাং উক্ত দোয়াটি আমার হলে আপনার চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পেতে সাহায্য করবে মহান আল্লাহতালা।

দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল

মুসলমানরা কোন কিছু পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে থাকে কারণ এটা মুসলমানদের স্বভাবজনিত বিষয়। দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল সম্পর্কে যারা জানতে চায় তাদের জন্য বলব আপনারা দোয়া করার সময় বেশ কিছু বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখবেন কারণ দোয়া কবুলের জন্য এ বিষয়গুলো অতি জরুরী।

আরো পড়ুনঃ আল্লাহর গায়েবী সাহায্য পাওয়ার আমল

দোয়া তো আমরা সকলেই করি কিন্তু আমাদের সকলের দোয়া কি আল্লাহতালা কবুল করেন নিশ্চয়ই নয়। অনেকেরই দোয়া আবার তাড়াতাড়ি কবুল হয় এবং অনেকের দোয়া আল্লাহ তায়ালা দেরিতে কবুল করে থাকেন, এবং আল্লাহতালা আবার অনেকের দোয়া কবুল ও করেন না।

দ্রুত দোয়া কবুলের আমল সম্পর্কে আজকে আপনাদের জানাবো এই আমলটি করলে অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা আপনার দ্রুত দোয়া কবুল করবেন। দোয়া কবুলের কয়েকটি শর্ত রয়েছে যা আলমেরা মত প্রকাশ করেছেন।

পবিত্রতা অর্জনঃ পবিত্রতাকে আল্লাহ তা'আলা পছন্দ করেন।পবিত্রতা অর্জনের পর দোয়া করলে আল্লাহতায়ালা সেই দোয়া কবুল করবেন।

বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা: আল্লাহতালার কাছে কিছু চাইতে হলে অবশ্যই বিনয়ের সঙ্গে দু’হাত তুলে দোয়া চাইতে হবে।হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালার নিকট হাত তুলে হাতের তালু সামনে রেখে দোয়া কর। হাত উল্টো করো না।দোয়ার শেষে উত্তোলিত হাত মুখমন্ডলে বুলিয়ে নাও। {আবু দাউদ}

বিনীত কণ্ঠে দোয়া করাঃ আমাদের সকলেরই উচিত আল্লাহ তাআলার কাছে বিনীত কন্ঠে দোয়া করা।নম্রতার সঙ্গে দোয়া করলে তা ইবাদত হিসেবে গন্য হয়। রাসূলে মকবুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া সব ইবাদতের মজ্জা ও সারাংশ।’ দাসত্বের পরিচয় প্রদানই ইবাদতের উদ্দেশ্য।

বান্দার নিজের দীনতা ও অক্ষমতা বুঝতে পারা এবং আল্লাহ তায়ালা সমস্ত কিছুর মালিক এটা বিশ্বাস রাখে আল্লাহর কাছে নত হওয়া, এর মধ্যেই একটি বান্দার দাসত্বের প্রকাশ ঘটে। দোয়ার মাধ্যমে এ দু’টি বিষয়ের পরিচয় পাওয়া যায়। অর্থাৎ নিজের অক্ষমতা ও অসহায়ত্ব এবং আল্লাহর অপ্রতিহত ক্ষমতা, অপার মহিমা ও প্রতাপ অন্তরে স্থান পাওয়া আবশ্যক। দীনতা ও নম্রতা দোয়ার মধ্যে যত অধিক হবে ততই মঙ্গল।

দু’হাত তুলে দোয়া করা: বিনয়, নম্রতা ও দাসত্ব প্রকাশ করার জন্য দোয়ার সময় দু’হাতের তালু আসমানের দিকে রাখতে হবে এবং হাত সম্পূর্ণ সম্প্রসারিত করে দু’হাতের মধ্যে ২/১ আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁক রাখতে হবে। হাত কচলানো, রশি পাকানোর মতো হাতের তালু করা যাবে না। দোয়া শেষে হাত দু’টি মুখমন্ডলে মুছে নিবে।

দোয়া শেষে দুহাত ঘষাঘষি কখনোই করবেন না। আপনি মহান আল্লাহ তাআলার কাছে দুহাত তুলেছেন তাই আপনার মনের সকল চাওয়া পাওয়া গুলো দুহাত ধরে নেওয়ার আশা করবেন।হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, ‘যে হাত আল্লাহর দরবারে উত্তোলিত হয়, তা একেবারে শূণ্য অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন।

আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরীফসহ দোয়া করা : আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরীফসহ দোয়া করা। এছাড়া ইসমে আজমের সহিত দোয়া করা উত্তম। হজরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ইসমে আজম এই আয়াতদ্বয়ে রয়েছে।

এক হাদিসে এসেছে হজরত রাসূলে মাকবুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দোয়া করার পূর্বে দরুদ শরীফ পড়ে, তার দোয়া অবশ্যই কবুল হয়

আপনি যদি এই নিয়মে আল্লাহ তালার কাছে দোয়া করেন তাহলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই আপনার দোয়াগুলো দ্রুত কবুল করবে।

সবচেয়ে দামি দোয়া

ইসলামে আল্লাহর জিকিরের গুরুত্ব অপরিসীম। জিকিরকে বলা হয় সব ইবাদতের রুহ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বারবার জিকিরের কথা বলা হয়েছে। এবং কোরআনের কারীমে এমন বিশেষ কিছু দোয়ার কথা আল্লাহতালা বলেছেন যে দোয়াগুলো সবচেয়ে দামি এবং এ দোয়াগুলো কবুলের হাদিস রয়েছে।

কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের আমরা বিভিন্ন দোয়া সম্পর্কে জানাবো। যে দোয়া গুলো সম্পর্কে জেনে আপনি আল্লাহ তায়ালার আমল করে অশ্লীল সওয়াব হাসিল করতে পারবেন এবং এমন কিছু দোয়া রয়েছে যেগুলো সবচেয়ে দামি দোয়া বলে আখ্যায়িত রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত প্রথম দোয়াটি হলো- আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব আলাইহিস সালামের। তার দোয়াটি ছিলো-

أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ

উচ্চারণঃ আন্নী মাচ্ছানিয়াজ্জুররু ওয়া আনতা আরহামুর রাহিমীন।

অর্থঃ (হে আমার প্রতিপালক!) আমাকে দুঃখ-ক্লেশ (ব্যাধি) স্পর্শ করেছে, আর তুমি তো (দয়ালুদের মধ্যে) শ্রেষ্ঠ দয়ালু। {সূরা আম্বিয়া: ৮৩}

এই দোয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার (সেই) আহবানে সাড়া দিলাম এবং তার দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিলাম এবং তার পরিবরাবর্গ ফিরিয়ে দিলাম, আর তাদের সঙ্গে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশতঃ আর এটা ইবাদতকারীদের জন্যে উপদেশস্বরূপ।

দ্বিতীয় এই দোয়াটি ছিল আল্লাহর নবী হজরত ইউনুস আলাইহিস সালামের। ওই দোয়াটি হলো-

لَّا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ 

উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন। (সূরা আম্বিয়া আয়াত ৮৮)

অর্থঃ তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ আমি গোনাহগার। -সূরা আম্বিয়া : ৮৮

এই দোয়া বর্ণনার পর আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার (সেই) আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনিভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি। {সূরা আম্বিয়া : ৮৮}

তৃতীয় দোয়াটি হলো হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের। বরকতময় এই দোয়ার দু’টি অংশ পবিত্র কোরআনের ভিন্ন দুই জায়গায় বর্ণিত হয়েছে।

رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ

উচ্চারণঃ রাব্বী লা তাযারনী ফারদান ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসীন।  

অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা! আমাকে একা রেখো না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিস। {সূরা আম্বিয়া : ৮৯}

এই দোয়া কবুল হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার স্ত্রীকে প্রসবযোগ্য করেছিলাম। {সূরা আম্বিয়াঃ ৯০}

প্রথম দোয়াটি রোগমুক্তির জন্য, দ্বিতীয়টি বিপদমুক্তির জন্য আর তৃতীয় দোয়াটি হলো- সন্তানলাভের জন্য।

এছাড়াও এমন অনেক দোয়া আছে যে দোয়া গুলো রাত জেগে করলে আল্লাহ তাআলা কবুল করে থাকেন। কারণ নবী করীম সাঃ বলেছেন যদি তোমাদের মধ্যে কেউ রাত জেগে আল্লাহতালার ইবাদত করে তবে সে ইবাদত আল্লাহ তায়ালা দ্রুত কবুল করেন। এবং যদি কোন ব্যক্তি রাত জেগে উত্তম রূপে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহ তা'আলা তার নামাজ এবং এবাদত দুইটাই কবুল করে। আপনাদের এমন একটি দোয়া জানাবো যে দোয়াটি সবচেয়ে দামি।

দোয়াটি হলো- لا إلهَ إلاَّ اللَّه وحْدهُ لاَ شَرِيكَ لهُ، لَهُ المُلْكُ، ولَهُ الحمْدُ، وَهُو عَلَى كُلِّ شَيءٍ قَدِيرٌ - سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ للهِ، وَلَا إلَهَ إلّا اللهُ، وَاللهُ أكْبَر - وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إلَّا بِالله

উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার; ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।

অনুবাদঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁর জন্যই সকল রাজত্ব ও তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা এবং তিনিই সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। মহা পবিত্র আল্লাহ। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন ক্ষমতা নেই কোন শক্তি আল্লাহ ব্যতীত’।

অতপর বলবে "রাব্বিগফিরলি" অর্থাৎ হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন।

আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া

কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্ক যেমন জানতে হবে তেমনি সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে কিছু দোয়া সম্পর্ক আমাদের জানা জরুরি। কারণ বিপদ-আপদ আমাদের জীবনে সব সময় লেগেই থাকে এবং বিপদ আপদ গুলো আল্লাহ তায়ালা অনেক সময় পরীক্ষা এবং আমাদের কর্মের ফল হিসেবে দিয়ে থাকে।

তাই বিপদ থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে অবশ্যই কিছু দোয়া জানতে হবে যে দোয়া গুলো আমাদের সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে তাই কুরআনুল কারীমে আল্লাহতালা এমন কিছু দোয়া নাযিল করেছেন যে দোয়াগুলো আমরা আমল করলে বিপদ থেকে রক্ষা পাবো।

رَّبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَل لِّي مِن لَّدُنكَ سُلْطَانًا نَّصِيرًا

উচ্চারণঃ রাব্বি আদখিলনি মুদখালা সিদকিও ওয়া আখরিঝনি মুখরাঝা সিদকিও ওয়াঝআললি মিল্লাদুংকা সুলত্বানান নাসিরা।

অর্থঃ হে আমার প্রভু! আমাকে যেখানে প্রবেশ করাবেন, কল্যাণের সঙ্গে প্রবেশ করাবেন। আর যেখান থেকে বের করবেন (তাও) কল্যাণের সঙ্গে বের করবেন। আর আমাকে আপনার কাছে এমন বিশেষ ক্ষমতা দান করবেন, যার সঙ্গে (আপনার) সাহায্য থাকবে।' (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৮০)

কুরআনুল কারীমের এই আয়াতটি যদি আপনি আবেগম সরে আল্লাহকে ডেকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা আপনাকে সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে।

কোন কিছু পাওয়ার আমল - দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমলঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে সুখবর পাওয়ার দোয়া, কোন কোন দোয়া পড়লে মনের আশা পূরণ হয়, কোন কিছু হারালে খুঁজে পাওয়ার দোয়া, দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল, সবচেয়ে দামি দোয়া, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া, কোন কিছু পাওয়ার আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আরো পড়ুনঃ আল্লাহর উপর ভরসা করার দোয়া - আল্লাহর উপর ভরসা

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url