রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি কারণ এটি রমজান মাস তাই রমজান মাসে অনেকেই বিভিন্ন কাজে লিপ্ত থাকেন। বিশ্বাস করে অনেকেই রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এই বিষয়ে জানতে চাই তাই আপনাদের জন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এ বিষয়ে আলোচনা করব

রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

আপনারা যারা রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেলটা সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

সূচিপত্রঃ রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

রোজার গুরুত্ব

রমযনের রোযা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। ঈমান, নামায ও যাকাতের পরই রোযার স্থান। রোযার আরবি শব্দ সওম, যার আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। আজকের আর্টিকেলে আমরা রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এ বিষয়ে আপনাদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব।

আরো পড়ুনঃ রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব

তার আগে আমাদের রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে জানা জরুরী কারণ একজন মুসলমানের রোজার গুরুত্ব না জানলে সেটি সঠিকভাবে আমল করতে পারবে না তাই অবশ্যই আমাদের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানা জরুরী।

প্রত্যেক নেক আমলের নির্ধারিত সওয়াব ও প্রতিদান রয়েছে, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমলকারীকে পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু রোযার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ রোযার বিষয়ে আছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এক অনন্য ঘোষণা।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

(তরজমা) হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার।{সূরা বাকারাঃ ১৮৩}

রোজাদার ব্যক্তির উদ্দেশ্যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এরশাদ করেছেন,

"জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি দরজা আছে, এ দরজা দিয়ে কেবল কিয়ামতের দিন রোজাদার লোকেরা পার হতে পারবে এবং ঘোষণা দেওয়া হবে রোজাদার ব্যক্তিরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে এবং তাদের প্রবেশের পর রায়হান নামক দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।"

তাই আমাদের প্রত্যেক মুসলমান প্রাপ্ত নর-নারীর উচিত রমজান মাসে সঠিক ভাবে সিয়াম পালন করা। সিয়ামের মাধ্যমে একজন মুসলমান আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে। রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক যা আমরা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছি তাই আসুন রমজান মাসে আমরা গুরুত্বতার সাথে রোজা পালন করি এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে ওই বাধা তার মাধ্যমে জীবনকে খাঁটি ঈমানদার মুসলিম হিসেবে করি আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দান করেন (আমিন)।

রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

পবিত্র রমজান মাস হল আত্মশুদ্ধি মাস এবং ইবাদতের মাস এই মাসে আল্লাহর রহমত অশেষ ধারায় বর্ষণ হতে থাকে প্রত্যেক মুসলিম উম্মাহর উপরে। তাই এ মাসে আমাদের সকলেরই উচিত খারাপ এবং অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এ বিষয়ে আপনাদের মাঝে কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি যা আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের সামনে আলোচনা করব।

 বর্তমান সময়ে ফেসবুক চালানো একটি নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট কিংবা বড় সবাই ফেসবুক চালাচ্ছেন। কিন্তু রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এই বিষয়ে জানতে হলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো-মন্দ দিক রয়েছে ফেসবুকের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমন।facebook যেমন ভালো খবর পাওয়া যায় তেমনি কিছু অশ্লীল ভিডিও আজেবাজে ছবি রয়েছে। যা facebook চালানোর মাধ্যমে যখন তখন আপনার চোখে পড়তে পারে। এবং আপনার রোজা ভঙ্গের কারণ হতে পারে। তাই আপনি যত সম্ভব রোজা অবস্থায় ফেসবুক থেকে বিরত থাকুন। ফেসবুক চালানোর ক্ষেত্রে আপনার রোজা ভঙ্গের সম্ভাবনাই বেশি রয়েছে।

তাই আসুন আমরা পবিত্র মাহে রমজানের এ একটি মাস ফেসবুক চালানো থেকে বিরত থাকি। এবং রমজান মাসে সঠিক আমল করে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি। (আমিন)

রোজা অবস্থায় কোন কাজ গুলো থেকে বিরত থাকতে হবে

আজকের এ আর্টিকেলে আমরা রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এই বিষয়ে ইতিমধ্যে আপনাদের সামনে শেয়ার করেছি। কারণ পবিত্র রমজান মাসে রোজা আমাদের সকলের উপর ফরজ করেছেন তাই অতি গুরুত্ব তার সাথে আমাদের রমজান মাসে সিয়াম পালন করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ রোজা অবস্থায় চুল দাড়ি কাটা যাবে কিনা

তাই রোজা অবস্থায় কোন কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে এ বিষয়ে সকলের জানা জরুরী কারণ রোজা অবস্থায় বিভিন্ন কারণে আমাদের রোজা ভঙ্গ হতে পারে। তাহলে চলুন রোজা অবস্থায় কোন কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে সে সম্পর্কে জেনে নিন।

অশ্লীল কাজ কর্ম

রমজান মাসে আমরা যত সম্ভব অশ্লীল কাজকর্ম থেকে বিরত থাকব কারণ অশ্লীল কাজকর্ম করার মাধ্যমে আমাদের রোজা ভঙ্গ হয়ে যেতে পারে তাই যত সম্ভব আমরা অশ্লীল কাজকর্ম থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করব।

মিথ্যা গীবত করা

শুধু মাসে নয় আমরা চেষ্টা করব বাকি মাস গুলো তে মিথ্যা গীবত করা থেকে বিরত থাকতে। রোজা ভঙ্গের একটি কারণ হলো মিথ্যা গীবত করা। যিনি মিথ্যা গীবত করবেন আর যিনি শুনবেন তারা দুজনেই সমান অপরাধী তাই আমরা এসব কাজ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করব।

অন্যায় আচরণ

সাওম বা রোজা পালন আমরা শুধু মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করি। অশ্লীল কাজে নিজেকে জড়িয়ে রোজার রাখার মর্যাদা অনেকটাই বিনষ্ট হয়। তাই রোজা রেখে অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। তাই কোন ব্যক্তি যদি ঝগড়া করতে আসে তাহলে সে ওই ব্যক্তিকে বলবে আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় রোজা আছি।

অশ্লীল কথা-বার্তা

রোজা রেখে অশ্লীলতা তথা গানবাদ্য বাজনা থেকে নিজেদের শ্রবণ শক্তিকে বিরত রাখা। রোজা রেখে পরনিন্দা, অন্যায় ওমন্দ আচরণ যেমন গোনাহের কাজ, তেমনি অশ্লীল কথাবার্তা তথা গান-বাদ্যবাজনাও গুরুত্বর অপরাধ। তাই আমাদের উচিত রোজা অবস্থায় এসব কাজ থেকে বিরত রাখা।

কৃদৃষ্টি

চলা-ফেরাসহ সবসময় নিজেদের দৃষ্টির হেফাজত করা জরুরি। কারো কুদৃষ্টি দেয়া থেকে বিরত থাকা। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শয়তানের তীরসমূহের মধ্যে মানুষের দৃষ্টি শক্তিও একটি। যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে এ তীর বিদ্ধ হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে প্রচেষ্টা করে, আল্লাহ তার হৃদয়ে ঈমানের এমন এক দৃষ্টি শক্তি দান করেন, যাতে সেই ব্যীক্ত মজা ও স্বাদ অনুভব করতে পারে। তাই আমাদের উচিত শুধু রমজান নয় বাকি মাসগুলো তো আমাদের দৃষ্টি সংযত রাখা।

রোজা ভঙ্গের কারণ কি

রমজানের রোজা মুসলমানের জন্য ফরজ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা এ ইবাদতকে যুগে যুগে সব জাতির ওপরই ফরজ করেছিলেন। আর এ রোজার মাধ্যমেই মানুষ তাকওয়াবান হবে। কিন্তু এ রমজান মাসে রোজা ভাঙ্গার বিভিন্ন কারণ রয়েছে যা আমাদের তাকওয়া অর্জনের বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা এ বিষয়ে আপনাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি সাজিয়েছি যা আপনারা ইতিমধ্যে আমাদের আর্টিকেলটি করে জানতে পেরেছেন। এখন রোজা ভঙ্গের কারণ কি সে সম্পর্ক জেনে নিন।

১। ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার গ্রহণ করলে।

২। স্ত্রীর সাথে সহবাস করলেহাদিসটি সহিহ বুখারি (১৯৩৬) ও সহিহ মুসলিমে (১১১১) এসেছে]

৩। ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলেসুনানে তিরমিজি (৭২০), আলবানি সহিহ তিরমিজি গ্রন্থে (৫৭৭) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত

৪। শরীরের যে কোন অংশ কেটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে।

৫। রোজা অবস্থায় নেশা দ্রব্য পান করলে।

৬। রোজা অবস্থায় অশ্লীল কাজকর্মে লিপ্ত হলে।

৭। রোজা অবস্থায় বাদ্যযন্ত্র ও গান-বাজনা শুনলে।

আরো পড়ুনঃ রমজানের প্রস্তুতি কিভাবে নেব

৮। রোজা অবস্থায় হস্তমৈথুন করলে।

৯। রোজা অবস্থায় মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে।

১০। রাত মনে করে শুভ সাদিক পর্যন্ত সেহরি করা।

১১। মলদ্বারের ভেতর কোন তরল পদার্থ ঢুকালে।

১২। রোজা অবস্থায় খরকুটা ধুলাবালি গলার মধ্যে পৌঁছে গেলে।

১৩। অসুস্থ রোগীর ইনসুলিন বা স্যালাইন ও গ্লুকোজ এর মাধ্যমে খাদ্যের প্রবেশ করানো।

রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনাঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা? এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা রোজার সময় অনেকেই ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে থাকি। আমাদের অবসর সময়টুকু আমরা ফেসবুকে কাটিয়ে দেই। কিন্তু রোজা রাখা অবস্থায় কি ফেসবুক চালানো যাবে এ বিষয়ে অবশ্যই আমাদের জানা উচিত। আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে বক্তব্য বিষয়টি জানতে পারবেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সঠিকভাবে রোজা পালন করার জন্য উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিন বিস্তারিতভাবে। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url