চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - চিড়া খাওয়ার নিয়ম

আশা করি সকলেই ভাল আছেন চিড়িয়া খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানে না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জানাতে এসেছি।

চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

চিড়িয়া খাওয়ার উপকারিতা জানতে হলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটির সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন ঝটপট চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জেনে নেই।

সূচিপত্রঃ চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - চিড়া খাওয়ার নিয়ম

চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

চিড়া এক ধরনের বিশেষ খাবার যা আমরা গরমের সময় বিকেলের নাস্তায় আমচিড়া বা দই চিড়া খেয়ে থাকে। এছাড়া বিভিন্নভাবে চিড়া রেসিপি করে খাওয়া যায়। চিড়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক। অনেকেই চিড়া খেতে পছন্দ করেন কিন্তু চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না। চিড়া একটি উপকারী খাবার যা আমাদের দেহের বিভিন্ন রোগ গুলো ধ্বংস করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

১। কিডনি রোগীদের জন্য চইড়আ একটি বিশেষ উপকারী খাবার। চিড়াতে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ কম রয়েছে। যার জন্য আমাদের কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

২। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে যা ডায়রিয়া ক্রন’স ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস, অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

৩। সিলিয়াক ডিডিজের রোগীদের জন্য চিড়া খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। চালের প্রোটিন প্রোলামিন এবং গ্লুটেলিনের শোষণে কোন সমস্যা না থাকার জন্য এই রোগীদের জন্য চিড়া গ্রহণ করা নিরাপদ।

চিড়া খাওয়ার নিয়ম

চিড়া অনেকেই খেতে পছন্দ করেন চিড়া একটি পুষ্টিকর খাবার হিসেবে গণ্য। চিড়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক। চিড়া ভাজা , শুকনো বা ভেজানো সব অবস্থাতেই খাওয়া যায়। আপনি বিভিন্নভাবেই চিড়া খেতে পারবেন অনেকে আম চিরা দুধ চিড়া দই চিড়া কলাচিড়া যে যা রুচিসম্মত ভাবে খেয়ে থাকে।

প্রতিবছর গরমের সময় চিড়া খাওয়ার ধুম পড়ে যায় কারণ চিড়া আমাদের পেটকে ঠান্ডা রাখে এবং পেটের নানা সমস্যা দূর করে থাকে। সকালের নাস্তা কিংবা বিকেলের নাস্তা হিসেবে আপনি চিড়া যেকোনো ভাবে খেতে পারবেন।

তবে শীতের সময় চিড়া খাওয়া থেকে সাবধানতা অবলম্বন করবেন কারণ শিরা শীতের সময় খেলে আপনার ঠান্ডা লাগার সমস্যা তৈরি হতে পারে তাই আপনি শুকনোভাবে চিড়ার রেসিপি তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

বাচ্চাদের জন্য চিড়ার উপকারিতা

বাচ্চাদের জন্য চিড়ার উপকারিতা অনেক। বাচ্চাদের আপনি চিঁড়ের পোলাও করেও খাওয়াতে পারেন। চিড়া শিশুদের পেটকে ঠান্ডা রাখে এবং ভালো ঘুম দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে এবং ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

চিড়ার পোলাও রেসিপিটি খাদ্যের ৪ টি মৌলিক খাদ্যের শ্রেণী দিয়ে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি খাবার। এই রেসিপিতে চিড়া ব্যবহৃত হয়েছে যা শস্যজাত খাবার। এটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উৎস। এছাড়া এতে রয়েছে ডিম যা আমাদের শক্তি, আমিষ এবং খনিজ লবণ সরবরাহ করে ও আমাদের দেহের কোষকলা গঠন করে।

এছাড়াও ‘চিড়ার পোলাও’ এ বিভিন্ন ধরনের সবজি ব্যবহৃ হয়েছে যা থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং আঁশ। রান্নায় ব্যবহৃত হয়েছে তেল যা শক্তির ভালো উৎস, খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি করে এবং তেলে দ্রবনীয় ভিটামিনের শোষনকে বৃদ্ধি করে (যেমনঃ গাজর হতে প্রাপ্ত বিটা ক্যারোটিন)।

চিঁড়ের পোলাও প্রস্তুত প্রণালীঃ

১। চিড়া ভালোমত পরিষ্কার করে ধুয়ে ফুটানো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ভালোমত পানি ঝরিয়ে নিন।

২। সব শাকসব্জী এবং পেঁয়াজ ভালোমত ধুয়ে কেটে নিন।

৩। একটি রান্নার পাত্রে তেল গরম করুন, তেল গরম হলে এতে পেঁয়াজ কুচি ছেড়ে দিন।

৪। পেঁয়াজ সামান্য বাদামী হলে সবজিগুলো ঢেলে দিন। কিছুক্ষণ নাড়া চাড়া করুন। স্বাদ অনুযায়ী লবণ যোগ করুন। সবজি রান্না হওয়ার জন্য পাত্রটি ঢেকে দিন।

আরো পড়ুনঃ করমচা খাওয়ার উপকারিতা

৫। সবজি ভালোমত সিদ্ধ হয়ে গেলে এতে একটি ডিম ভালোমত ফেটে ঢেলে দিন। দ্রুত নাড়তে থাকুন যাতে ডিম ভালোভাবে সবজির সাথে মিশে যায়।

৬। পানি ঝাড়ানো চিড়াগুলো এতে দিয়ে দিন। ভালো মত নাড়াচাড়া করুন যাতে সব উপকরণ একসাথে মিশে যায়।

৭। অল্পআঁচে কিছুক্ষণ (৫ মিনিট) রান্না করুন। চিড়ার পোলাও পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।

৮। বয়সসীমা: ৯-১১ মাস এবং ১২-২৩ মাস। বাচ্চাদের জন্য উত্তম পুষ্টিকর খাবার।

চিড়া খাওয়ার অপকারিতা

চিড়া একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হলেও এ রয়েছে বিশেষ কিছু অপকারিতা। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ভাবে রোগাক্রান্ত করতে পারে। তাই চিড়া খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি চিড়া খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্ক আমাদের সচেতন হতে হবে।

১। আপনি যদি অনিয়মিতভাবে চিড়া খান এবং আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তাহলে সেটি বৃদ্ধি পাবে। তাই নিয়ম মেনে চিড়া খান এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখুন।

২। যাদের এজমা এবং ঠান্ডার সমস্যা রয়েছে তারা ভেজানো চিড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। ঘন ঘন ভেজা চিড়া খেলে আপনার ঠান্ডা লাগার সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

৩। অতিরিক্ত চিড়া খেলে শরীরে সিরাম ‌‌ ট্রাইগ্লিসারাইড এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এবং এতে করে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।

৪। ছিরাতে রয়েছে উচ্চ পরিমান শর্করা ও গ্লাইসেমিক । তাই এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার দেহের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে।

দই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

পুষ্টি বৃদ্ধির মতে জুড়ে একটি উপকারী ও পুষ্টি গুন সম্মত খাবার এ গ্রীষ্মের সময় সকলেই দইচরে খেতে অনেকেই পছন্দ করেন।দই-চিড়া খেলে পেট ঠান্ডা থাকে। এ কারণে অনেক স্বাস্থ্য সচেতনরাই ইফতারে দই-চিড়া খেয়ে থাকেন। চিড়িয়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক যারা সঠিক নিয়ম মেনে চিরাখান তারা এর পুষ্টি পেয়ে থাকেন।

পুষ্টিবিদদের মতে, চিড়ায় পটাশিয়াম ও সোডিয়াম কম থাকে। তাই কিডনি রোগীরা চিড়া খেতে পারেন। সিলিয়াক ডিজিজের রোগীদের জন্যও চিড়া খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। এ ছাড়াও দইয়ে থাকে প্রোবায়োটিক। যা অন্ত্রে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।

চিড়া পেট ঠাণ্ডা করে, পানির অভাব পূরণ করে এবং একইসঙ্গে ক্ষুধাও মেটায়। দই-চিড়া এমন একটি খাবার, যা দ্রুত হজম হয়। ইফতারে এ খাবারটি খেলে শরীর নানাভাবে উপকৃত হয়ে থাকে। এছাড়াও গরমের সময় আপনি বিকালের নাস্তা এবং সকালের নাস্তায় দড়ি ছুঁড়ে খেয়ে উপকার পাবেন।

পদ্ধতিঃ

১। প্রথমে পরিমাণ মতো চিড়া নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এবং পানি দিয়ে পাঁচ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।

২। এরপর এতে টক দই পরিমাণ মতো এবং মিষ্টি বেশি খেতে চাইলে পরিমাণমতো চিনি নিয়ে মিশিয়ে নিন।

৩। পুষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে চাইলে চিড়া ও দই এর উপরে পাকা কলা গোল গোল করে কেটে সাজিয়ে রাখুন প্রস্তুত হয়ে গেল দই চিড়ে এবং কলার রেসিপি যা খেয়ে আপনি তৃপ্তি পাবেন।এবং অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ গুণ পাবেন।

চিড়ার পুষ্টিগুণ

চিড়া খেতে আমরা সকলেই পছন্দ করি। চিড়া যেমন পেটকে শান্তি রাখে তেমনি বিভিন্ন রোগ দমন করে থাকে। চিড়ার পুষ্টিগুণ অধিক যারা চিড়া খাওয়ার উপকারিতা পেতে চান এবং চিড়ার সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন।

আরো পড়ুনঃ আমের বিচির ১১টি উপকারিতা ও গুনাগুন

চিড়ার পুষ্টিগুণ বেশ চমৎকার। চলুন জেনে নেয়া যাক প্রতি ১০০ গ্রাম চিড়ায় কি কি উপাদান রয়েছে। এতে আছে ৩৪৬ ক্যালরি, ৬.৬ গ্রাম আমিষ, ৭৭.৩ গ্রাম শর্করা, ২.০২ মিলিগ্রাম লোহা, ২৩৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস রয়েছে। তাই এই গরমে আজ থেকে নিয়মিত ভাবে চিড়া খাওয়া শুরু করুন এবং আপনার শরীর সুস্থ রাখুন।

চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - চিড়া খাওয়ার নিয়মঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চিড়া খাওয়ার উপকারিতা, চিড়া খাওয়ার নিয়ম, বাচ্চাদের জন্য চিড়ার উপকারিতা, চিড়া খাওয়ার অপকারিতা, কলা চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি চিড়া সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনি এই আর্টিকেলে সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ এরকম আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন