করমচা খাওয়ার উপকারিতা

আশা করি সকলেই সুস্থ আছেন। আর আপনাদের সুস্থ থাকার জন্য আমরা এত কষ্ট করে আপনাদের জন্য প্রতিদিন নতুন নতুন পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানিয়ে থাকি। আজকের এই আর্টিকেলে করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চলেছি। অনেকেই ভাবছেন করমচা খাওয়ার উপকারিতা আছে নাকি?

করমচা খাওয়ার উপকারিতা

অবশ্যই আছে তাই আমরা করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাবো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে ঝটপট করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ করমচা খাওয়ার উপকারিতা

করমচা খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের দেশে কম পরিচিত একটি ফল যার নাম করমচা। এটি একটি টক স্বাদ যুক্ত ফল। এই ফলটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকে এই করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না। তাই অনেকেই বাজারে দেখতে পেয়েও এ ফল টিকে এড়িয়ে যান।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। যারা করমচা চিনেন কিন্তু করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
  • প্রদাহ কামায়
  • হজম শক্তি ভালো রাখে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর 
  • রোগ প্রতিরোধ করে 
  • চোখের সমস্যা দূর করে 
  • মাড়ির ক্ষয় রোধ
  • ডায়াবেটিস 
  • ত্বকের সুরক্ষা 
  • শরীরের নানা রোগ দূর

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে - করমচাতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ম্যাগনেসিয়াম। এর সঙ্গে রয়েছে ট্রাইটোফেন নামক একটি উপাদান। এটি স্নায়ুর উন্নতি করতে সাহায্য করে। করমচা খেলে বাড়ে সেরোটোনিন নামক হরমোনের ক্ষরণ কমে। আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখে।

প্রদাহ কামায় - শরীরে নানা কারণেই প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে। এটি দূর করতে কাজ করে করমচা। করমচায় রয়েছে প্রদাহ কমানোর কয়েকটি প্রয়োজনীয় উপাদান।আপনি যদি নিয়মিত করমচা খান তবে তা আপনার শরীরের প্রদাহ দূর করবে। 

হজম শক্তি ভালো রাখে - দেহ মনকে সুস্থ রাখতে অবশ্যই হজম শক্তি থাকা জরুরী। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করবে করমচা।কারণ উপকারী এই ফলে আছে পেক্টিন নামক একটি উপাদান। যা করমচার মধ্যে বিদ্যমান। পেটের নানা সমস্যা দূর করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর - আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারবে করমচা। এই ফলে আছে পর্যাপ্ত ফাইবার। তাই করমচা খেলে খুব সহজে পেট পরিষ্কার হয়। নিয়মিত করমচা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে সময় লাগে না। তাই আপনি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় করমচা রাখতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ করে - করমচায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করার কার্যকরী উপকারিতা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে।

চোখের সমস্যা দূর করে - করমচায় রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখে নানা সমস্যা দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।

মাড়ির ক্ষয় রোধ - করমচায় রয়েছে বিশেষ পুষ্টিগুণ এবং রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমাদের মাড়ি রক্ত পড়া এবং মাড়ির ক্ষয় রোধ এবং দাঁতের নানা সমস্যা দূর করে থাকে।

ডায়াবেটিস - যারা ডায়াবেটিস সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন ৩ থেকে ৪টি করে করম চা খাবেন এতে করে আপনার ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

ত্বকের সুরক্ষা - যারা ত্বকের সুরক্ষা করতে চান এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান তারা নিয়মিত গরম চা খেতে পারেন।

শরীরের নানা রোগ দূর - করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষা দেয়। শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও সাহায্য করে। যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধে আছে বিশেষ ভূমিকা। মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাশিতে করমচা খান বেশি করে। করমচা কখনো কৃমিনাশক হিসেবে ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

করমচা খাওয়ার নিয়ম

আমাদের সকলের কাছে কম পরিচিত একটি ফল করমচা। কিন্তু অনেকেই এই ফলটি সঠিকভাবে চেনেন না এবং করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না। তাদের জন্য ইতিমধ্যে আমরা করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছি। যারা করমচা খেয়ে উপকারিতা পেতে চান তারা অবশ্যই করমচা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইছেন।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা মরিচ খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা

করমচা আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন এটি খাওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় কিংবা নিয়ম নেই। আপনি চাইলে সবজির সাথে রান্না করেও করমচা খেতে পারেন এবং করম যার মোরব্বা এবং আচার করো খেতে পারেন। অনেকেই দেখা যায় করমচার জুস খেতেও বেশ পছন্দ করে। তাই করমচা প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ পেতে হলে আপনি যেকোনো ভাবেই করমচা খেতে পারেন।

গর্ভবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না করমচা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। গর্ভবস্থায় আপনি করমচা খেয়ে উপকার পেতে পারেন।

১। গর্ভাবস্থায় করমচা ইউরিন ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে। বাইরের বিভিন্ন দেশগুলোতে গর্ভাবস্থায় পেশাবের ইউরিন ইনফেকশন কমাতে ক্র্যানবেরির জুস খেতে বলা হয়ে থাকে। এই ক্র্যানবেরি কাজ করে থাকে করমচা জুস।

২। এছাড়াও আপনার খাবারের রুচি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে করন যা।

৩। গর্ভাবস্থায় আপনার রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৪। করমচা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ক্ষতিকারক শতরাগ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে।

করমচার পুষ্টিগুণ

যারা আমাদের এই আজকের আর্টিকেলটি পড়ে করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন তারা নিশ্চয়ই করমচার পুষ্টিগুণ সম্পর্ক জানতে চান করমচায় রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ও পুষ্টিগুণ। করমচা গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে দেখা যায়। এ ফলটি দেখতে কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে লাল হয়ে থাকে এবং এর স্বাদ টক মিষ্টি।

প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় শর্করা রয়েছে ১৪ গ্রাম, প্রোটিন-০.৫ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৪০ আইইউ, ভিটামিন-সি ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন ০.১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, কপার ০.২ মিলিগ্রাম ও পটাশিয়াম ২৬০ মিলিগ্রাম। যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি তাদের ক্ষেত্রে করমচা না খাওয়াই ভালো। 

করমচা ফলের ছবি

আমরা অনেকেই করমচা ফল চিনি না যার ফলে করমচা ফলের ছবি দেখতে চাই। সাধারণত তাদের জন্য করমচা ফলের ছবি নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো।

করমচা খাওয়ার উপকারিতা
ছবিঃ উইকিপিডিয়া
করমচা খাওয়ার উপকারিতা

ছবিঃ যুগান্তর

করমচা খাওয়ার উপকারিতাঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা করমচা খাওয়ার উপকারিতা করমচা খাওয়ার নিয়ম, গর্ভবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা, করমচার পুষ্টিগুণ, করমচা ফলের ছবি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেহেতু এটি উপকারিতায় এর সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা উচিত।

আরো পড়ুনঃ নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন