আম খাওয়ার উপকারিতা

আম খেয়ে উপকারিতা পেতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন আজকের এই পোস্টে আমরা আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাবো। আমার খাওয়ার উপকারিতা অনেক, যা অনেকেই হয়তো জানেন না। তাহলে আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।

আম খাওয়ার উপকারিতা

সূচিপত্রঃ আম খাওয়ার উপকারিতা

আম খাওয়ার উপকারিতা

আম গ্রীষ্ম মৌসুমের একটি ফল এর ফল অত্যন্ত সুস্বাদু ও রসালো। আমি রয়েছি বহু উপকারিতা। যারা আম খেয়ে উপকারিতা পেতে চাই তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের কিছু কারণ হাজির করেছি।

আরো পড়ুনঃ নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা

আম খাওয়ার উপকারিতা-

  • ওজন কমাতে
  • ক্যানসার প্রতিরোধে আম
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখে
  • লাভ ফ্রুট
  • হজমে সহায়ক
  • স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
  • স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
  • ত্বকের যত্নে আম
  • হিট স্ট্রোক থেকে দূরে রাখে
  • অনিদ্রা দূর করে
  • চোখের যত্নে
  • অ্যালকালাইন ভারসাম্য

ওজন কমাতেঃ আমি রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগণ ও ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান আপনারা যারা ওজন কমানোর কথা চিন্তা করছেন তারা আম খেতে পারেন।

ক্যানসার প্রতিরোধে আমঃ ক্যান্সার প্রতিরোধে আম বিশেষভাবে কাজ করে থাকে।আমের রয়েছে নানা রকম অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। কোয়েরসেটিন, ফাইসেটিন, আইসোকোয়েরসেটিন, অ্যাস্ট্রাগ্যালিন, গ্যালিক অ্যাসিড, মিথাইল গ্যালেট ইত্যাদি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলো স্তন ক্যানসার থেকে শুরু করে কোলন ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসর ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই ক্যানসার প্রতিরোধে খেতে পারেন আম।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখেঃ আমে রয়েছে ভিটামিন সি, ফাইবার ও প্যাকটিন থাকায় রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রাখে রসাল আম।

লাভ ফ্রুটঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, আম খেলে হৃদয়ে ভালোবাসার জন্ম হয়। তাই এটাকে উন্নত বিশ্বে লাভ ফ্রুট বলে। সুতরাং মৌসুম থাকতেই প্রিয়জনকে বেশি বেশি আম উপহার দিন।

হজমে সহায়কঃ হজম প্রক্রিয়া সুস্থ রাখতে সাহায্য করে আম। আমে থাকা এনজাইমগুলো প্রোটিন উপাদান সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এতে খাবার হজম হয় দ্রুত, বাঁচা যায় পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকেও।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ আম আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করে। তাই যারা লেখাপড়া করছেন এবং স্মৃতিশক্তিতে সমস্যা তারা বেশি বেশি করে আম খেতে পারেন।

ত্বকের যত্নে আমঃ বডি স্ক্রাব হিসেবে পাকা আম বেশ ভালো কাজ করে। আমের পেস্ট তৈরি করে তাতে একটুখানি মধু আর দুধ মিশিয়ে নিন। আলতো করে ম্যাসাজ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

হিট স্ট্রোক থেকে দূরে রাখেঃ এই গরমে হিট স্ট্রোক সাধারণ ঘটনা। আম আমাদের ভেতরটা শীতল রাখে ও শরীরকে অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়। তাই এই গরমে শরীরকে শীতল রাখতে বেশি বেশি আম খান।

অনিদ্রা দূর করেঃ আমে আছে ট্রিপটোফ্যান, মেলাটোনিন, ও ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের ঘুমকে ত্বরান্বিত করে। অনিদ্রা দূর করে।

চোখের যত্নেঃ আমে বিভিন্ন ভিটামিন আমাদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া যারা ড্রাই আই সমস্যায় ভুগছেন, তারা আম খেয়ে উপকার পেতে পারেন।

অ্যালকালাইন ভারসাম্যঃ আমে রয়েছে টারটারিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড এবং সাইট্রিক অ্যাসিড। শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখে এটি।

কাঁচা আমের উপকারিতা

পাকা আম যেমন খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে তেমনি কাঁচা আমেরও কিছু উপকারিতা রয়েছে। অনেকেই কাঁচা আম বিভিন্নভাবে খেতে পছন্দ করেন কেউবা কাঁচা আমের মাখা খেতে পছন্দ করেন, কেউবা কাঁচা আমের শরবত খেয়ে থাকেন। কাঁচা আম দিয়ে বিভিন্ন রুচি সম্মত টক মিষ্টি আচার ও করে থাকেন। নিচে কিছু কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনে নেব।

১। কাঁচা আম মানবদেহের সোডিয়াম ক্লোরাইড ও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে থাকে এবং গরম থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে।

২। এছাড়া হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় কাঁচা আম। অতিরিক্ত রৌদ্রের তাপ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে কাঁচা আম।

৩। কাঁচা আম আপনার এসিডিটি, বদহজম ,কোষ্ঠকাঠিন্য, দূর করতে সাহায্য করে।

৪। কাঁচা আমের থাকা ভিটামিন সি ই এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।

৫। কাঁচা আমের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমাদের মুখের ক্ষত শুকাতে এবং মুখের নানা সমস্যা দূর করে থাকে। এছাড়াও কাঁচা আম স্কার্ভি মাড়ি থেকে রক্ত পাত কমাতে সাহায্য করে।

৬। কাঁচা আমের থাকা ভিটামিন এ চোখের সমস্যা দূর এবং কাঁচা আমি থাকার লুটেইন ওও জিয়াজ্যান্থিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের রেটিনার স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য খুবই উপকারী।

আমের প্রকারভেদ

আম একটি সুস্বাদু গ্রীষ্মকালীন ফল। বাংলাদেশের মানুষের কাছে সকলের পছন্দের। বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষেত্রেও আমের চাহিদা প্রচুর।পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম আছে। আমের প্রায় কয়েকশো জাত রয়েছে। আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকের জানতে পেরেছেন। আসুন আমের কিছু প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নিই।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা - রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার

আমের প্রায় কয়েকশ জাত রয়েছে। যেমনঃ ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসাপাত, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাঁচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপুরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি, লখনা, আদাইরা, কলাবতী আম রূপালি ইত্যাদি।

পাকা আমের পুষ্টিগুণ

আম আমাদের সবার অতি প্রিয় একটি ফল।আমাদের আশেপাশে হয়ত এমন মানুষ মনে হয়না যে খুঁজে পাওয়া যাবে, যে আম খেতে পছন্দ করে না। উপমহাদেশের সবচাইতে সুস্বাদু ফল হল আম। আম খাওয়ার উপকারিতা অনেক।পাকা আমের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আপনাদের আমরা জানাতে চলেছি।

পাকাআমে ক্যারোটিনের মাত্রা বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এতে ১.৩ গ্রাম আয়রণ, ১৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১৬ মি.গ্রা. ফসফরাস, ১৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ০.৯ মি.গ্রা. রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মি.গ্রা. থায়ামিন থাকে।

এছাড়াও পাকাআমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ০.১ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মি.গ্রা. বি-২ রয়েছে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। যেমন- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে। আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।

আম খাওয়ার সঠিক নিয়ম

আমি টি সুস্বাদু ও মজাদার ফল যা অনেকেই খেতে পছন্দ করেন। আম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। আম খাওয়ার উপকারিতা পেতে হলে, আম খাওয়ার সঠিক নিয়ম আমাদের সকলেরই জানতে হবে। আমি রয়েছে ভিটামিন সি ও আন্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

আমি রয়েছে বিটা ক্যারোটিন আলফা- ক্যারোটিন উপাদান যা আমাদের চোখের জন্য বেশ উপকারী। আমি থাকা পটাশিয়াম আমাদের হার্ট সুস্থ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। আমি রয়েছে ডায়েটরি ফাইবার যা আমাদের হজমের সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত আম খেলে আমাদের শরীরে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই আম খাওয়ার সঠিক নিয়ম আমাদের সকলের জানা জরুরি।

১। যারা ডায়াবেটিস রোগী রয়েছেন তাদের জন্য অতিরিক্ত আম খাওয়া মারাত্মক হতে পারে কারণ আমি রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা অতিরিক্ত থেকে বিরত থাকবেন।

২। আম জুস করে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ জুস করে আম খেলে আমের ফাইবার এবং পুষ্টির পরিমাণ কমে যায়। তাই পাকা আম টুকরো টুকরো করে কেটে খাওয়া উচিত।

৩। আম শরীরের ওজন যেমন কমাতে পারে তেমনি বাড়াতেও পারে তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিয়মিত অল্প পরিমাণে আম খান কারণ অতিরিক্ত আপনার শরীরের ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।

৪। আম পরিপূরক খাবারের কাজ করে তাই দুপুরে খাওয়ার পর কিংবা রাত্রে খাওয়ার পর আম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এই সময়গুলোতে আম খেলে আপনার পেট ভারী হয়ে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৫। আম পুরো এক খাবারের চাহিদা মিটিয়ে থাকে তাই এটি সকালে এবং বিকালে খাওয়া উচিত।

আম খাওয়ার অপকারিতা

আম খাওয়া যেমন কিছু উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা রয়েছে। আম খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে নিচে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

১। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা আম খাওয়া থেকে সতর্কতা অবলম্বন করবেন কারণ আমের রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি যা আমাদের ডায়াবেটিসের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে তাই ডায়াবেটিস রোগীরা আম খেলে পরিমিতভাবে আম খাবেন।

২। আম যেমন একদিকে ওজন কমায় তেমনি অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ আমি রয়েছে ফাইবার কম ও প্রাকৃতিক শর্করা এবং ক্যালারির পরিমান বেশি। যা আমাদের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

৩। কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা ইরিটেবল বায়েল সিড্রোম (আই বিএস ) বাড়াতে পারে। এবং পচনতন্ত্রকে বিপদগ্রস্ত করে হজমে সমস্যা হতে পারে। 

৪। বিভিন্ন ধরনের আমে ফাইবার কম থাকি এবং বীজে ও খোসায় ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। যার কারনে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে না এবং হজম সমস্যায় ব্যাঘাত ঘটে। যাদের শরীরে এলার্জির সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্য আম ক্ষতিকর হতে পারে। কারন আমি প্রোটিন ল্যাটেক্সের মতো উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি করতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url