ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়

বিশ্বব্যাপী যত রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে তার ১৮.১% রোগী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।আজকের এই পোস্টে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় সহ ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কিত বেশ কিছু বিষয় যেমন ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ, ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয়, ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা, ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা বাংলাদেশ , ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ-২ ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করব।

তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই, ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ, ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয়, ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয় গুলি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়

ব্রেস্ট ক্যান্সার কি 

আমরা জানি প্রতিটি জীব অসংখ্য কোষ এর সমন্বয়ে গঠিত। মানবদেহের কোষগুলো সাধারণ নিয়মে বিকশিত হয়। একইভাবে ব্রেস্ট এর কোষগুলো ধীরে ধীরে বিকশিত হয় কিন্তু ব্রেস্টের কোষগুলো যখন অস্বাভাবিক গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে  তখন ওই অনিয়মিত ও অতিরিক্ত কোষগুলো বিভাজনের মাধ্যমে টিউমার বা পিন্ডে পরিণত হয়। সেখান থেকেই ক্যান্সার উৎপন্ন হয় এবং ধীরে ধীরে রক্তনালীর মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ

ব্রেস্ট ক্যানসার বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেনেটিক বা বংশগত কারণে আবার হরমোন এর কারণে হতে পারে।আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের খারাপ অভ্যাস এর কারনে ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে। ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • অনেকেই আছেন যারা সবুজ শাকসবজি খান না। দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাট যুক্ত খাবার এবং বাইরের ফাস্টফুড খেয়ে থাকেন। অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়া ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলোর মধ্যে একটি।
  • অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া বা একেবারেই শারীরিক পরিশ্রম না করে এমন ব্যক্তির ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে।
  • অনেকেই আছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাচ্ছেন বা হরমোনের ইনজেকশন নিচ্ছেন, তারাও ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
  • ব্রেস্টের আকার অনুযায়ী সঠিক মাপের ব্রা ব্যবহার করা উচিত। তাছাড়া এটি আপনার ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকখানি। স্তনের আকারের চেয়ে বড় মাপের ব্রা স্তনের টিস্যুগুলোকে ঠিকমত সাপোর্ট দিতে পারে না আবার অতিরিক্ত ছোট বা টাইট ব্রা স্তনের তরলবাহী লসিকাগুলো কেটে ফেলতে পারে।
  • রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা নিয়ে থাকলে এটিও ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে।
  • জেনেটিক কিছু কারণ রয়েছে এর ফলে মানুষ ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। বিআরসিএ১, বিআরসিএ২ নামের জিনের মিউটেশন ৫% থেকে ১০% ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলো কি কি।

ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয়

ব্রেস্ট ক্যান্সার ছেলে ও মেয়ে উভয়ের হতে পারে। তবে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার মেয়েদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায়। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণা রূপা মজুমদার বলেন, আমাদের দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক মেয়ে লজ্জা করে তা কারো কাছে শেয়ার করতে চাই না। আবার ডাক্তারের কাছে যেতে চাই না। এর ফলে অসুখ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে এটা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। এজন্যই আমরা বলে থাকি, ‘আর্লি ডিটেকশন সেভস লাইফ’। ক্যান্সার মানেই যে মরণব্যাধী এ রকমটা মনে করার কিছু নেই। তবে সেটা সম্পূর্ণ নিরাময় করার জন্যে অবশ্যই স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং ধাপে ধাপে এটার সম্পূর্ণ চিকিৎসাটা নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি মাছ খাওয়া যাবে জেনে নিন।

এছাড়াও তিনি আরো  পরামর্শ দিয়েছেন, যাদের পরিবারে ব্রেস্ট ক্যান্সার এর ইতিহাস রয়েছে, সেসব পরিবারের সদস্যদের ৩০ বছর বয়স থেকেই ব্রেস্ট স্ক্রিনিং এর আওতায় আসতে হবে। এবং সেসব পরিবারের সদস্যদের ব্রেস্ট ক্যান্সার এর ইতিহাস নেই সেক্ষেত্রে, ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী নারীদের প্রতি তিনবছর পর পর ব্রেস্ট স্ক্রিনিং  করানো উচিত। ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাম হচ্ছে এক্স-রে’র মাধ্যমে নারীদের স্তনের অবস্থা পরীক্ষা করা।

এছাড়াও স্তনে চাকা হলে নিপল দিয়ে রসজাতীয় পদার্থ বের হয় বা নিপলের ভিতরে ঢুকে গেলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয় কি।

ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় | ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ

ব্রেস্ট ক্যান্সার সাধারণ দুই কারণে হয়ে থাকে। প্রথমটি জেনেটিক্যালি বা বংশগত কারণ এবং দ্বিতীয় টি আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। আমরা চাইলেই আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন কে পরিবর্তন করে কিছু নিয়ম মেনে চললে এবং কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধী খাবারের মাধ্যমে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি। আমাদের আগে জানতে হবে ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলো কি কি যা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমরা এখন দেখে নেব ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় গুলো।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুনঃ স্থূলতা বা ওজন অন্যান্য রোগের পাশাপাশি ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না এবং ফ্যাট যুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ এ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই।গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারীরা নিয়মিত ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম বা ইয়োগা করেন তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ২৫-৪৫% কমে যায়। তাই প্রতিদিন সময় করে অবশ্যই ৩০ মিনিট যেকোনো ধরনের শারীরিক ব্যায়াম ব্যায়াম করা জরুরি। আর সেটাও সম্ভব না হলে প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন।

ফাস্টফুড পরিহার করুনঃ দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়া, বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং ফাস্টফুড খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর একই সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই সবাইকে অবশ্যই বাইরের ফাস্টফুড পরিহার করতে হবে।

ধূমপান এবং অ্যালকোহল পরিহার করুনঃ যে সব নারীদের ধূমপান করা বা অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস আছে তাদেরকে ধূমপান এবং অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।

সবুজ শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করুনঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাবারের সাথে সবুজ শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমাতে ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবারের ভূমিকা অনেক বেশি।তাজা ফল, মটরশুঁটি, ফ্ল্যাভনয়েড, আস্ত শস্য এবং ব্রোকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ সবজিগুলো খেতে হবে।

ব্রেস্ট পরীক্ষাঃ আপনার বয়স ৩০ বছরের বেশি হলে প্রতি এক বছর অন্তর অন্তর ডাক্তারের কাছে গিয়ে ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাম  করাতে হবে। 

রেডিয়েশন থেকে দূরে থাকাঃ রেডিয়েশন ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম। বংশে কারো যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়ে থাকে এবং রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা নিয়ে থাকলে এটি ডাক্তার কে জানাতে হবে।

সন্তান নেওয়াই সর্তকতাঃ নারীদের ৩০ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করতে হবে এবং ৩০ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম সন্তান নিতে হবে। না হলে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট ঃ অনেক সময় খাবারে পরিমিত পুষ্টি, ভিটামিন ও মিনারেল নাও পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। যা আপনার স্তন ক্যান্সার সহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

উপরিউক্ত ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় গুলো মেনে চললে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা

আমরা এখন আলোচনা করব ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে। চলুন প্রথমে জেনে নেই,

ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি

  • যেহেতু ব্রেস্ট ক্যান্সার ব্রেস্ট এর মধ্যে টিউমার থেকে সৃষ্টি হয় তাই ব্রেস্টে চাকা বা পিণ্ড অনুভব হয়।
  • ব্রেস্টের  আকার পরিবর্তন হতে দেখা যায়। কখনো কখনো চ্যাপ্টা হয়ে যায় বা সেপ পরিবর্তন হতে দেখা যায়।
  • কখনো কখনো গলার কাছে অথবা বগলে চাকা অনুভব হয়।
  • স্তনের বোটা ভেতরের দিকে ঢুকে যায়।
  • স্তনের উপরের ত্বক খসখসে হয়ে। কখনো কখনো চামড়া কুঁচকে যায় আবার কমলার খোসার মতো শক্ত হয়ে যায়।
  • একটি নির্দিষ্ট সময় পর স্তনে ব্যথা অনুভব হয়।
  • নিপল (বোঁটা) দিয়ে রস নিঃসরণ হয় বা রক্তপাত হয়।

উপরিউক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ রইল।

আমরা এখন আলোচনা করব ব্রেস্ট ক্যান্সার এর চিকিৎসা নিয়েঃ

ব্রেস্ট ক্যান্সারের বেশ কয়েক ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। তবে সবার আগে টেস্ট করাতে হবে যে আপনার ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়েছে কিনা।ব্রেস্ট ক্যান্সারের যে টেস্ট রয়েছে তার নাম ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাফি।ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাফি হচ্ছে এক্স-রে’র মাধ্যমে নারীদের স্তনের অবস্থা পরীক্ষা করা। এছাড়া আরো কয়েক ধরনের টেস্ট করাতে হয় এরমধ্যে বায়োপসি/ মাংস পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা ইত্যাদি। টেস্ট করে ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়লে তারপর চিকিৎসা শুরু করতে হয়।ব্রেস্ট ক্যান্সার এর চিকিৎসা গুলো হল।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাঃ টিউমার যদি প্রাথমিক বা ছোট অবস্থায় থাকে তাহলে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার ভালো করা সম্ভব যা উপর আলোচনা করা হয়েছে।

রেডিয়েশন থেরাপিঃ এই পদ্ধতিতে কোন ধরনের অপারেশন করতে হয় না।এই পদ্ধতিতে, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রেডিয়েশন রশ্মিগুলি ক্যান্সার কোষগুলিকে লক্ষ্যবস্তু ও মেরে ফেলার জন্য ব্যবহার করা হয়।এই পদ্ধতিটি সাধারণত একটি বড় মেশিন ব্যবহার করে সঞ্চালিত হয়।

কেমোথেরাপিঃ এটি এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কিছু বিশেষ মেডিসিন ব্যবহার করে ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয়।এই চিকিৎসা প্রায়ই ক্যান্সার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের সাথে ব্যবহৃত হয়।

হরমোন থেরাপিঃ হরমোন থেরাপি বা হরমোন-ব্লকিং থেরাপি স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যা হরমোনের প্রতি সংবেদনশীল।হরমোন থেরাপি ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন (মহিলা সেক্স হরমোন) উৎপাদন বা ক্যান্সার কোষের হরমোন রিসেপ্টরগুলিকে কিছু ওষুধ ব্যবহার করে ব্লক করতে সাহায্য করে।এটি ক্যান্সারের বৃদ্ধি ধীর বা বন্ধ করতে সাহায্য করে।

অস্ত্রোপচারঃ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টিউমারটি কে অপসারণ করা হয়। তবে উপরিউক্ত পদ্ধতি গুলো তে যদি স্তন ক্যান্সার ভালো করা সম্ভব হয় সেই ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার নিয়ে যাওয়া হয় না। অস্ত্রোপচার এর পর কেমোথেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ গুলো সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা হয়।

উপরে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছি। কেউ যদি ব্রেস্ট ক্যান্সারের উপরিউক্ত লক্ষণগুলো অনুভব করেন তাহলে অতিসত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার অনুরোধ রইল।

ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা বাংলাদেশ

উপরে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সার এর চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের দেশেও ব্রেস্ট ক্যান্সার এর জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে।বাংলাদেশে ক্যান্সার বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল আছে চারটি।বাংলাদেশ ক্যান্সার ইন্সটিটিউটসহ সরকারি বেসরকারি অনেক হাসপাতাল আছে যেগুলোতে ব্রেস্ট  ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে। তবে এর সংখ্যা খুবই সীমিত।

আরো পড়ুনঃ ব্রেস্ট ছোট করার ১০ টি প্রাকৃতিক উপায় জেনে নিন।

তবে কিছু বেসরকারি ও কিছু বড় সরকারি হাসপাতালে একটি করে ক্যান্সার ইউনিট থাকলেও বাংলাদেশে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা দেড়শ'র কম। তবে আমাদের দেশে পূর্বে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা না থাকলেও বর্তমানে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা হচ্ছে।

ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ-২

ব্রেস্ট ক্যান্সার এর মোট চারটি স্টেজ রয়েছে  স্টেজ ১, স্টেজ ২, স্টেজ ৩, স্টেজ ৪। এখন আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ-২ নিয়ে আলোচনা করব।

স্টেজ ১ এ টিউমার সাধারণত ২ সেন্টিমিটারের কম হয়, যা আশপাশের লসিকাগ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়ে না।

তবে ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ-২ এ টিউমার সাধারণত ২ থেকে ৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে থাকে, এবং ধীরে ধীরে তা বগলের লসিকাগ্রন্থি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিটি স্টেজের জন্য ভিন্ন রকম চিকিৎসা রয়েছে। ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ-২ এ থাকা অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা না নিলে তা ধীরে ধীরে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয়

এখন দেখে নেব ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয় নাকি হয়না। যে কোনো অসুখ প্রাথমিক স্টেজে ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব। ব্রেস্ট ক্যান্সার এর বাহিরে নয়। 

ব্রেস্ট ক্যান্সার এর চারটি স্টেজ রয়েছে  স্টেজ ১, স্টেজ ২, স্টেজ ৩, স্টেজ ৪। এরমধ্যে স্টেজ ১, স্টেজ ২ এ ক্যান্সার খুব বেশি ছড়াতে পারে না। এর ফলে অল্প সময়ে এবং অল্প খরচে এর চিকিৎসা করা সম্ভব। কিন্তু স্টেজ ৩, স্টেজ ৪ এ ক্যান্সার এর টিউমার এর সাইজ বড় হয়ে যাই এবং ক্যান্সার দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে চিকিৎসা ব্যয় অনেকটা বেড়ে যায়।

তবে বর্তমানে বেশ কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যেমনঃ অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন থেরাপি, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি এসব চিকিৎসা পদ্ধতি উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

উপযুক্ত সময় উপযুক্ত ব্রেস্ট ক্যান্সার এর চিকিৎসা নিলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ভালো হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয় নাকি হয়না।

শেষ কথাঃ | ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিভিন্ন বিষয়াবলী যেমন ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ, ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা, ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা বাংলাদেশ , ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ-২, ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয় ইত্যাদি আলোচনা করেছি।যেন আপনারা ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন এবং নিজেদেরকে সচেতন রাখতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার ৯ উপায় জেনে নিন।

পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জন ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে যেন তারা ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয় কি, ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা গুলো জানতে পারে খুব সহজেই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url