শীতকালে কুয়াশা কেন হয় - শীতকালে শিশির জমে কেন

শীতকালে শরীরের যত্ন নেওয়ার উপায়শীতকালে কুয়াশা কেন হয়? এ বিষয়ে আমাদের মনে অনেকেরই প্রশ্ন জাগে। শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল আমাদের সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে শীতকে নিয়ে রয়েছে বহু জল্পনা কল্পনা শীতের মৌসম আমাদের সকলের কাছে অধিক প্রিয়।

শীতকালে-কুয়াশা-কেন-হয়

শীতকালের কুয়াশা আমাদের সকলেরই মন করে কিন্তু শীতকালে কুয়াশা কেন হয় এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো অজানা। তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের শীতকালে কুয়াশা কেন হয় এ বিষয়ে জানাবো।

সূচিপত্রঃ শীতকালে কুয়াশা কেন হয় - শীতকালে শিশির জমে কেন

শীতকালে কুয়াশা কেন হয়

হেমন্তর শেষে ও কুয়াশার যেন আগাম শীতের বার্তা নিয়ে আসে। কিন্তু শীতকালে কুয়াশা কেন হয় এ বিষয়ে অনেকেরই অজানা। অনেকেই ছোট বাচ্চারা জিজ্ঞেস করে থাকে কুয়াশা শীতকালে কুয়াশা কেন হয় কিন্তু আমাদের অনেকের কাছে এটি অজানা। শীতের সকালের এবং পড়ন্ত বিকালে অনেক সময় আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে।

পরে হালকা কুয়াশা গুলো অনেক বেশি হয়ে পড়ে চারদিক ঘিরে ফেলে এবং একটু বেলা হলেই কুয়াশাগুলো কেটে যে চারিদিক স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শীতে শৈত্যপ্রবাহে অনেক ঠান্ডা নেমে আসে। শীতকালে এই কুয়াশা গুলো কি এবং শীতকালে কুয়াশা কেন হয় চলুন এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে ঘি খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুর স্তর শীতল থাকলে, বায়ুতে মিশে থাকা জলীয়বাষ্প ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয়। ভূ-পৃষ্ঠ রাতে দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়ে পড়লে, ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু স্তর ঠান্ডা ও আর্দ্র হয়। এবং কুয়াশা তৈরির উপযুক্ত অবস্থার সৃষ্টি করে এবং সমুদ্রের উপকূলভাগে, উষ্ণতর বায়ু, শীতল সমুদ্রের পনির সংস্পর্শে আসলেও কুয়াশার সৃষ্টি হয়ে থাকে।

শীতের কুয়াশা সৃষ্টি হওয়ার আরেকটির সংজ্ঞা হলো।পানি তিন অবস্থায় থাকতে পারে। কঠিন, তরল, বায়বীয়। শীতকালে বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্প ঠান্ডায় জমে বিন্দু বিন্দু পানির আকার ধারণ করে থাকে। এই পানির অণুগুলো জলীয় বাষ্পের চেয়ে ভারী হওয়ায় নিচে নেমে আসে যাকে বলা হয় কুয়াশা।

বিশ্বের কুয়াশাচ্ছন্ন দেশ

বিশ্বে কয়েকটি দেশ রয়েছে যেখানে বছরের প্রায় ২০০ দিনই কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের শুধু শীতকালে কুয়াশা দেখা যায়। কিন্তু এমন দেশ রয়েছে যেখানে বছরের বেশিরভাগ দিনেই কুয়াশায় ঢেকে থাকে।

বিশ্বের-কুয়াশাচ্ছন্ন-দেশ

পৃথিবীর সর্বাধিক কুয়াশাচ্ছন্ন স্থান হলো নিউফাউন্ডল্যান্ডের গ্রান্ড ব্যাংকস। যেখানে উত্তর দিক থেকে আসা শীতল প্রবাহ ও দক্ষিণ দিক থেকে আসা অপেক্ষাকৃত উষ্ণ গালফ প্রবাহ মিলিত হয়।সর্বাধিক কুয়াশাচ্ছন্ন ভূমি অঞ্চলের মধ্যে আছেঃ

  • পয়েন্ট রেয়স, 
  • ক্যালিফোর্নিয়া 
  • আর্জেন্টিনা, 
  • নিউফাউন্ডল্যান্ড 
  • লাব্রাডর

এদেশ গুলোতে বছরের ২০০ দিনই কুয়াশায় ঢাকা থাকে এসব স্থান। এছাড়াও শরৎ ও গ্রীষ্মের সময়ও উষ্ণ দক্ষিণ ইউরোপের নিম্নভূমি ও উপত্যকা অঞ্চলে ঘন কুয়াশা পড়ে থাকে।

শীতকালে শিশির জমে কেন

শীতকালে কুয়াশা কেন হয় এবং শীতকালে শিশির কেন জমে এ বিষয়ে আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন রয়েছে তাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে হলে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে আমাদের এই প্রতিবেদনটি পড়তে থাকুন। শীতকালে শিশির পড়বে বা কুয়াশাচ্ছন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক তবে শীতকালে শিশুর কেন জমে এটি আমরা অনেকেই খুব গুরুত্ব সহকারে ভাবি না।

কারণ এটি প্রাকৃতিক নিয়ম স্বাভাবিক তাপমাত্রার তরতর মাধ্যমে এটি ঘটে থাকে।একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। তাপমাত্রা বাড় ধারনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, পাশাপাশি তাপমাত্রা কমলে ধারনক্ষমতা হ্রাস পায়। 

সাধারণত সন্ধার পরে তাপমাত্রা কমে যায় এবং বাতাস জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে থাকে। যদি তাপমাত্রা আরো কমে যায়, তখন বাতাস আর জলীয় বাষ্প ধরে রাখতে পারে না এবং তা শীতল বস্তুর উপর পানির কণা হিসেবে জমা হয়। এ পানির বিন্দু শিশির বিন্দু নামে পরিচিত (যেমন, ঘাসের উপর শিশির বিন্দু জমা হয়।

শিশির দিনের যেকোনো সময় দেখা যায় না এটি সকালে এবং সন্ধ্যার সময় তাপমাত্রা তারতম্যের কারণে ঘাসের পাতায় জলীয় বাষ্পধারা সম্পৃক্ত হয়ে পানির কণা হিসেবে জমা হয়।

কুয়াশা ও শিশিরের মধ্যে পার্থক্য

কুয়াসা ও শিশির এক নয় কুয়াশা ও শিশিরের মধ্যে অবশ্যই কিছু পার্থক্য রয়েছে। চলুন তাহলে কুয়াশা ও শিশিরের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কুয়াশা-ও-শিশিরের-মধ্যে-পার্থক্য

শিশিরঃ

শিশির হল কোনো শীতল বস্তুর উপর জলীয় বাষ্প জমা হয়ে সৃষ্ট বিন্দু। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। তাপমাত্রা বাড়লে যেমন ধারনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি তাপমাত্রা কমলে ধারনক্ষমতা হ্রাস পায়। সাধারণত সন্ধার পরে তাপমাত্রা কমে যায় এবং বাতাস জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে থাকে।

যদি তাপমাত্রা অনেক কমে যায়, তখন বাতাস আর জলীয় বাষ্প ধরে রাখতে পারে না এবং তা শীতল বস্তুর উপর পানির কণা হিসেবে জমা হয়। এ পানির বিন্দু শিশির বিন্দু নামে পরিচিত যা আমরা ঘাসের উপর পানির ফোঁটা ফোঁটা লক্ষ্য করি তাই শিশির নামে পরিচিত।

কুয়াশাঃ

কুয়াশা হলো ভূমির সংস্পর্শে থাকা মেঘমালা। মেঘকেও আংশিকভাবে কুয়াশা বিবেচনা করা যায়, মেঘের যে অংশটুকু মাটির ওপরে বাতাসে ভাসমান থাকে তা কুয়াশা হিসেবে বিবেচিত নয়, তবে মেঘের ভূমির উঁচু অংশের সংস্পর্শে থাকা মেঘকে কুয়াশা বলা হয়। শীতের সময় তাপমাত্রা কম থাকে এবং মাটিতে থাকা আদ্রতা উপরে উঠে গিয়ে কুয়াশা তৈরি করে।

এছাড়া ‘অ্যাডভেকশন ফগ’ বা মাটির তুলনায় বাতাস উষ্ণ এবং আদ্রতা বেশি থাকার কারণে যে কুয়াশা তৈরি হয়ে ভেসে বেড়ায়। কুয়াশা সাধারণত রাতে তৈরি হয় যখন বায়ু এমন একটি স্থানে শীতল হয় যেখানে ঘনত্ব পৌঁছে যায়। এবং সেই কুয়াশায় সকালবেলায় আমরা দেখতে পাই। শীতের সময় সন্ধ্যায় ও সকালে কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ শীতে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

শিশির ও কুয়াশার মধ্যে পার্থক্যঃ

  • কুয়াশার ঘনত্ব বেশি। অন্যদিকে কুয়াশার থেকে শিশিরের ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম।
  • শিশির অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। জন্যদিকে কুয়াশা দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হয়।
  • শিশিরের দৃষ্টিপাত এক কিলোমিটারেরও বেশি সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে কুয়াশার দৃষ্টিপাত প্রায় এক কিলোমিটার সীমাবদ্ধ।
  • রাতের বেলায় কুয়াশা গঠন করে এবং সকালে ঘন মেঘের কাছাকাছি বা মাটির নিকটে উপস্থিত হয়। অন্যদিকে শিশির রাতে ফর্ম এবং সকালে পাতা, ঘাস, পাতাগুলি বা ধাতব উপরিভাগে ঘনীভবন হিসাবে উপস্থিত হয়।
  • কুয়াশা বোঝাচ্ছে একটি ঘন নিম্ন-নিচু মেঘ, যা পৃষ্ঠের স্তরে উপস্থিত হয়, যা ছোট জলের গ্লোবুলগুলি দিয়ে তৈরি হয়, যা বাতাসে স্থগিত থাকে। অন্যদিকে শিশির তাপমাত্রা বিপর্যয় বা আর্দ্রতার পরিবর্তনের কারণে স্থলভাগের স্থলভাগে বায়ুমণ্ডলে স্থলিত ছোট জলের ফোটা থেকে তৈরি মেঘকে অবিশ্বাস্য বোঝায়

আমাদের শেষ কথা

শীতকালে কুয়াশা কেন হয়? এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সাধারণত শীতকালে আমরা কুয়াশা দেখে থাকি বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে এই কুয়াশা বেশি দেখা যায়। কিন্তু কি কারনে এই কুয়াশাগুলো হয়ে থাকে আর কেনই বা শীতকালে শুধু দেখা যায়? অনেক প্রশ্ন শোনা যায়। যেহেতু আজকের এই আর্টিকেলে কুয়াশা নিয়ে আলোচনা করা হবে তাই বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে হবে। কারণ এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল সহ বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল আমরা আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url