জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি

প্রিয় ভিউয়ার্স আপনি নিশ্চয়ই জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে ভাবছেন? এবং জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করে আমাদের এই আর্টিকেলটি ওপেন করেছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।

জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি

মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি ও কি কি

জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করলে আপনার জন্ম নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মহিলারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে থাকেন। টিউবেকটমি বা লাইগেশন মেয়েদের স্থায়ী পদ্ধতি। আর অস্থায়ী পদ্ধতির মধ্যে ইমপ্ল্যান্ট ও আইউডি দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি।

অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

বাংলাদেশে অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অনেক মহিলারা ব্যবহার করে থাকেন। আজকের এয়ার্টিকালে আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণে সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। যারা অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

আরো পড়ুনঃ ল্যাপটপ দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায়

অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে নিজে আলোচনা করা হলো:-

১। কনডম

২। জরুরি গর্ভনিরোধক পিল

৩। ইনজেকশন

৪। খাবার বড়ি (পিল)

৫। ইমপ্ল্যান্ট

দীর্ঘমেয়াদি/ অস্থায়ী পদ্ধতি

৬। আইইউডি (কপারটি)

দীর্ঘমেয়াদি /অস্থায়ী পদ্ধতি

কনডম- কনডম একটি নিরাপদ এবং কার্যকর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে কনডম খুব কার্যকর একটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। এর ব্যবহার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ করে এবং যৌনবাহিত রোগের বিস্তার রোধ করে।

কাজঃ কনডম একটি প্রতিবন্ধক বস্তু হিসাবে কাজ করে। বীর্যপাতের পর শুক্রকীট কনডমের ভিতরে থেকে যায়। ফলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হতে পারেনা, যার ফলে গর্ভসঞ্চার হয় না।

জরুরি গর্ভনিরোধক পিল- জরুরি গর্ভনিরোধক খাবার পিল বা ইসিপি হলো এমন এক ধরনের পদ্ধতি যা অরক্ষিত বা অনিরাপদ সহবাসের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করলে গর্ভে সন্তান আসার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধে মহিলারা ইসিপি ব্যবহার করতে পারেন।

জরুরি গর্ভনিরোধক খাবার পিল বা ইসিপি পরিবার পরিকল্পনার কোনো নিয়মিত পদ্ধতি নয়। এটি শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। জরুরি গর্ভনিরোধক খাবার পিল বা ইসিপি গর্ভধারণ রোধ করে, কখনও গর্ভপাত ঘটাতে সাহায্য করে না।

কাজঃ

ডিম্বস্ফুটনে বাধা দেয়।

নিষিক্তক্রনে বাধা দেয়।

জরায়ুর এন্ডমেট্রিয়ামের পরিবর্তন করে নিষিক্ত ডিম্বাণুকে জরায়ুতে গ্রথিত হতে দেয় না।

-যাদের জন্য উপযোগী

১। কোনো নারী যদি ঝুঁকিপূর্ণ সহবাস করে কিন্তু গর্ভবতী হতে না চান, তবে তিনি সহবাসের ১২০ ঘণ্টার মধ্যে এই খাবার বড়ি খেতে পারবেন।

২। যদি কেউ পর পর ৩ দিন খাবার বড়ি খেতে ভুলে যান।

৩। সহবাসের সময় যারা পরিবার পরিকল্পনার কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করেন না।

৪। সাধারণত গর্ভধারণে সক্ষম সব নারীরা।

৫। যাদেরকে নিয়মিত খাবার বড়ি খেতে নিষেধ করা হয় তারাও এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।

 ইনজেকশন- গর্ভনিরোধক ইনজেকশন মহিলাদের জন্য তিন মাস মেয়াদি অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি। বাংলাদেশ জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিতে শুধুমাত্র প্রজেস্টোরেন সমৃদ্ধ ডিএমপিএ গর্ভনিরোধক ইনজেকশন প্রচলিত আছে ।

কাজ: জরায়ুর মুখে নিঃসৃত রসকে ঘন ও আঠালো করে যার ফলে শুক্রকীটকে জরায়ুতে প্রবেশে বাধা দেয়।

ডিম্বস্ফুটনে বাধা দেয়।

জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামকে গর্ভসঞ্চারের জন্য উপযোগী হতে দেয় না। এন্ডোমেট্রিয়ামের গ্ল্যান্ড এর সংখ্যা এবং আকার কমার ফলে এটি  হয়ে যায়।অত্যন্ত কার্যকরী ও নিরাপদ জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি।

গোপনীয়তা রক্ষা করা নেয়া যায়।

একটি ইনজেকশন তিন মাস পর্যন্ত গর্ভসঞ্চারে বাধা দান করে।

অস্থায়ী পদ্ধতি, কাজেই পদ্ধতি ছেড়ে দিয়ে অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় বা গর্ভধারণ করা যায়।

বুকের দুধের পরিমান ও গুনগত মানের উপর কোন প্রভাব ফেলে না। ফলে সন্তান জন্মদানের ৬ সপ্তাহ পরেই এটি ব্যবহার করা যায়।

খাবার বড়ি (পিল)- গর্ভনিরোধক খাবার বড়ি/পিল নিরাপদ ও কার্যকর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। বাংলাদেশে খাবার বড়ি সর্বাধিক ব্যবহৃত পদ্ধতি। বর্তমানে প্রচলিত মিশ্র খাবার বড়ির উপাদান হোল ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টোরেন হরমোন। মূলত ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে খাবার বড়ির প্রকার নির্ণয় করা হয়। এছাড়া শুধুমাত্র প্রজেস্টোরেন সমৃদ্ধ মিনিপিলও কার্যকর গর্ভনিরোধক বড়ি হিসাবে ব্যবহৃত।

কাজ: সারভিক্সের শ্লেষাকে ঘন করে শুক্রকীটকে জরায়ুতে প্রবেশে বাধা দেয়।

ডিম্বস্ফুটনে বাধা দেয়। স্বাভাবিক মাসিক চক্রের মাঝামাঝি সময়ে লিউটিনাইজিং হরমোন হঠাৎ বেড়ে যাবার ফলে ডিম্বস্ফুটন হয়। খাবার বড়ি লিউটিনাইজিং হরমোন হঠাৎ বেড়ে যাওয়াকে প্রতিহত করে ডিম্বস্ফুটন হতে দেয় না।

ডিম্ববাহী নালীর স্বাভাবিক নড়াচড়ার গতি কমিয়ে দেয়, ফলে শুক্রকীটের গতিও কমে যায়।

জরায়ুর ভিতরের ঝিল্লির বেড়ে যাওয়া রোধ করে, ফলে নিষিক্ত ডিম্ব জরায়ুতে গ্রথিত হবার মত কোনো পরিবেশ না পেয়ে গ্রথিত হতে পারে না।

ইমপ্ল্যান্ট

দীর্ঘমেয়াদি/ অস্থায়ী পদ্ধতি-

ইমপ্ল্যান্ট শুধুমাত্র প্রজেস্টোরেন হরমোন সমৃদ্ধ অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, যা মহিলাদের বাহুতে চামড়ার নিচে স্থাপন করা হয়। প্রকারভেদে ৩-৫ বছর মেয়াদি এই পদ্ধতির কার্যকারিতার সময় নির্ভর করে এর রডের সংখ্যা এবং হরমোনের ধরনের উপর।

ইমপ্ল্যান্ট প্লাস্টিক বা সিলিকন রাবারের তৈরি এক বা একাধিক ক্যাপসুল বিশিষ্ট ডিভাইস, যার ভিতরে কৃত্রিম প্রজেস্টোরেন হরমোন থাকে। চামড়ার নিচে স্থাপনের পরপর ক্যাপসুলের গায়ের অসংখ্য অনুবীক্ষণিক ছিদ্র দিয়ে নির্দিষ্ট মাত্রায় হরমোন নিঃসৃত হতে থাকে।

কাজ: ডিম্বস্ফুটন রোধ করে। ইমপ্ল্যানন পুরো ৩/৫ বছরই সম্পূর্ণরূপে ডিম্বস্ফুটন রোধ করে।

সারভিক্সের নিঃসরণের বা শ্লেষ্মার ঘনত্ব বাড়ায়।

এন্ডোমেট্রিয়াম এর পুরুত্ব কমিয়ে দেয়।

-যাদের জন্য উপযোগ

নবদম্পতি।

যারা দীর্ঘদিনের জন্য জন্মবিরতি চান।

যারা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান।

যারা ইস্টোজেন সমৃদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন না।

আইইউডি (কপারটি)

দীর্ঘমেয়াদি /অস্থায়ী পদ্ধতি-

আইইউডি বা Intra-uterine device জরায়ুতে স্থাপন উপযোগী অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদি গর্ভনিরোধক/ জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ।

কপার-টি ৩৮০ এ:

ইংরেজি “T” অক্ষরের মতো দেখতে এ উপকরণটি পলিইথিলিন প্লাস্টিকের তৈরি এবং এর দন্ডে তামার সূক্ষ্ম তার ও বাহুতে তামার সূক্ষ্ম পাত জড়ানো থাকে। এতে তামার মোট আয়তন ৩৮০ বর্গ মিলিমিটার। এখান থেকে কপার অণু ধীরে ধীরে জরায়ুতে নিঃসৃত হয়। কপার-টি’র লম্বা দন্ডের সাথে ২টি নাইলনের সুতালাগানো থাকে। কপার-টি ৩৮০এ খুবই কার্যকরী। কপার-টি ৩৮০এ’র প্রথম বছরে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা শতকরা ০.৭ ভাগ মাত্র।

কাজ: আইইউডি শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। আইইউডি জরায়ুতে এবং ফেলোপিয়ান টিউবে কপার অণু, এনজাইম, প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এবং শ্বেতকণিকা (ম্যাক্রোফেজ) বাড়িয়ে দেয়, যা শুক্রাণুর কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয় এবং নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়।

-যাদের জন্য উপযোগী

বাংলাদেশে প্রজননক্ষম যেকোন বিবাহিত মহিলা যার কমপক্ষে ১টি জীবিত সন্তান রয়েছে তিনি আইইউডি ব্যবহার করতে পারবেন।

ছেলেদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু রয়েছে যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই করতে পারেন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের সামনে আলোচনা করছি। চলুন তাহলে ছেলেদের জন্ম নিবন্ধন পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে সহজে ইনকাম

ছেলেদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি স্থায়ী এবং অস্থায়ী।

ছেলেদের অস্থায়ী পদ্ধতির প্রকার রয়েছে দুই প্রকার

একটি হচ্ছে কনডম এবং অপরটি হচ্ছে বাহিরে স্থলন করা। কিন্তু নিরাপদ ভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে কনডম ব্যবহার করতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্থায়ী পদ্ধতি গুলোর অবলম্বন করে থাকে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।

দীর্ঘ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

দীর্ঘস্থায়ী হোক বা অস্থায়ী হোক এটি সব সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো মহিলারাই ব্যবহার করে আসেন কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞান উন্নতির ফলে পুরুষরাও এখন স্থায়ী ও অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো মেনে চলতে পারে।

পুরুষদের দীর্ঘস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি দুই প্রকার

১.জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন

২.ভ্যাসেকটমি

জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন: পুরুষদের দীর্ঘস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পুরস্কার ইনজেকশন গ্রহণ করলে দীর্ঘ মেয়াদী ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ইনজেকশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হরমোন পরিবর্তন করা যায়। যার কারণে ডিম্বাণু কে নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হয় না। অর্থাৎ আপনি যদি ছয় মাস মেয়াদী বা এক বছর মেয়াদী ইনজেকশন নেই তাহলে আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বা আশংকা থাকবে না।

ভ্যাসেকটমি: ভ্যাসেকটমি হল পুরুষদের স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। কোন দম্পতি যদি মনে করেন তারা স্থায়ীভাবে কোন সন্তান গ্রহণ করবেন না সে ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করতে পারেন। পুরুষের অন্ডকোষ থেকে শুক্রাণু শুক্রাণু বহন করে।

ভ্যাসেকটমি অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষের শুক্রাণু কেটে ফেলা হয় যার কারনে পুরুষের অন্ডকোষ থেকে শুক্রাণু বের হতে পারে না। তবে এর ফলে পুরুষের যৌনাঙ্গের কোনরকম যৌন চাহিদার কোন পরিবর্তন দেখা দেয় না। সুতরাং আগের মতই যৌন মিলনে করতে পারবেন শুধু বাচ্চা ধারণ করতে পারবেন না।

জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি

কার্যকরী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি খুবই জরুরী। যে সকল দম্পতি শীঘ্রই বাচ্চা গ্রহণ করতে চায় না তাদের জন্য বিশেষ করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজনে রয়েছে। তাই আপনাদের আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্ক আপনাদের সামনে আলোচনা করব।

বিভিন্ন দেশের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের নাগরিকরা পরিবার পরিকল্পনা অনুমোদিত আধুনিক পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করে থাকেন তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

  • খাবার বড়ি (পিল)
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন
  • কনডম
  • ভ্যাসিকটমি
  • ইমপ্ল্যান্ট
  • টিউবেকটমি

এ পদ্ধতি গুলো আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে কিছু রয়েছে স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং কিছু অস্থায়ী।

আধুনিক জন্ম নিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি

আধুনিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী  পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ডাক্তার উল্লেখ্য করে থাকেন। যখন কোন দম্পতি স্থায়ীভাবে বাচ্চা নেওয়া বন্ধ করে দেবেন তখন এই পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে পারবেন।

  • ভ্যাসিকটমি
  • ইমপ্ল্যান্ট
  • টিউবেকটমি

আধুনিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ অস্থায়ী পদ্ধতি

এ পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ এবং অস্থায়ীভাবে এ পদ্ধতি অনেকে গ্রহণ করে থাকেন। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে অপারেশনের মতো ঝামেলায় পড়তে হয় না। যদি আপনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ করতে চান তাহলে এই পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করতে পারেন।

  • খাবার বড়ি (পিল)
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন
  • কনডম

আধুনিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ ক্ষতি ভালো কোনটি

বর্তমান সময়ে অনেকেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু কোন পদ্ধতি ভালো সেটি অনেকেই বুঝতে পারেন না। কোন পসেটি ভালো সেটি নির্ভর করবে আপনি কতদিন পর্যন্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ বিরোধী রাখতে চান সে সময়ের ওপর। যদি আপনি নতুন দম্পতি হয়ে থাকেন তাহলে এক দুই বছর গ্যাপ দিতে চাইছেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার পিল খাওয়া ভালো হবে।

এছাড়াও বর্তমান সময়ে অনেক ভালো মানের ইনজেকশন পাওয়া যাচ্ছে। যদি আপনি মনে করেন তিন বছর বাচ্চা নেবেন না তাহলে আপনি তিন বছর মেয়াদী একটি ইনজেকশন নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে।

প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট, পিল কিংবা কনডমের ওপরই ভরসা করেন। কিন্তু, আধুনিক পদ্ধতি ছাড়াই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। মহিলাদের স্বাভাবিক ঋতুচক্র প্রাকৃতিকভাবে নির্ধারিত। জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি হিসেবে আপনি প্রাকৃতিক পদ্ধতিও ব্যবহার করে নিশ্চিত থাকতে পারবেন।এ ছাড়াও প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ ৮০ শতাংশ নিরাপদ।

১। পিরিয়ডের মাসের এমন কিছু দিন রয়েছে যেগুলোকে নিরাপদ দিন বা সেইফ পিরিয়ড দিন বলা হয়।

২। এ দিনগুলোতে গর্ভধারণের ঝুঁকি কম থাকে।এই দিনগুলিতে সহবাস করলেও গর্ভধারণের ঝুঁকি থাকে না। সেফ পিরিয়ডের দিনগুলিও প্রকৃতিগতভাবে নির্দিষ্ট। এই কারণেই একে প্রাকৃতিক পরিবার পরিকল্পনা বলা যেতেই পারে।

৩। অনেক চিকিৎসক এগুলোকে ক্যালেন্ডার পদ্ধতি ও বলে থাকে।এই পদ্ধতি কার্যকর করতে অবশ্যই জানা দরকার ঋতুচক্রের নিরাপদ দিন কোনগুলি।

৪। এই পদ্ধতির জন্য সবার আগে জানতে হবে মাসিক ঋতুচক্র নিয়মিত হয় কিনা। হলে তা কতদিন অন্তর হয়।

৫। সবচেয়ে কম যত দিন পর পর মাসিক হয়, তা থেকে ১৮ দিন বাদ দিতে হবে। পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে এই দিনটিই হলো প্রথম অনিরাপদ দিন। আবার সবচেয়ে বেশি যতদিন পরপর পিরিয়ড হয়, তা থেকে ১০ দিন বাদ দিলে মাসিক শুরুর প্রথম দিন থেকে এই দিনটিই হলো শেষ অনিরাপদ দিন।

ধরুন, আপনার পিরিয়ড ২৮ থেকে ২০ দিন অন্তর হয়। তবে ২৮-১৮= ১০, অর্থাৎ পিরিয়ড শুরুর পর থেকে প্রায় ৯ দিন আপনার জন্য নিরাপদ, এই দিনগুলিতে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার না করেও সহবাস অনায়াসেই করা  সম্ভব।

৬। ১০ নম্বর দিন থেকে অনিরাপদ দিন শুরু। তাই এই দিন থেকে সহবাসে সংযত হতে হবে।

৭। ৩০ দিন হলো দীর্ঘতম মাসিকচক্র। তাই ৩০-১০= ২০, অর্থাৎ ২০ নম্বর দিনটিই হলো শেষ অনিরাপদ দিন। ২১তম দিন থেকে আবার অবাধে সহবাস করা যেতে পারে। এতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা নেই। তবে, এতে ১০ থেকে ২০ দিনের মধ্যে অবাধ সহবাসের ফলে গর্ভধারণ হতে পারে। সহজভাবে  বলতে গেলে পিরিয়ড শুরুর প্রথম সাত দিন ও শেষের প্রথম সাত দিন সহবাস করা নিরাপদ।

তবে, পিরিয়ড নিয়মিত না হলে এই পদ্ধতি কার্যকর হবে না। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ ৮০ শতাংশ নিরাপদ। সাধারণত, পিরিয়ডের হিসেবে গণ্ডগোল, অনিরাপদ দিবসে সহবাস, অনুমিত পিরিয়ডের ফলে প্রাকৃতির গর্ভনিরোধকের পদ্ধতি ব্যর্থ হতে পারে। কিন্তু আপনি যে পদ্ধতি অবলম্বন করুন না কেন একবার চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিবেন।

ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

আগর তুলনায় বর্তমান সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো অনেকেই মেনে চলে এবং অনেকে জন্ম নিয়ন্ত্রণে সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে জানতে চাই। জন্মনিয়ন্ত্রণ এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাচ্চা নেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন। কিন্তু এই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুকু ঠিক। চলুন তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে কি বলে তা জেনে নিই।

আরো পড়ুনঃ টিকটক থেকে সহজে ইনকাম ২০২৩

আপনি যদি স্থায়ীভাবে বা অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে তা ইসলামের দৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ অবৈধ এবং হারাম। এমন কোন চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে নারী-পুরুষ উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করা হয় তা অনেক গুনাহের কাজ ইসলামের দৃষ্টিতে এটি হারাম।

তবে আপনি অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ইসলামের দৃষ্টিতে কিছুটা ছাড় রয়েছে। যেসব নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছাড়া রয়েছে তা নিচে আলোচনা করা হলো:-

১। আপনি যদি পরপর দুইটি বাচ্চা নিয়ে থাকেন তাহলে মাঝখানে আপনি কিছুটা সময় বিরতি নিতে পারেন এজন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ অস্থায়ীভাবে পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।

২। কোন নারী যদি বাচ্চা পালনে অপারগ হয় তাহলে অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবে।

৩। এবং গর্ভধারণ করলে জীবন সংশয় ও বিপদজনক হতে পারে এমন ক্ষেত্রে।

উল্লেখিত বিষয় থেকে বোঝা যাচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে অস্থায়ীভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা ছাড় রয়েছে।

জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতিঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণের সব থেকে সুরক্ষিত পদ্ধতি, মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি ও কি কি? অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, ছেলেদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি, প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন