জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায়

প্রিয় বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলেই ভাল আছেন। বর্তমান সময়ে খুবই জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে অনেকেই জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি ওপেন করেছেন। তাদের জন্য আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।

জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায়

জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আপনি যদি সঠিকভাবে জানতে চান, তাহলে মনোযোগ সহকারে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। তাহলে আসুন শুরু করি জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য।

সূচিপত্রঃ জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায়

ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ

জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে অনেক ভাইবোন আছেন যারা এ বিষয়ে সঠিক মত জানতে চান। মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের এই জগত সৃষ্টি করেছেন আশরাফুল মাখলুকের মাখলুকাতের জন্য আর আশরাফুল মাখলুকাত হলো সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। মানুষের জন্য আল্লাহ তা'আলা এই জমিনকে বিশালত্ব দান করেছেন। আর এই মানুষ যদি দুনিয়াতে না থাকে তাহলে দুনিয়া মূল্যহীন।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে সহজে ইনকাম

আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির এবং মানুষের বৃদ্ধির জন্য আদম ও হাওয়া সৃষ্টি করেছেন। এবং আদম হাওয়া থেকে সারা পৃথিবীতে মানুষের পরিপূর্ণ হয়েছে। বর্তমান সময়ে মানুষ বিভিন্ন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে থাকেন যার ফলে দুনিয়ার বুকে মানুষের সৃষ্টির সংখ্যা অনেক অংশেই কমে আসছে।

মানুষ এটা কখনোই ভেবে দেখেনা যে আল্লাহতালা যখন কোন মানুষ সৃষ্টি করেন তখন অবশ্যই তার রুজির ব্যবস্থা আগে থেকেই করে থাকেন কিন্তু মানুষ এটা না ভেবে প্রতিদিনই  কোটি কোটি ,হাজার হাজার সংখ্যক শুক্রাণু  জন্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হত্যা করছে। যা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।

এজন্য আমাদের অবশ্যই জন্মনিয়ন্ত্রণ করা ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। জন্মনিয়ন্ত্রণ করা ইসলামিক উপায় জেনে মাধ্যমে আপনি সঠিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে চলতে পারবেন।

ইসলামিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

বাংলাদেশের অধিকাংশই জাতি মুসলিম তাই ইসলামিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য দায়িত্ব। জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত।

আল্লাহ পাক বলেন, তোমরা নিজেরাই নিজেদের হত্যা করো না। আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি অতীব দয়াবান (সুরা নিসা আয়াত- ২৯)

জন্ম নিয়ন্ত্রণ সাধারণত তিন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। ক. সাময়িক পদ্ধতি খ. স্থায়ী পদ্ধতি ও গ. গর্ভপাত পদ্ধতি।

সাময়িক পদ্ধতি - এই পদ্ধতির ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন , আযল করা অর্থাৎ সহবাসের চরম পুলকের মুহূর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো। হযরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও সাময়িক পদ্ধতি) করতাম। (বাখারী ২/৭৮৪)।পিল খাওয়া,কনডম ব্যবহার, পেশীতে বড়ী ব্যবহার, জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইনজেকশন নেয়া ইত্যাদি। এ পদ্ধতি কেবল নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে বৈধ হবে।

১। দুই বাচ্চার জন্মের মাঝে কিছু সময় বিরতি দেওয়া যাতে প্রথম সন্তানের লালন-পালন, পরিচর্যার ঘাটতি না হয়।

২। সন্তান লালন পালনের অপারগ হলে

৩। মহিলারা যদি অসুস্থ দুর্বল বা গর্ভধারণে বিপদজনক হয়

৪। দুগ্ধপোষ্য শিশু মায়ের আবার গর্ভসঞ্চার হলে শিশুর পক্ষে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তখন মায়ের দুধের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যেতে পারে, ফলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

৫। এছাড়াও বৈশ্বিক অসুবিধা এবং সমস্যার ফলে বা হারাম জিনিস গ্রহণের ফলে এবং হারামিশার ফলে কোন সন্তান আসলে এটা ভেবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি করা বৈধ।

স্থায়ী ব্যবস্থা - নারী পুরুষের অপারেশনের মাধ্যমে এই স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।স্থায়ী পদ্ধতি যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এই পদ্ধতিকে আলেম ওলামারা সম্পূর্ণ অবৈধ বলেছেন। আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বাখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন, স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। (উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ)।

অবশ্য কোন জরায়ুতে ক্যান্সার বা এমন কোন রোগ যদি হয়, যার কারণে জরায়ু কেটে ফেলা ছাড়া কোন উপায় থাকে না, সেক্ষেত্রে জরায়ু কেটে ফেলা জায়েজ আছে। এতে চিরতরের জন্য গর্ভধারণের সক্ষমতাও বিনষ্ট হতে পারে।

তবে কোন নারী-পুরুষ দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে এ পদ্ধতি অবলম্বন করে তা হবে ইসলামিক অবৈধ এবং হারাম পদ্ধতি।

গর্ভপাত ঘটানো পদ্ধতি - গর্ভপাত ঘটানো পদ্ধতি জন্মনিয়ন্ত্রণের একটি প্রাচীন পদ্ধতি। জন্মনিয়ন্ত্রণের উপায়-উপাদানের অনেক উন্নতি সত্ত্বেও বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ পদ্ধতিও চালু রয়েছে। এ পদ্ধতিটি অবৈধ। তবে যদি নারী কোন কারণে অত্যধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে গর্ভপাত বৈধ হবে বলে ইসলামী স্কলাররা মত দেন। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

যদি স্থায়ী ভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে তবে সম্পদ সম্পন্নতা অবৈধ এবং ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।

আল কুরআনে বলা হয়েছে, ‘জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল’?) (সুরা তাকভীর আয়াত, ৮-৯)।

আমাদের দেশে অনেক নারী পুরুষ দারিদ্র্যর কারণে তাদের সন্তানদের হত্যা করে থাকে। এটা কখনোই ইসলামে নেই। কারণ আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই রিযিক দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহা অপরাধ।” (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত- ৩১)

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম ইসলাম কখনো স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমর্থন করে না ইসলামে এটি অবৈধ এবং হারাম। যে পদ্ধতি ইসলামে বৈধ এবং সমর্থন রয়েছে সেভাবে নারী-পুরুষ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পালন করতে পারে।

জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচাইতে ভালো পদ্ধতি কোনটি

প্রিয়া পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিশেষ কিছু প্রতিবেদন নিয়ে হাজির হয়েছি ইতিমধ্যে আমরা ইসলামিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছি আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো আমরা ব্যবহার করে থাকি।

কিন্তু আপনার শরীরের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচাইতে ভালো পদ্ধতি কোনটি সেটি অবশ্যই জানতে হবে। ইসলাম যেহেতু স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বৈধ মনে করেন না সে হিসেবে আপনি অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করতে পারেন এর মধ্যে রয়েছে।

  • কনডম 
  • খাবার বড়ি
  •  ইঞ্জেকশন

কনডম - হলো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় পদ্ধতি। এটি জন্মনিয়ন্ত্রণ ও যেকোনো যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে সবচেয়ে কর্যকর পদ্ধতি। তবে এটি ব্যবহারে পুরুষটিকে প্রতিবার সঙ্গম করার সময় কনডম ব্যবহার করতে আগ্রহী থাকতে হবে। প্রতিবার মিলনে একটি নতুন কনডম ব্যবহার করতে হবে। অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ জন্য কনডম একটি ভালো পদ্ধতি।

খাবার বড়ি - প্রতিদিন যদি একই সময়ে সেবন করা হয় তবে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। নির্দিষ্ট কিছু শারিরীক সমস্যা ব্যতিত সবাই এটি গ্রহণ করতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির আরো কিছু সুবিধা রয়েছে যেমন, খাবার বড়িতে রয়েছে বেশ কিছু হরমন যার ফলে নারীদের মাসিক নিয়মিত হয়, রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়, পেট খিচুনি হয় না পেট ব্যাথাও কমে যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ক্যান্সার সৃষ্টি করে না। তাই অনেক নারী বড়ি গ্রহন করা পছন্দ করে।

আরো পড়ুনঃ টিকটক থেকে সহজে ইনকাম ২০২৩

ইঞ্জেকশন - এটি একটি সহজ ও কার্যকরী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। তবে ইঞ্জেকশনের ধরন অনুযায়ী প্রতি ৩/৪/৫ মাস পর পর ইঞ্জেকশন নিতে হবে। আপনাকে অবশ্যই কোন প্রশিক্ষত স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নিয়ে এই পদ্ধতি গ্রহন করতে হবে। এবং নিশ্চিন্তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।

পিল খাওয়া কি জায়েজ

পিল খাওয়া কি জায়েজ? এ বিষয়ে জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন বর্তমান সময়ে খাবার বিল অনেক নারীর পছন্দের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির একটি। এটি খেয়ে অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনেক নারী অবলম্বন করে থাকেন।

খাওয়ার ফলে অনেকের শরীরের পাশে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না এবং খুব সহজেই বেশিরভাগ নারীদের এটি ম্যাচ হয়ে যায়। পিল খাওয়া কি জায়েজ এ বিষয়ে অনেকেরই মতবাদ রয়েছে।

ইসলামে অস্থায়ীভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি করা সবটাই জায়েজ রয়েছে এবং ইসলামে এক্ষেত্রে কিছু ছাড় দিয়েছে। এক্ষেত্রে পিল খাওয়া ও জায়েজ। অস্থায়ী পদ্ধতি হলো স্বামী স্ত্রী প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে যা ইসলামে অবৈধ এবং হারাম বলে বিবেচিত।

কিন্তু স্থায়ীভাবে আপনি যেকোনো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন অস্থায়ী পদ্ধতি মানে কোন নারী পুরুষ কেউই প্রযোজন ক্ষমতা হারাবে না। পিল খাওয়া এবং যেকোনো অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য কিছু বিশেষ ক্ষেত্র রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি কিছু সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করতে পারবেন।

যেমন একটি/ দুই টি বাচ্চার পর কিছু সময় বিরতি রেখে সেই বাচ্চা লালন পালনের সময় পর্যন্ত আপনি পিল খেতে পারেন।

এবং কোন নারী যদি শারীরিকভাবে দুর্বলতা এবং গর্ভধারণে বিপদজনক হয় সে সময় পর্যন্ত সে খাবার অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে অস্থায়ীভাবে যেকোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো সে ব্যবহার করতে পারবে।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম অস্থায়ীভাবে যেকোনো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করা যাবে সেটা পি আহল হোক বা অন্য কোন পদ্ধতি।

সন্তান না নিলে কি গুনাহ হয়

জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তর রয়েছে যেগুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে। অনেক দম্পতি রয়েছে যারা সন্তান নিতে চায় না এবং এই বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জানতে চাই সন্তান না নিলে কি গুনাহ হয়? আসলে এ বিষয়ে কিছু জেনে নিন। যুবক যুবতী সকলের প্রতি আল্লাহ তায়ালার রাসুল দিয়ে সুন্নত করেছেন এবং সন্তান করেছেন আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠ নিরাময়।

সেটি কন্যা হোক বা পুত্র। অনেক পরিবার রয়েছে যারা যৌন চাহিদা পূরণের জন্য বিবাহ করে থাকেন। কিন্তু সন্তান চান না আবার অনেক পরিবার আছে যারা দারিদ্রের জন্য সন্তানকে হত্যা করে। এ বিষয়ে ওপরে উল্লেখিত একটি হাদিস আমরা প্রেরণ করেছি।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের যুগল হতে তোমাদের জন্য পুত্র ও পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের উত্তম জীবনোপকরণ দিয়েছেন।’ (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৭২)।

সন্তান সন্তানাদি হলো ভবিষ্যতের কর্ণধার কারণ যুবক হতে আস্তে আস্তে আপনি যখন বৃদ্ধ হয়ে পড়বেন তখন সেই সন্তানই আপনার দেখাশোনা এবং ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে। এবং আপনার অর্থ সম্পদের অংশীদার হবে আপনি যদি নিঃসন্তান হন কিংবা সন্তান নিতে না চান তাহলে আপনার ভবিষ্যতে সে অর্থ সম্পদ কোন কাজে আসবে না এবং দেখাশোনার জন্য কেউ থাকবে না। তাই আল্লাহ তাআলা যা করেন সবকিছু ভেবেচিন্তেই করেন। আল্লাহতালা আমাদের বিয়ে করার এবং সন্তান নেওয়ার বিধান করেছেন তা পালন করা প্রত্যেকের জন্য ফরজ।

শিশু মানবজাতির অতীব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিশুরা নিষ্পাপ, শিশু পবিত্রতার প্রতীক। শৈশবেই মানুষের জীবনের গতিপথ নির্ধারিত হয়। তাই ইসলাম শৈশবকালকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

প্রিয় নবী হজরত (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুই স্বভাবধর্মে (ইসলামে) জন্মগ্রহণ করে।’ (তিরমিজি)। হজরত আবু রাফি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে দেখেছি, হজরত হাসান (রা.)-এর জন্ম হলে তিনি তাঁর কানে নামাজের আজানের মতো আজান দিয়েছিলেন। (তিরমিজি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১৮৩)।

মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) শিশুদের কোলে নিতেন। একবার এক সাহাবির সন্তানকে কোলে নিলে শিশুটি তাঁর কোলে প্রস্রাব করে দেয়। তবে এতে তিনি বিরক্ত হননি।

তাই উপরোক্ত আমরা হাদিস থেকে বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি। প্রত্যেক যুবক যুবতীদের বিয়ে করা এবং সন্তান গ্রহণ করা অবশ্যই ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ এবং ইসলামী রীতি অনুযায়ী করণীয়। এটি না পালন করলে অবশ্যই আপনি শামিল হতে পারেন।

জন্মনিয়ন্ত্রণ করা কি জায়েজ

স্থায়ী পদ্ধতি -- যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী রাঃ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন, و هو محرم بالاتفاق অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।{উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ}

আরো পড়ুনঃ ল্যাপটপ দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায়

অস্থায়ী পদ্ধতি -- যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমনঃ আযল করা সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল খাওয়া,জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি। এ পদ্ধতি কেবল নিম্মোক্ত ক্ষেত্রে বৈধ হবে।

দুই বাচ্চার জন্মের মাঝে কিছু সময় বিরতি দেওয়া যাতে প্রথম সন্তানের লালন-পালন, পরিচর্যা ঠিকমত হয়। কোন কারণে মহিলার বাচ্চা লালন-পালনের সামর্থ না থাকলে। মহিলা অসুস্থ ও দূর্বল হওয়ার কারণে গর্ভধারণ বিপদজনক হলে।

জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায়ঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে জন্মনিয়ন্ত্রণ করার ইসলামিক উপায়, ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, ইসলামিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচাইতে ভালো পদ্ধতি কোনটি? পিল খাওয়া কি জায়েজ? সন্তান না নিলে কি গুনাহ হয়? জন্মনিয়ন্ত্রণ করা কি জায়েজ? এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন বিস্তারিতভাবে।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন