বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

প্রিয় ভিউয়ার্স আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলেই ভালো আছেন আপনাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল আমরা বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এ বিষয়ে কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। আমরা অনেকেই জানিনা বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়?

বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

তাই আপনাদের জানাতে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয়ে আপনাদের সামনে আলোচনা করব।তাহলে চলুন ভেতরে নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

বেতর নামাজ কত রাকাত

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমরা প্রত্যেক মুসলমান পড়ে থাকি কিন্তু বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এ বিষয়ে আমরা সঠিকভাবে জানি না। তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়। তার আগে চলুন বেতর নামাজ কত রাকাত সে বিষয়ে জেনে নিই।

বেতর নামাজের রাকাত সংখ্যা বেজোড়া। এক রাকাত থেকে আপনি ১১ রাকাত পর্যন্ত পড়তে পারবেন। তবে বেশির ভাগ ওলামায়ে কেরাম তিন রাকাতের ব্যাপারে বক্তব্য দিয়েছেন। আপনি তিন রাকাতও আদায় করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ চুল ঘন করার ইসলামিক উপায় জানতে চাই

হানাফী মাযহাব মতেও এটা তিন রাকাত।কিন্তু আহলে হাদিসরা বলতেছে যে বিতর ১ রাকাত ও আছে আর তারা এই হাদিস গুলা দেয়। ১) নবী(সঃ) রাতের তাহাজ্জুদের নামায দুই দুই রাকাত করে আদায় করতেন এবং ১ রাকাত বিতর পড়তেন। [বুখারী -৯৩৬] ২) আবদুল্লাহ 

হযরত আয়েশা থেকে বর্নিত, ‘রাসুলুল্লাহ রাতে ১১ রাকাত নামায পড়তেন। তার মধ্যে ১ রাকাত বিতর পড়তেন। নামায শেষ করে তিনি ডান পাশে ফিরে শুতেন। অত:পর ভোরে আজান হলে, তিনি উঠে,সংক্ষিপ্ত ২ রাকাত (ফজরের সুন্নাত) নামায পড়তেন’। [মুসলিম- ১৫৯৪]

বেতর সংখ্যার নামাজ রাকাতের নানা মতবাদ রয়েছে। তবে এখান থেকে বিশেষভাবে বোঝা যায় বেতর নামাজের রাকাত সংখ্যা বেজোড়া।

বিতর নামায মূলত তিন রাকাত। দুই রাকাত পড়ে বৈঠক করতে হবে। তারপর উঠে আরো এক রাকাত মিলিয়ে বিতর বা বেজোড় করতে হবে। এভাবে পড়াটাই বিশুদ্ধ বিতর নামায।

এক মিলানো ছাড়া যেহেতু বিতর বা বেজোড় হয় না। তাই হাদীসসমূহে এক রাকাতকে বিতর বলা হয়েছে। কারণ, এক রাকাতের মাধ্যমে বিতর বা বেজোড় পূর্ণতা পায়।

৩ রাকাত বেতর নামাজের নিয়ম

বেতর নামাজ তিন রাকাত বিধায় একে বেজোড়া বলা হয় বেতর আরবি শব্দ যার অর্থ হচ্ছে বেজোড়। বেতরের নামাজ তিন রাকাত কিন্তু অনেকেই এক রাকাত পড়ে থাকে।ইশার নামাজের পরপরই এ নামাজ পড়া ওয়াজিব। বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয়ে আমরা অনেকেই সঠিক ভাবে জানি না তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা তিন রাকাত বেতর নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।

এছাড়া নামাজ শেষ করে আমরা তিন রাকাত বেতর নামাজ আদায় করে থাকি কিন্তু রমজান মাসে আমরা বেতনামাজ একসাথে জামায়েত বদ্ধ ভাবে তারাবির নামাজ শেষ করে তিন রাকাত বেতর নামাজ আদায় করে থাকি।

বিতর নামাজ প্রায় অন্য ফরজ নামাজের মতো। তবে নিয়মের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য আছে। প্রথমে তিন রাকাত বেতর নামাজের নিয়ত করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসবে এবং তাশাহহুদ পড়বে। কিন্তু সালাম ফেরাবে না। এরপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহা পড়বে। 

এরপর অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলাবে। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠাবে এবং তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। 

তারপর নিঃশব্দে (অনুচ্চ স্বরে) দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু-সিজদা করবে। তারপর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

আশা করি আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনার ভেতরের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং ভেতরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয়ে জানতে পেরেছেন। চলুন তাহলে আমরা বেতর নামাজের সূরা কি সে বিষয়ে কিছু জ্ঞান লাভ করি।

বেতর নামাজের সূরা

নামাজ হলো আল্লাহ তাআলার এবাদতের বিশেষ এক মাধ্যম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে গেলে আমরা কুরআনে বিভিন্ন সূরা গুলো আমল করে থাকি কিন্তু ভেতর নামাজের জন্য কোন সূরা নির্ধারিত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনেকে জানতে চাই এবং বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এ বিষয়ে আমার চিন্তিত হয়ে থাকে।বিতরের নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সূরা নেই।

আরো পড়ুনঃ হাবিবুল্লাহ নামের অর্থ কি - হাবিবুল্লাহ নামের ইসলামিক অর্থ

বিতরের নামাজ মূলত ইবাদতের জন্য, নামাজের জন্য। বিতরের নামাজ আদায়ের জন্য নবী (সা.) কোনো নির্দিষ্ট সূরা নির্ধারণ করে যাননি; বরং আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘কোরআন থেকে তোমাদের সাধ্যে যতটুকু কুলায়, তোমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়, তোমরা ততটুকু তিলাওয়াত করো।

কিন্তু নবী (সা.)বেশিরভাগ সময় সুনির্দিষ্ট কিছু সূরা বিতরের নামাজে তিলাওয়াত করতেন। এই মর্মে নবীর (সা.) হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। কেউ যদি এই সূরাগুলো আমল করে তাহলে সে সুন্নাহর অনুসরণ করল।

যেমন; নবী (সা.) বিতরের নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা আলা পড়তেন, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়তেন। সুতরাং এই পদ্ধতি যদি কেউ অনুসরণ করেন, তাহলে করতে পারেন। কোনো কোনো রেওয়াতে এসেছে নবী (সা.) প্রথম রাকাতে সূরা আলা পড়তেন, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা জিলজাল এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়তেন।

বেতর নামাজের নিয়ম

আজকের এই আর্টিকেলটি যারা মনোযোগ সহকারে পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয়ে যথাযথভাবে জ্ঞানলাভ করতে পেরেছেন। কারণ আমরা ইতিমধ্যে বেতর নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সামনে আলোচনা করেছি।

দোয়া কুনুত

বেতর নামাজের জন্য দোয়া কুনুত একটি বিশেষ আমল। বেতন নামাজের মধ্যে অনেকেই দোয়া কুনুত পড়ে থাকেন। তাই আমাদের সকলেরই উচিত দোয়া কুনুত জানা এবং আমল করা। যারা বেতার নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয় জানে না তারা দোয়া কুনুত মুখস্ত করবেন। বেতর নামাজে দোয়া কুনুতের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তবে এমন অনেকে আছে যাদের দোয়া কুনুত মুখস্ত নেই তারা যে কোন সূরা দিয়ে বেতর নামাজ আদায় করতে পারেন।

দোয়া কুনুত আরবীঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِاَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্‌তাঈ’নুকা, ওয়া নাস্‌তাগ্‌ফিরুকা, ওয়া নু’’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ’, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, – ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা – আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্‌ফারি মুলহিক্ব।

দোয়া কুনুতের অর্থঃ

হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি। আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।

বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়ঃ শেষ কথা

বেতর নামাজ কত রাকাত, বেতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়? ৩ রাকাত বেতর নামাজের নিয়ম, বেতর নামাজের সূরা, বেতর নামাজের নিয়ম, দোয়া কুনুত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আপনার অবশ্যই উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ গায়ে হলুদ করা কি জায়েজ

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারন আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়ম প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url