আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি - সালাম দেওয়ার নিয়ম

প্রিয় বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজকের এ আর্টিকেলে আমরা আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সামনে কিছু আলোচনা করব। আমরা মুসলিম হয়েও আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিনা।

আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি

তাই আমাদের সকলেরই আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা জরুরী। তাহলে আসুন আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে কিছু বিশেষ জ্ঞান অর্জন করি।

সূচিপত্রঃ আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি - সালাম দেওয়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ

প্রত্যেক মুসলিম জাতির জন্য সালাম দেওয়া একটি সুন্নতি কাজ। যা আদম আঃ সৃষ্টির পর থেকে শুরু হয়েছে। তাই আমাদের সকলের উচিত সঠিকভাবে সালাম দেওয়া। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাবো।

আরো পড়ুনঃ হাবিবুল্লাহ নামের অর্থ কি - হাবিবুল্লাহ নামের ইসলামিক অর্থ

আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি অনেকে এটির সঠিক আখ্যা দিতে পারেন না। তাই অনেকেই আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি গুগলে সার্চ করে থাকেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম সম্পর্কিত সকল বিষয়ে আপনাদের সামনে তুলে ধরব।তাহলে চলুন আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি তা জেনে নিন।

আসসালামু আলাইকুম একটি আরবি শব্দ। আসসালামু আলাইকুম শব্দের অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, শুভকামনা।

সালাম একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন ইসলামী অভিবাদন।

সালাম আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নাম।(সুরা-৫৯ হাশর, আয়াত: ২৪)। সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলা প্রথম নবী অর্থ আদি মানব হযরত আদম (আ.) কে সালাম শিক্ষা দিয়েছিলেন।

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করার পর বলেছিলেন যাও ফেরেশতাদের সালাম দেওয়া এবং তারা তোমার সালামের কি উত্তর দেয় মন দিয়ে শোনো।

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, এটি হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম।

সে অনুযায়ী হযরত আদম (আ.) গিয়ে ফেরেশতাদের বলেন, আসসালামু আলাইকুম, এর অর্থ হচ্ছে আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।

ফেরেশতারা এর উত্তর দিয়ে বলেন “আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ”এর অর্থ হচ্ছে আপনার উপরও শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।( মিশকাতঃ৪৬২৮)।

আসসালামু আলাইকুম এর উত্তর

আমরা যারা সালাম দিয়ে থাকি তারা সালাম দেওয়ার সঠিক উত্তর এবং আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি সে সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের আসসালামুয়ালাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যথারীতি ভাবে আমরা জানানোর চেষ্টা করব।

প্রত্যেক মুসলমান ভাই-বোনদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তাই আপনারা দয়া করে আমাদের এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং ওয়ালাইকুম আসসালাম এর উত্তর জেনে নিন।

আসসালামু আলাইকুম এর উত্তর হল ওয়া'আলাইকুমুস-সালাম ( وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ ) একটি আরবী অভিবাদন, যা বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা প্রায়শই "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক" অর্থে ব্যবহার করে থাকে। 

এটি অন্যদের জন্য দোয়াস্বরূপ। এটি আসসালামু আলাইকুম অভিবাদনটির ( ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ ) আদর্শ জবাব।

অভিবাদনটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

কারো উপস্থিতির কৃতজ্ঞতা জানাতে বা কাউকে স্বাগত জানানোর জন্য অভিবাদনগুলি ব্যবহার করা হয়। এগুলি কথোপকথনের আগে ব্যবহার করা হয় এবং বলা হয়ে থাকে যে এটি একটি ভাল আচরণ।

সালামের জবাব কীভাবে দিতে হবে পবিত্র কুরআনে তা সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

আরবিঃ وإذا حييتم بتحية فحيوا بأحسن منها أو ردواها إن الله كان على كل شيء حسيبا

অর্থঃ কেউ যদি তােমাদেরকে সালাম দেয় (দোয়া করে) তাহলে (তােমরাও তার সালামের জবাব দাও, তার জন্য দোয়া কর) তার চেয়ে উত্তম সালাম অথবা তারই মতো পিরিয়ে বলো ৷ [নিসাঃ৮৬]

সালাম দেওয়ার নিয়ম

মুসলমান জাতিদের জন্য সালাম একটি ইসলামিক অভিবাদন। সালাম ইসলামের বাধ্যবাধতামূলক ও গুরুত্বপূর্ণ ভাবে বিবেচিত। সকল মুসলিম জাতিকে ও ইসলামকে রীতিতে সালাম দেওয়ার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। যা আদম সৃষ্টির পর থেকে সালাম দেওয়ার উপর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেক  ব্যক্তি আছে যারা আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না।

সালাম’ আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে- শান্তি, কল্যাণ, শুভকামনা। সালাম পরিপূর্ণ ইসলামি অভিবাদন। হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে একজন লোক এসে বললেন, আসসালামু আলাইকুম।

নবি কারিম (সা.) বললেন, ১০ (নেকি)। তারপর অন্য এক লোক এসে বললেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। নবি কারিম (সা.) বললেন, ২০। অতঃপর আরেক লোক এসে বললেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। নবি কারিম (সা.) বললেন, ৩০।’

সালাম দেওয়া সুন্নাত এবং সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। সালামের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ জবাব হলো-ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। নিয়ম হলো-কথা বলার আগেই সালাম দেওয়া। প্রথমে সালাম না দিলে রাসূল (সা.) কথা বলার অনুমতি দিতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আগে সালাম দেয় না তোমরা তাকে (কথা বলার) অনুমতি দিও না।’

উপরোক্ত হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি কারো সাথে সাক্ষাতের সময় পড়বেই সালাম দিতে হবে এবং সালামের পরবর্তীতে আপনি কথা শুরু করতে পারবেন। কারণ সালাম হলো ইসলামী গুরুত্বপূর্ণ এক অভিদাবন যেটি মানা ও পালন করা ইসলামে বাধ্যতামূলক। এটি একটি ইসলামিক রীতি। যেটি যুগ যুগ ধরে বহমান। তাই আমরা মুসলিম জাতি হয়ে অবশ্যই এই সুন্নতি তরীকাটি পালন করব।

কেউ সালাম দিলে অথবা কেউ সালাম এর জবাব দিলে সশব্দে ও শুদ্ধ উচ্চারণে সালাম ও সালামের উত্তর দিতে হবে যাতে অন্যরা শুনতে পায়। হাত বা মাথার ইশারা ইত্যাদির মাধ্যমে সালাম ও সালামের উত্তর দেওয়া মাকরুহ।

আরো পড়ুনঃ চুল ঘন করার ইসলামিক উপায় জানতে চাই

সালাম বিনিময় সম্পর্কিত আদবঃ

১। অন্য কথা না বলে আগে সালাম দেওয়া। এটিই উত্তম।

২। পথচারীকে আরোহী ব্যক্তি, দাড়ানো ব্যক্তিকে পথচারী, অবস্থানকারীকে আগন্তক, অধিক সংখ্যককে কমসংখ্যক এবং অধিক বয়সীকে কম বয়সী কর্তৃক আগে সালাম দেওয়া উত্তম।

৩। একাধিক ব্যক্তি সম্মিলিতভাবে অবস্থানকালে তৎমধ্য থেকে একজন সালাম দিলে সকলের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে।

৪। সম্মিলিতভাবে অবস্থানরতদের উদ্দেশ্যে সালাম দিলে তৎমধ্য থেকে একজন জবাব দিলে সকলের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে।

৫। সালামের জবাব সালাম দাতাকে শুনিয়ে দেওয়া।

৬। সালাম বিনিময়কালে হাত কপালে না ঠেকানো এবং মাথা না ঝুকানো।

৭। খালিঘরে প্রবেশকালে ‘আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল বাইত’ পড়া।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ এর অর্থ

অনেকে আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ এর অর্থ জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা এই বিষয়টি জানাবো।

ইতিমধ্যে আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি আপনারা জানতে পেরেছেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সালাম সম্পর্কিত বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তর আপনাদের সামনে আলোচনা করব। এবং আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।

মুসলিম বক্তৃতা এবং খুতবা অনুষ্ঠানে নিয়মিত এই অভিবাদনটি বিনিময় হয়। এর পূর্ণ রূপ হল: সম্পূর্ণ ফর্ম "ওয়া-আলাইকুমুস সালাম ওয়া-রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু (وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ , "এবং তোমাদের উপর শান্তি এবং আল্লাহর করুণা ও তাঁর নেয়ামতসমূহ বর্ষিত হোক")।

কারো উপস্থিতির কৃতজ্ঞতা জানাতে বা কাউকে স্বাগত জানানোর জন্য অভিবাদনগুলি ব্যবহার করা হয়। অনেকেই ছোট ভাবে আসসালামুয়ালাইকুম বলে থাকেন। কিন্তু যারা পূর্ণাঙ্গ সালাম দিয়ে থাকেন আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ এর উত্তর হল ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আশা করি সালামের পূর্ণাঙ্গ উত্তরটি জানতে পেরেছেন।

মুসলিম হয়ে বিধর্মীদের সালাম দেওয়া যাবে কিনা

ইসলাম হল আল্লাহ তাআলার একমাত্র মনোনীত একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। কুরআন মাজিদ হল পরিপর্ণ হেদায়েত গ্রন্থ। আর ইসলামি শিষ্টাচারের মধ্যে সালাম হল অভিভাদনের অন্যতম মাধ্যম। আমাদের মনে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে মুসলমান হয়ে বিধর্মীদের সালাম দেওয়া যাবে কিনা। তাই চলুন জেনে নেই মুসলিম হয়ে বিধর্মীদের সালাম দেওয়া নিয়ে ইসলাম কি বলে।

সালাম অর্থ শান্তি। মুসলমান পরস্পরকে সালাম দেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার ওপরে শান্তি বর্ষণের দোয়া করেন।

রাসূলুল্লাহ [সা.] বলেন, তোমরা ইহুদি ও নাছারাদের প্রথমে সালাম দেবে না (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৩৫)। তবে যদি তারা সালাম দেয় তবে শুধু ওয়া আলাইকুম (আপনার ওপরেও) বলে উত্তর দিতে হবে। [মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৬৩৭]

তবে কোনো অমুসলিম আগে সালাম দিয়ে ফেললে- উত্তরে তাকে ‘ওয়া আলাইকুম’ বলবে। কেননা, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন- “আহলে কিতাবগণ তোমাদের সালাম দিলে, তার উত্তরে তোমরা শুধু ‘ওয়া আলাইকুম’ বলবে। অর্থাৎ তোমাদের প্রতিও।” (বুখারি, হাদিসঃ ৬২৫৮; মুসলিম, হাদিসঃ ২১৬৭)

তবে শিষ্টাচারমূলক সম্ভাষণ করা যাবে। তাদের সালাম না দিয়ে অন্য কিছু বলে তাদের সম্ভাষণ দেওয়া যাবে।

সালামের গুরুত্ব

মুসলিম জাতি অনেকেও সঠিকভাবে সালাম দেয় না এবং সালামের সঠিক নিয়ম ও জানেন না। তাদের জন্য  সালামের গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে জানাবো। সালাম একটি গুরুত্বপূর্ণ আরবি ও ইসলামিক সম্ভাষণ যা দুনিয়া থেকে আসমান পর্যন্ত এর ব্যবহার রয়েছে।

অনেক মুসলিম ভাই-বোনেরা আছেন যারা আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি এবং সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তারা দয়া করে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে সালামের গুরুত্ব সম্পর্কে বিশেষভাবে জেনে নিন।

সালাম শব্দের অর্থই শান্তি তাই সমাজে শান্তি ছড়িয়ে দিতে পরস্পরের প্রতি সম্পর্ক তৈরি করে থাকে সালাম। সালাম এমনই একটি মাধ্যম যেটি আপন পর সকলেরই সাথে পরস্পর পরস্পরের সম্পর্ক ও দীর্ঘতা বাড়িয়ে থাকে। সালামের মাধ্যমে সমাজে ছড়িয়ে পড়ে শান্তি-সম্প্রীতির আলো। সালাম হচ্ছে একে অপরের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা কামনায় বিশেষ দু’আ। যাতে রয়েছে আল্লাহ তা’আলার নিকট অবারিত শান্তি, অফুরন্ত রহমত ও বরকত লাভের অনন্য আবেদন।

সালাম একটি পবিত্র সম্ভাষণ। একটি দোয়া। একটি ইবাদত। এর শেকড় আদম আ. ও ফেরেশতাদের আলােপচারিতা জুড়ে ছড়িয়ে আছে। আর শিখর বা শীর্ষ বিন্দু গিয়ে পৌছেছে জান্নাতের প্রবেশদ্বারে। হাদিসে এসেছে।

অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবিজি সা. বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.) কে তার আকৃতিতে (দুনিয়ায় প্রেরণকালে ও দাফন কালে আকৃতি) সৃষ্টি করেছেন। তার উচ্চতা ষাট হাত।

অতঃপর যখন তাকে সৃষ্টি করা হল, তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে। বললেন, যাও। উপবিষ্ট ফেরেশতাদের ওই দলটিকে সালাম দাও। অতঃপর তারা তােমাকে কী সম্ভাষণ করে তা মনােযােগ দিয়ে শােনো। কেননা, এটাই তােমার এবং তােমার সন্তানদের সম্ভাষণ।

অতঃপর তিনি গিয়ে বললেন, ‘আস-সালামু আলাইকুম’ জবাবে ফেরেশতারা বললেন, ‘আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহ’। (বুখারি; ৩৩২৬, মেশকাত; ৪৬২৮)।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, হে নবী, আমার আয়াতের ওপর ঈমান রাখে এমন লোকেরা যখন আপনার দরবারে আগমন করে তখন আপনি তাদেরকে ‘সালামুন আলাইকুম’ বলুন। (সূরা আনআম : ৫৪)।

এ আয়াতে রাসুলে কারীম (সা.) কে সম্বোধন করে উম্মতকে এ শিক্ষা দেয়া হয়েছে, যখন এক মুসলমান অপর মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন উভয়েই বন্ধুত্ব ও আনন্দাবেগ প্রকাশ করবে একে অন্যের জন্য শান্তি ও রহমত কামনার মাধ্যমে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা দয়াময় আল্লাহর ইবাদত করবে, সালামের প্রসার ঘটাবে, অভুক্তদের আহার করাবে। আর তাহলেই তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিযী)

আমাদের সকলেরই উচিত সঠিক নিয়মে সালামের গুরুত্ব জেনে সকল মুসলমান ভাই-বোনদের সুন্নত তরিকায় সালাম দেওয়া।

সালাম দেওয়ার ফজিলত

সালাম দেওয়ার রয়েছে বেশ কিছু ফজিলত তাই আমাদের গুরুত্ব সহকারে সালাম দেওয়া জরুরী। যে ব্যক্তি আগে সালাম দিবেন আর যে ব্যক্তির পরে সালাম দিবেন তাদের জন্য আমলনামায় অনেক নেকি লেখা হবে।সালাম দেয়ার ক্ষেত্রে ছোট-বড়, ধনী-গরীব কোন ভেদাভেদ নেই।

সমগ্র সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠত্ব ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছোট-বড় সকলকে সর্বাগ্রে সালাম দিয়ে সেই শিক্ষাই দিয়েছেন। সালাম বিনিময়ে কৃপণ ব্যক্তি সম্পর্কে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেনঃ মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা কৃপণ ওই ব্যক্তি যে সালাম দেয়ার মধ্যে কার্পণ্য করে। (তাবরানী)।

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আসসালামু আলাইকুম বলবে, তার আমলনামায় দশটি নেকী লেখা হবে, আর যে ব্যক্তি আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলবে তার আমলনামায় বিশটি নেকী লেখা হবে, আর যে ব্যক্তি আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু বলবে তার আমলনামায় ত্রিশটি নেকী লেখা হবে। (তাবরানী)। রাসুলে কারীম (সা.) ছোট-বড় সবাইকে আগে আগেই সালাম দিতেন। এমনকি নিজের কন্যা হযরত ফাতেমা রা: কেও তিনি আগে সালাম দিতেন।

রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি আগে আগে সালাম দেয় সে ব্যক্তির মাঝে কখনো অহঙ্কার থাকবে না। সে অহঙ্কার থেকে মুক্ত থাকবে।’ (বায়হাকি) নিজের ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেয়া, স্ত্রী-সন্তান-সন্তুতির সামনে সালাম বিনিময় করাসহ কারও বাড়িতে প্রবেশের সময় সালাম দেয়া এবং ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেয়া সবচেয়ে উত্তম কাজ।ইসলামে সালাম শুধু সম্মানার্থেই ব্যবহার হয় না বরং এটি কল্যাণের একটি বিশেষ দোয়া।

দেখা সাক্ষাতে পরস্পর শান্তি ও কল্যাণ কামনায় দোয়া করেন। সালাম শব্দের শাব্দিক অর্থ শান্তি ও নিরাপত্তা। ইসলামের বিধানানুসারে দেখা সাক্ষাতে পরস্পর পরস্পরের জন্য শান্তি নিরাপত্তা কামনা করে যে দোয়া করা হয় তার নামই সালাম। আল্লাহ তাআলা বলেন-‘আর যখন ওই সব লোক তোমার কাছে আসে যারা আমাদের আয়াতসমূহের ওপর ঈমান আনে, তখন তুমি বল- তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’ (সুরা আল-আনআমঃ আয়াত ৫৫)

আরো পড়ুনঃ গায়ে হলুদ করা কি জায়েজ

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, পরস্পরের মাঝে বেশি বেশি সালামের প্রচলন ঘটানো। কুরআনের নির্দেশ মেনে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা। আসুন, সালামের মাধ্যমে পাস্পরিক বন্ধন মজবুত করি। চেনা-অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে বেশি বেশি সালাম বিনিময় করে শান্তি ও কল্যাণ লাভ করি।

আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি - সালাম দেওয়ার নিয়মঃ শেষ কথা

আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ কি? আসসালামু আলাইকুম এর উত্তর, সালাম দেওয়ার নিয়ম, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ এর অর্থ, মুসলিম হয়ে বিধর্মীদের সালাম দেওয়া যাবে কিনা? সালামের গুরুত্ব, সালাম দেওয়ার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন