লাইলাতুল কদরের আমল - লাইলাতুল কদরের দোয়া

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা লাইলাতুল কদরের আমল এবং লাইলাতুল কদরের দোয়া সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিশেষ কিছু আলোচনা করতে চলেছি। লাইলাতুল কদরের আমল বিশেষ মর্যাদাশীল এবং ফজিলতপূর্ণ আপনারা যারা লাইলাতুল কদরের আমল এবং লাইলাতুল কদরের দোয়া সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন।

লাইলাতুল কদরের আমল

তাহলে চলুন লাইলাতুল কদরের আমল এবং লাইলাতুল কদরের দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ লাইলাতুল কদরের আমল - লাইলাতুল কদরের দোয়া

লাইলাতুল কদর  অর্থ কি

রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় সংখ্যার রাত্রিগুলোতে শবে কদর অনুসন্ধান করা মুস্তাহাব। মহানবী সঃ লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য উক্ত রাত্রিগুলোতে বড় মেহনত করতেন। শবে কদরে সারারাত জাগরণ করতেন। আজকের এ আর্টিকেলে আমরা শবে কদরের আমল এবং শবে কদরের বিশেষ দোয়া সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাতে চলেছি।

আরো পড়ুনঃ রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

আরবি লাইলাতুল ক্বাদর শব্দের ফারসি, উর্দু, হিন্দী ও বাংলা অর্থ হলো শবে কদর। আরবিতে ‘লাইলাহ’ এবং ফারসীতে ‘শব’ শব্দের মানে হল রাত।

ক্বাদর মানে তকদীর। সুতরাং লাইলাতুল ক্বাদর বা শবে কদরের মানে তকদীরের রাত বা ভাগ্য-রজনী। লাইলাতুল কদরের রাতে আমলেরও বড় মর্যাদাও মাহাত্ম রয়েছে। সে জন্যও তাকে লাইলাতুল কদর বলা হয়।

লাইলাতুল কদরের আমল

লাইলাতুল কদরের রাত হচ্ছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম রাত। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদাপূর্ণ রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। লাইলাতুল কদরের আমল বিশেষ  মর্যাদাশীল এবং ফজিলতপূর্ণ।

পবিত্র কুরআনুল কারিম নাযিলের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই রাতকে হাজারের মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ উত্তম ও মহা সম্মানিত রাত হিসেবে আমারদের জন্য দান করেছেন। প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ দশকের রাতগুলোর মধ্যে কোনো এক বিজোড় রাত হলো ভাগ্য নির্ধারণ বা লাইলাতুল কদরের রাত।

লাইলাতুল কদরের আমল-

সুতরাং লাইলাতুল কদর পেলে এ আমল ও দোয়া রাত অতিবাহিত করা জরুরি। তা হলো-

১। নফল নামাজ পড়া।

২। মসজিদে ঢুকেই ২ রাকাত (দুখুলিল মাসজিদ) নামাজ পড়া।

৩। রাতে তারাবির নামাজ পড়া। এবং শেষ রাতে সাহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।

৪। সালাতুত তাসবিহ পড়া।

৫। কুরআন তেলাওয়াত করা। কোরআন শরীফে বিশেষ দোয়া সমূহ গুলো: সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুয্যাম্মিল, সুরা মুদ্দাসির, সুরা ইয়াসিন, সুরা ত্বহা, সুরা আর-রাহমান, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, সুরা কুরাইশ এবং ৪ কুল পড়া।

৬। দরূদ শরিফ পড়া এবং তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া। সাইয়্যেদুল ইসতেগফার পড়া।

৭। জিকির-আজকার করা।

৮। কুরআন-সুন্নায় বর্ণিত দোয়াপড়া।

৯। বেশি বেশি দান-সদকা করা।

লাইলাতুল কদরের বিশেষ দোয়া

রমজান মাসের মর্যাদাবান রাত লাইলাতুল কদর। এ রাতে মহান আল্লাহ বান্দার মুক্তির জন্য নাযিল করেছেন পবিত্র আল-কোরআন। আর কুরআনুল কারিমে রয়েছে ক্ষমা প্রার্থনা অনেক দোয়া। এ রাতে বিশেষ দোয়া রয়েছে যা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পড়তেন এবং আমাদেরও পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। লাইলাতুল কদরের আমল সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি লাইলাতুল কদরের বিশেষ দোয়া সম্পর্কে চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

রমজান মাসের বিশেষ একটি মাস হচ্ছে লাইলাতুল কদর এ মাস হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর যে কোনো একটি রাতে ‘লাইলাতুল কদর’ সংঘটিত হয়। রোজাদার মুমিন মুসলমান এ রাত পাওয়ার জন্য বিশেষ আমল ও শেষ দশক ইতেকাফে অতিবাহিত করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও ইতেকাফ করেছেন। এ রাতে বিশেষ একটি দোয়া পড়ার কথা বলেছেন। তাহলো-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল (সা:) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাহলে আমি কোন দোয়াটি পড়বো?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে-

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেক মুমিন মুসলমানকে রমজান মাসের লাইলাতুল কদরে বিশেষ এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়ার তৌফিক দান করুন। (আমীন)

এছাড়াও কুরআনে উল্লেখিত বিশেষ কিছু ক্ষমা চাওয়ার দোয়া রয়েছে,

ক্ষমা প্রার্থনার জন্য মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে অনেক দোয়া তুলে ধরেছেন। যা নামাজের সেজদা, তাশাহহুদসহ সব সময় পড়া যায়। দোয়াগুলো হলো-

رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ

উচ্চারণঃ রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।

অর্থঃ হে আমার প্রভু! (আমাকে) ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন; আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী।' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)

رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

উচ্চারণঃ রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।

অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১০৯)

আরো পড়ুনঃ যাকাত কখন দিতে হবে

رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ

উচ্চারণঃ রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।'

অর্থঃ (হে আমার) প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬)

رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণঃ রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।'

অর্থঃ হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬)

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ

উচ্চারণঃ রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।'

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো।' (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)

رَبَّنَا اغْفِرْ لِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ

উচ্চারণঃ রাব্বানাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর।' (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)

سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ

উচ্চারণঃ সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির।

অর্থঃ আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো (আমাদের) ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা আল-বাকারাহ : আয়াত ২৮৫)

رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا

উচ্চারণঃ ওয়াফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা ফাংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।

অর্থঃ হে আমাদের রব! যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই, সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু।' (সুরা বাকারাহ : আয়াত ২৮৬)

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ

উচ্চারণঃ রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি।'

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং যারা আমাদের আগে যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকেও ক্ষমা করুন।' (সুরা হাশর : আয়াত ১০)

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ

উচ্চারণঃ রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।'

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে তোমার সীমালঙ্ঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)

رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ

উচ্চারণঃ রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! সুতরাং আমাদের গোনাহগুলো ক্ষম করুন। আমাদের ভুলগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯৩)

তাই প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত, রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড়া রাত গুলো লাইলাতুল কদরে প্রিয় নবি ঘোষিত বিশেষ দোয়াসহ কুরআনে উল্লেখিত ক্ষমা প্রার্থনা দোয়াগুলো সেজদায় গিয়ে তাসবিহ পড়ে কিংবা শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ ও দরূদ পড়ার পর নিজেদের গোনাহ থেকে মুক্তির জন্য বেশি বেশি পড়া। আর তাতেই মহান আল্লাহ রোজাদার মুমিন বান্দাকে গোনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে নাজাত দান করবেন।

তথ্য সংগ্রহ:jagonews24.Com

লাইলাতুল কদরের ফজিলত

বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বরকতময় রাত হলো লাইলাতুল কদর। এই রাতে পবিত্র  মহাগ্রন্থ আল–কোরআন এই রাতেই লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম নাজিল হয়েছিল। লাইলাতুল কদরের আমল হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম লায়লাতুল কদরের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে প্রত্যেক মুমিন মুসলমানদের জানা জরুরী। লাইলাতুল কদর ক্ষমা লাভের এক বিশেষ রাত।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মাহাত্ম্যপূর্ণ রজনীতে। আপনি কি জানেন মহিমাময় রাত্রি কী? মহিমান্বিত নিশি সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাত্রিতে ফেরেশতাদের সর্দার হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে উষা উদয় পর্যন্ত।’ (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।

পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস রমজান মাস, কোরআন নাজিলের রাত শবে কদর।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি রূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন হিসেবে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)।

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাতে ইবাদত করবে; তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি শরিফ, ইমান অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: ২৫, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৯-৩০, হাদিস: ৩৪; ই. ফা.)।

লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য নবীজি (সা.) শেষের ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। হজরত আয়িশা (রা.) বলেন, ‘ওফাতের আগ পর্যন্ত প্রত্যেক রমজানের শেষের ১০ দিন রাসুল (সা.) ইতিকাফ করতেন।’ (বুখারি: ২৩২৬, মুসলিম: ১১৭২)। ‘কিন্তু তিনি যে বছর ওফাত পান, সে বছর ২০ দিন ইতিকাফ করেন।’ (বুখারি: ৪৯৯৮)। ‘রাসুল (সা.)–এর ওফাতের পরও তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করতেন।’ (বুখারি: ২০২৬, তিরমিজি: ৭৯০)।

এই রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে অবতরণ করে বান্দাদের ডেকে ডেকে বলেন, ‘কে আছো অসুস্থ আমার কাছে চাও আমি শেফা দান করব, কে আছো অভাবগ্রস্ত আমার কাছে চাও আমি প্রাচুর্য দান করব, কে আছ বিপদগ্রস্ত আমার কাছে চাও আমি বিপদমুক্ত করে দেব।’

শবে কদর রমজানের মধ্যেই। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন: ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে সন্ধান করো। (মুসলিম) এ রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯। মনে রাখতে হবে, আরবিতে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়।

আরো পড়ুনঃ ওযু ছাড়া কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কিনা

সুতরাং আমাদের সকলের উচিত শবে কদরের রাত তিন আল্লাহর ও আমলের মাধ্যমে অতিবাহিত করা এ রাতে কুরআনের বিশেষ দোয়া গুলো আমল করা। বেশি বেশি নফল নামাজ ও নফল ইবাদত করা তাজবি তাহলিল পাঠ করা।

আল্লাহ যেন আমাদের এই আমল গুলোর মাধ্যমে আমাদের বিগত দিনের সকল গুনাহ খাতা গুলো মাফ করে দেন এ নিয়তে আমরা শবে কদরের রাতগুলো জাগরণ করে আল্লাহ তাআলার বিশেষ এবাদত করে আল্লাহতালা সন্তুষ্ট অর্জন করব। (ইনশাআল্লাহ)

লাইলাতুল কদরের আমল - লাইলাতুল কদরের দোয়াঃ শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে লাইলাতুল কদরের আমল, লাইলাতুল কদরের দোয়া, লাইলাতুল কদরের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো করতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url