চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি ফল চেরি। চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক। অনেকেই আছেন যারা চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেনা। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাতে এসেছি। তাহলে আসুন চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
- চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
- চেরি ফলের গুনাগুন
- চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা
- চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতাঃ শেষ কথা
চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের দেশের বিভিন্ন ফল রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধি সাধন হয়। ঠিক তেমনি একটি ফল হল চেরি যা আমাদের দেশে খুবই পরিচিত একটি ফল যার স্বাদ অত্যন্ত মিষ্টি। চেরি খাওয়ার উপকারিতা অনেক তাই আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আমরা উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত হবে জানতে পারবে।
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা - রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার
- রোগ প্রতিরোধ
- ওজন কমায়
- ক্যান্সার প্রতিরোধ
- ক্যান্সার প্রতিরোধ
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- হার্টের সমস্যায়
- ক্ষত সারাতে
- ডায়াবেটিকস দূর করে
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
- ব্যথা দূর করে
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
- চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধ
- অনিদ্রা থেকে মুক্তি
- দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর করে
রোগ প্রতিরোধ - চরিত্রে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। তাই শরীরকে রোগ প্রতিরোধ এবং সুস্থ রাখতে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে চেরি খেতে পারেন।
ওজন কমায় - ওজন বৃদ্ধি আমাদের সকলের জন্য একটি জটিল সমস্যা। ওজন বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা কমে যায় । আমাদের শরীরে চর্বি জমা হলে ওজন বাড়তে থাকে। নিয়মিত চেরি ফল খেলে পেটে চর্বি জমে না।
ক্যান্সার প্রতিরোধ - চেরি ফল আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত চেরি ফলে খাওয়ার কারণে দেহে যে মরা সেল বা কোষ থাকে সেটা শক্তিতে পরিণত করে থাকে। এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে - চেরি ফলে উচ্চ ফাইবার যুক্ত উপাদান রয়েছে। তাই যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত চেরি ফল খেতে পারেন। এতে করে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করবে।
হার্টের সমস্যায় - চেরি ফল দেহে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে থাকে।চেরিতে থাকা পটাশিয়াম শরীরের সোডিয়ামের উপস্থিতি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। যাদের হার্টের রোগ রয়েছে। তাদের জন্য চেরি ফলের উপকারিতা অনেক।
ক্ষত সারাতে - চেরি ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি তাই দেহের কোন অংশ কেটে গেলে বা ক্ষত হলে চেরি ফলের সে ক্ষত সারাতে সক্ষম।
ডায়াবেটিকস দূর করে - চেরিফরে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ যা আপনার বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধির সাথে সাথে ও ডায়াবেটিসের সমস্যা ও দূর করে থাকে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি - মেয়েদের জন্য চেরি ফল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চেরি ফল খাওয়ার কারনে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে এবং বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
ব্যথা দূর করে - চেরিফল বাতের ব্যথা, মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায় - যাঁরা স্মৃতি-দুর্বলতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য চেরি উপকারী। এটি আলঝেইমারের প্রকোপ কমায় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করে।
চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি - চিরে ফেলে শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ত্বকের যত্ন বৃদ্ধি নয়, এটি সাথে সাথে আমাদের চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করত গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে থাকে।
অনিদ্রা থেকে মুক্তি - চেরিগুলিতে ঘুম উৎপন্নকারী এজেন্ট রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয় কারণ এতে মেলাটোনিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা ঘুমের ধরণ নিয়ন্ত্রণ করে। চেরি ব্ল্যাকবেরি, স্ট্রবেরির তুলনায় পাঁচগুণ বেশি মেলাটোনিন ধারণ করে, অনিদ্রাবা ঘুমের ঘাটতি পূরণ করে থাকে।
দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর করে - চেরিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। এগুলি মুক্ত র্যাডিকেল দ্বারা হওয়া সমস্ত ক্ষতির বিরুদ্ধে চোখকে রক্ষা করে। দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, ম্যাকুলার অবক্ষয় এবং চোখের শুষ্কতা এবং সেইসাথে প্রদাহ এবং চোখের সঠিক চাপ বজায় রাখতে সহায়তা করে। এবং সাধারণ সংক্রমণ থেকে চোখ রক্ষা করে।
গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
বিভিন্ন ফলের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় আপনি চেরি ফল খেতে পারেন যদি আপনার চেরি ফলের কোন অ্যালার্জি কিংবা প্রবলেম না হয়ে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ছেরি খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাবো।
১। গর্ভবতী এমন অনেক ফল রয়েছে যেগুলো গর্ভবতী মায়েদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও মারাত্মক কিন্তু চেরি ফলে বেশ কিছু উপাদান রয়েছে যা গর্ভ অবস্থায় মা ও শিশু দুদিনের জন্যই সুফলদায়ক।
২। চেরিতে রয়েছে লোহার উৎস। স্বাস্থ্যকর পরিমাণে চেরি খেতে পারলে গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
৩। চেরিতে উপস্থিত রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি।যা গর্ভাবস্থায় প্রদাহ প্রতিরোধ করে।
৪। চেরিতে থাকা পটাশিয়াম শরীরে শক্তি বাড়ায়, এর ফলে গর্ভবতী মহিলাদের ক্লান্তি দূর করে। এটি রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা ভ্রূণের পাশাপাশি মায়ের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা
৫। গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এটি প্ল্যাসেন্টায় রক্ত প্রবাহকে উন্নত করতে সহায়তা করে। যা শিশুর পুষ্টি এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে।
৬। গর্ভাবস্থায় বমি রোধ এবং রুচি বৃদ্ধি করতে চেরি ফলের স্বাদ আপনার মুখের পরিবর্তন করতে এবং রুচি ফিরাতে বিশেষভাবে কাজ করে।
৭। গর্ভবস্থায় নিজের শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চেরি থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুন আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে যথাসাধ্য সাহায্য করে থাকে।
চেরি ফলের গুনাগুন
পুষ্টি ও গুণাগুনে ভরপুর চেরি ফল। ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, অ্যান্থোসায়ানিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টির একটি ভাল উৎস যা শরীরের সঠিক কার্যকলাপের জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের বিপাকীয় কার্যকারিতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
১। খনিজ পটাসিয়াম যা স্নায়ুতন্ত্র, পেশীর কার্যকারিতা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
২। চেরি ভিটামিন এ, সি,ই এবং অ্যান্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ। চেরির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও চরিত্রে রয়েছে বিশেষ কিছু পুষ্টিগুণ।
চলুন তাহলে চেরি ফলের পুষ্টিগুণ গুলো জেনে নিন।
১০০ গ্রাম চেরিতে মাত্র ৯৭ গ্রাম ক্যালোরি থাকে। চেরিতে পাওয়া পুষ্টি উপাদানগুলো হলো : ক্যালোরি- ৯৭ গ্রাম, প্রোটিন- ১.০৬ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট- ১৬ গ্রাম, ফাইবার- ২.১ গ্রাম, ভিটামিন সি- ৭ মি.গ্রা, পটাসিয়াম- ২২২ মি.গ্রা, ক্যালসিয়াম- ১৩ মি, ম্যাগনেসিয়াম- ১১ মি.গ্রা, ক্যারোটিন-৩৮.০০ মাইক্রোগ্রাম, মেলাটোনিন-১.৬০ মাইক্রোগ্রাম
চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা
চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক আমাদের দেশে চেরি ফলটি অনেক পরিচিত। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করতে সক্ষম চেরি ফল। তবে এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। যা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আমরা জানতে পারবো।
চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতাঃ
১। চেরি ফলে রয়েছে উচ্চ ফাইবারযুক্ত উপাদান তাদের পেটের পিড়া এবং গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২। চেরি একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল হল এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
আপনার যদি চেরি থেকে অ্যালার্জি থাকে তবে সেটি আপনার জন্য বিপজ্জনক। চেরি খেলে অনেকেরই কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অ্যালার্জি অ্যাজমা অ্যান্ড ইমিউনোলজি বলে যে একজন চেরি অ্যালার্জিযুক্ত ব্যক্তির গলা বন্ধ, শ্বাসকষ্ট এবং আমবাত থাকতে পারে। চেরি খাওয়ার পরে আপনি যদি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে আপনি চেরি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতাঃ শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা, চেরি ফলের গুনাগুন, গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।
Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url