জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫

জিলহজ মাসের গুরুত্বজিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ নিয়ে আজকের আর্টিকালে আলোচনা করা হবে। আমরা জানি যে মুসলিমদের জন্য জিলহজ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত তাই অনেকেই এই মাস শুরু হওয়ার আগে এই মাসের ক্যালেন্ডার সম্পর্কে জানতে চাই।

জিলহজ-মাসের-ক্যালেন্ডার-১৪৪৫

জিলহজ্জ মাসকে হজের বলা হয়ে থাকে। আপনি যদি আগে থেকেই এই মাসের সম্পর্কে অবগত থাকতে জানতে হলে আপনাকে জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ জিলহজ্জ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ বিস্তারিত

জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫

জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই। আমরা যারা ইসলাম ধর্মের অনুসারী রয়েছি সাধারণত তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে জিলহজ মাস আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। কারণ এই গুরুত্বপূর্ণ মাস অর্থাৎ জিলহজ মাসেই পবিত্র হজ পালন করা হয়ে থাকে। আর পবিত্র হজ হলো ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি। তাছাড়া এই জিলহজ মাসের একটি নির্দিষ্ট দিনে মুসলিমদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা পালন করা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ রোজা অবস্থায় ফেসবুক চালানো যাবে কিনা

সাধারণত আমরা বাঙালি এবং আমাদের এই পৃথিবীতে ইংরেজি ক্যালেন্ডার বেশি লক্ষ্য করা হয় সাধারণত তাই মুসলিম হওয়ার শর্ত ইসলামিক ক্যালেন্ডার সম্পর্কে আমাদের তেমন কোন ধারণা নেই বললেই চলে। কিন্তু ইসলামিক দিক দিয়ে ইসলামিক ক্যালেন্ডারের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ প্রতিটি ইবাদাত ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হয়ে থাকে। তাই আমাদেরকে সঠিকভাবে ইবাদত পালন করতে হলে হিজরী ক্যালেন্ডার সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

আমরা ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছি যে জিলহজ মাস মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্রতম একটি মাস। ইসলামিক দিক দিয়ে কয়েকটি মাসকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সাধারণত এই মাসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাস। জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই কত তারিখ থেকে জিলহজ মাস শুরু হবে চলুন এই বিষয়টি জানার জন্য জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

জিলহজ-মাসের-ক্যালেন্ডার-১৪৪৫

২০২৪ সালের জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার

২০২৪ সালের জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ইতিমধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি যদি জানতে চান জিলহজ মাস কবে থেকে শুরু হবে এবং জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কত তারিখ হবে এই বিষয়গুলো তাহলে আপনাকে উপরের আলোচনা করা বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। কারণ আমরা ইতিমধ্যেই জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। যেহেতু এই বিষয়টি অনেকের চাহিদার কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে।

কারণ হিজরী ক্যালেন্ডার সম্পর্কে আমরা তেমন কোন ধারণা রাখি না এবং আমাদের কাছে হিজরী ক্যালেন্ডার নেই বললেই চলে। যখন হিজরি ক্যালেন্ডারের প্রয়োজন হয় সাধারণত তখন আমরা google এ সার্চ করে ইংরেজি ক্যালেন্ডার এর সাথে মিলিয়ে নেই। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই হিজরী ক্যালেন্ডার সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। কারণ মুসলিমদের প্রতিটি ইবাদাত পালন করা হয় হিজরী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।

জিলহজ মাসের ফজিলত

জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ আলোচনা করা হয়েছে এখন আমরা জিলহজ মাসের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করব। মুসলিমদের মধ্যে এমন কিছু নামধারী মুসলিম রয়েছে সাধারণত যারা জিলহজ মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানেনা। তারা একেবারে অজ্ঞ যে জিলহজ মাস মুসলিমদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের সুবিধার্থে প্রথমেই বলে রাখি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কয়েকটি মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি এর মধ্যে জিলহজ মাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পবিত্র হজের মাস হলো জিলহজ মাস। তিনটি মাসকে হজের জন্য উপযুক্ত মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই মাসগুলো হল শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ। এই তিনটি মাসের মধ্যে প্রধান মাস হল জিলহজ্জ। জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ এই ৬ দিন হজের মূল কার্যক্রম গুলো করা হয়ে থাকে। তাছাড়া জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করা হয়ে থাকে। সাধারণত তাই জিলহজ মাসের ফজিলত আরো বেড়ে গিয়েছে।

আল্লাহ তা'আলা এই ব্যাপারে বলেন, ‌‌"হজ সম্পাদন সুবিদিত মাস সমূহে। অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ করা স্থির করে তার জন্য হজের সময়ে স্ত্রীসম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ-বিবাদ বিধেয় নহে। তোমরা উত্তম কাজে যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা করবে আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ তোমরা আমাকে ভয় করো।" {সুরা বাকারা, আয়াতঃ ১৯৭}

হিজরি ক্যালেন্ডারের বারো মাসের মধ্যে চার মাস সব থেকে মর্যাদা সম্পন্ন। এই চারটি মাসের মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাস। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা বলেন, "প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি যা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে যেদিন আল্লাহ তাআলা আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। এই চার মাস হলো জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। এসব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, কলহ-বিবাদ ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

জিলহজ মাসের রোজা কয়টি

জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ নিয়ে আলোচনা শুরু করে জিলহজ মাস সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জেনেছি। জিলহজ মাসে বেশ কয়েকটি রোজা পালন করতে হয় সাধারণত আমরা অনেকেই জানিনা যে এই মাসের কোন দিনে রোজা পালন করতে হয়। তবে আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে জিলহজ মাসের রোজা গুলো আল্লাহতালার কাছে অনেক বেশি মর্যাদা সম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিলহজ মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা পালন করতেন। যারা হজে যেতেন না সাধারণত তারা জিলহজ মাসের ৯ তারিখ অর্থাৎ আরাফার দিবস রোজা পালন করতেন। আরাফার দিবসে রোজা পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ। যদি কেউ মনে করে থাকে যে জিলহজ মাসের প্রথম এক থেকে নয় তারিখ পর্যন্ত সিয়াম পালন করবেন তাহলে তিনি এই কাজটি করতে পারেন।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, "জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল, এমনকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের চেয়েও বেশি প্রিয় আমল।" সেহেতু একজন বান্দা হিসেবে আমাদের উচিত জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন সিয়াম পালনের মাধ্যমে আল্লাহতালার এবাদত বন্দেগী করা। কিন্তু ঈদুল আযহার দিন রোজা পালন করা যাবে না।

জিলহজ মাসের আমল

জিলহজ মাসের আমল রয়েছে সাধারণত এই আমল গুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার জিলহজ মাসের আমলগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। উপরের বিষয়গুলো পড়ে আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন যে জিলহজ মাস আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। সাধারণত তাই জিলহজ মাসে আমাদেরকে বেশ কিছু আমল করতে হবে আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য।

  • প্রথম আমল হল জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেলে যারা আল্লাহ তালার নামে কোরবানি দেবে সাধারণত তাদের নখ চুল-দাড়ি ইত্যাদি কাটা যাবে না। যদি কাটার প্রয়োজন হয় তাহলে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার আগেই এগুলো কেটে নিতে হবে।
  • দ্বিতীয় আমল হল জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন রোজা রাখা। রোজা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত তাই আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য জিলহজ মাসের এক তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত সিয়াম পালন করা।
  • কিছু আমল হল আল্লাহ তাআলার নামে বেশি বেশি জিকির করা। যেহেতু জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন আল্লাহতালার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাই এই দশ দিন আমাদেরকে আল্লাহ তাআলার জিকিরে মগ্ন থাকতে হবে।
  • আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হল জিলহজ মাসের প্রথম দিন থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত তাকবির পাঠ করা। তবে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে তাকবির পড়তে হবে। এটাকে তাকবিরে তাশরিক বলা হয়।

জিলহজ মাসের কত তারিখ ঈদ

জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত এখান থেকে এ বিষয়টি বের করা খুবই সহজ। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে জিলহজ মাস মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এই মাসে মুসলিমদের পবিত্র ঈদ ঈদুল আযহা পালন করা হয়ে থাকে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না যে জিলহজ মাসের কত তারিখে ঈদুল আযহা পালন করা হয়।

আরো পড়ুনঃ ওযু ছাড়া কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কিনা

একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা পালন করা হয়। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেটি এই বছর জুন মাসের ১৭ তারিখ হবে।

জিলহজ মাসের গুরুত্ব

জিলহজ মাসের গুরুত্ব আশা করি উপরের বিষয় গুলো করে ইতিমধ্যেই বুঝে গিয়েছেন। ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গ থেকে জিলহজ মাসের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন এবং আল্লাহ তায়ালা পালন করতে চান তাহলে আপনার উচিত জিলহজ মাসের সঠিক ব্যবহার করা। কারণ আমাদের মধ্যে অনেকেই জিলহজ মাস পায় কিন্তু অবহেলার সাথে পার করে থাকে।

জিলহজ-মাসের-গুরুত্ব

মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে হিজরী চারটি মাস গুরুত্বপূর্ণ এর মধ্যে জিলহজ মাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সাধারণত তাই আমাদেরকে জিলহজ মাসের আমল গুলো করতে হবে। কোন ধরনের আমলগুলো করতে হবে এই বিষয় সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি। একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত এই ধরনের আমলগুলো জিলহজ্জ মাস উপলক্ষে করতে থাকা।

আমাদের শেষ কথা

জিলহজ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি যদি জিলহজ মাসের পালন করতে চান এবং কত তারিখ থেকে এই মাস শুরু হবে এই বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আপনার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি জিলহজ মাস কবে শুরু হবে এবং কত তারিখে শেষ হবে। এই অনুযায়ী আপনি আপনার ইবাদত বন্দেগী করতে পারেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে হলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়ম অনুযায়ী এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন