শুক্রবার আসরের পরের আমল - শুক্রবার আসরের পর দরুদ

আমাদের মুসলিমদের কাছে শুক্রবার হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। সাধারণত অনেকেই শুক্রবারকে ঈদের দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সাধারণত অন্যান্য দিন মানুষ যে ইবাদত করে এই দিনে তার থেকে বেশি করার চেষ্টা করে। কারণ সপ্তাহে জুম্মার দিন অর্থাৎ শুক্রবার মুসলিম উম্মাহর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন।

শুক্রবার আসরের পরের আমল

সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই শুক্রবারে বিশেষ আমলগুলো করতে হবে। এই দিনটিতে বেশ কিছু সময় রয়েছে সাধারণত এই সময়গুলোতে যদি আমল করা যায় তাহলে সব থেকে বেশি ফলাফল পাওয়া যাবে। তার আগে আমাদেরকে অবশ্যই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ শুক্রবার আসরের পরের আমল - শুক্রবার আসরের পর দরুদ

শুক্রবার আসরের পরের আমল

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জুমার দিন অর্থাৎ শুক্রবার হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনটি তাৎপর্য সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অনেকগুলো হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে। এই দিনটিতে এমন কিছু সময় রয়েছে সাধারণত এই সময়গুলোতে যদি আল্লাহতালার কাছে কিছু চাওয়া হয় তাহলে তিনি কাউকে খালি হাতে ফেরায় না।

আরো পড়ুনঃ জুম্মার দিনে মহিলাদের নামাজ

জুমাবার সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, "দিবস সমূহের মধ্যে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিক সম্মানিত"{ইবনে মাজাহঃ ১০৮৪} তাহলে আমরা এখান থেকে জানতে পারি যে শুক্রবার অর্থাৎ জুম্মার দিন আল্লাহতালার কাছে কতটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন হাদিসে আরও বর্ণনা করা হয়েছে, 'সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হচ্ছে সর্বোত্তম কারণ এই দিনে হযরত আদম আঃ কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল।' {মুসলিমঃ ৮৫৪}

জুমার দিনের এমন একটি সময় রয়েছে যে সময় সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় যে এই সময়টি হল আসরের নামাজের পরের সময়। সাধারণত এই সময়টিতে মুসলিম উম্মার জন্য বেশ কিছু আমল এর কথা বলা হয়েছে। সাধারণত আমরা যদি আমলগুলো করতে পারি তাহলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হবে এবং আমরা যা চাইবো তাই তিনি দেবেন।

আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, 'জুমার দিন এমন একটি সময় আছে সেই সময়টাই যদি কোন মুসলিম নামাজরত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায় আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তার সেই চাহিদা অর্থাৎ দোয়া কবুল করবেন। এরপরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হাত দিয়ে এশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ত তার ইঙ্গিত করেন।'{বুখারীঃ ৬৪০০}

শুক্রবার আসরের পর দরুদ

আসরের সময় আমল গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দোয়া করা, জিকির করা ইস্তেগফার পড়া এবং আরো বেশ কিছু দরুদ রয়েছে যেগুলো পাঠ করা। কারণ এই সময় দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা বেশি খুশি হয় এবং আমাদের জীবনের গুনাহ গুলো মাফ করতে থাকে। সাধারণত প্রতি সপ্তাহে যেহেতু একবার শুক্রবার অর্থাৎ জুমার দিন আসে তাই এই দিনগুলো অবশ্যই আমাদেরকে কাজে লাগাতে হবে।

সাধারণত এই সময় উপরোক্ত আমলগুলো করলে আল্লাহ তা'আলা বেশি খুশি হয় এবং আমরা বেশি লাভবান হতে পারি। হাদিসে বর্ণিত আছে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিন আসর নামাজের পর ওই স্থানে বসে থেকে ৮০ বার নিজের দূরত্ব করবে তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছর নফল ইবাদত লেখা হবে।"

দরুদটি হলোঃ اللهم صل على محمد النبي الأمي وعلى آله وسلم تسليمًا 

বাংলা অর্থঃ আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়াসাল্লিম তাসলীমা।

শুক্রবার আসরের নামাজের পরে দোয়া কবুলের আমল

ওপরের আলোচনা থেকে আমরা এই বিষয়টি জানতে পেরেছি যে জুম্মার দিন আসরের সময় হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। সাধারণত এই সময় যদি আমরা আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চাই এবং মন থেকে দোয়া করি তাহলে আমাদের দোয়া কবুল হবে। কারণ বিভিন্ন হাদিস থেকে আমরা উপরোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারি।

আরো পড়ুনঃ ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ

ওপরে যেই দুরুদ উল্লেখ করা হয়েছে সাধারণত আমাদেরকে শুক্রবারে আসরের নামাজের পরে উপরোক্ত দরুদ পাঠ করতে হবে। এছাড়া নামাজ রত অবস্থায় আল্লাহ তাআলার কাছে চাইতে হবে। নামাজের পরে বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে আল্লাহ তায়ালার জিকির করতে হবে। নিজের ভুলগুলো স্বীকার করে আল্লাহ তায়ালার কাছে ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন, "তোমরা জুমার দিন আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়।"{ আবু দাউদঃ ১০৪৭} শুক্রবারের দিন আসরের নামাজের পরে আমাদেরকে দেখার পাঠ করতে হবে এবং বেশি বেশি দরুদ পাঠ করতে হবে। যদি আমরা এই আমল গুলো করতে পারি তাহলে আমাদের দোয়া কবুল হবে।

আসরের পর বিশেষ আমল সমূহ

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে দিনগুলোর মধ্যে সবথেকে উত্তম দিন হলো শুক্রবার অর্থাৎ জুমার দিন। বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন। এই দিনটিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই এই আমলগুলো করার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে আমরা যদি আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাই এবং আমাদের দোয়াগুলো কবুল করাতে চাই তাহলে।

আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পরে ৮০ বার আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়াসাল্লিম তাসলীমা। এই দরুদ পাঠ করে তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদত আমলনামায় লেখা হবে।"

বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় যে জুমার দিন একটি সময় রয়েছে সাধারণত এই সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে এই সময়ে দোয়া কবুল হয়ে থাকে। হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, "জুমার দিন ১২ ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোন মুসলিম এই সময় আল্লাহর কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করে তাহলে মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।"{আবু দাউদঃ ১০৪৮}

আমাদের শেষ কথা

আপনারা যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না সাধারণত তারা আজকের এই আর্টিকেল থেকে উপরোক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জেনে রাখুন। অবশ্যই এখন থেকে নিজের গুনাহ গুলো মাফ করার জন্য এবং আমলনামায় আরো নেকি লিখার উদ্দেশ্যে প্রতি শুক্রবার এই ইবাদত গুলো করতে থাকুন। আপনি যদি শুক্রবারে এই ইবাদতগুলো করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই আল্লাহতালার প্রিয় বান্দা হতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বারই রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব

বিশেষ করে আপনি শুক্রবারে কোন আমলগুলো করবেন এ বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আপনার সুবিধার্থে বলে রাখি আপনি শুক্রবারে বেশি বেশি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর উপর দরুদ পাঠ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url