ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব

আসসালামু আলাইকুম, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করব। অনেকেই আছেন যারা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব কতখানি সে সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব কতখানি সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব

তাহলে চলুন আমরা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব কতখানি এ বিষয়ে আজকের এই আটটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকি। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব

১২ই রবিউল আউয়াল ২০২৩

আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেলটি গুগলের সার্চ করে ওপেন করেছেন তারা অবশ্যই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব কতটুকু সে বিষয়ে জানতে আগ্রহী। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। এছাড়া ১২ই রবিউল আউয়াল ২০২৩ সম্পর্কে জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

আরো পড়ুনঃ রবিউল নামের অর্থ কি - রবিউল নামের ইসলামিক অর্থ কি

১২ই রবিউল আউয়াল অর্থাৎ ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হয়ে থাকে। কারণ ১২ রবিউল আউয়াল নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনে মুসলিম ধর্ম অবলম্বীরা নবী করীম সাঃ এর জন্মবার্ষিকী বা ঈদে মিলাদুন্নবী অনেক আনন্দের সাথে পালন করে থাকে। বাংলাদেশে অনেকে আছেন যারা ঈদে মিলাদুন্নবী অনেক আনন্দের সাথে উৎসবের সাথে পালন করে থাকে।

এবং বাংলাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ছুটি ও ঘোষণা করা হয়েছে। আর প্রতিবছরের মতো এই বছরও ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হবে ২০২৩ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ১৩ই আশ্বিন ১২ রবিউল আউয়াল। নিজে আমরা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব কতটুকু এবং রবিউল আউয়াল এর ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করব।

রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব

আরবি মাসের তৃতীয় মাস হলো রবিউল আউয়াল। রবিউল আউয়াল মাসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এই মাসেই আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেন এবং এই একই দিনে রিসালাতের দায়িত্ব শেষে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।

এ মাসটি বেশ কিছু কারণে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমটি হল এই মাসে আমাদের নবী করীম সাঃ এর জন্ম হয়েছে তার উম্মতের সঠিক পথ নির্দেশনের জন্যে তাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয়তঃ- এবং এই মাসেই আম্মাজান খাদিজাতুল কুবরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে বিয়ে করেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

তৃতীয় কারণ হলো:- এই মাসেই মুসলমানদের জন্য সর্বপ্রথম মসজিদ তৈরি করা হয় কুবা নামক স্থানে এবং এটিই ইসলামের ইতিহাসে নির্মিত প্রথম মসজিদ।

চতুর্থ কারণ হলো:- এই মাসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন। এবং যে দিন তিনি মদিনায়ে পৌঁছান তা ছিলো সোমবার ১২-ই রবিউল আউয়াল। 

পঞ্চম কারণ হলো:- এই মাসেই বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আরোপিত রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতার মাধ্যমে নিজের প্রভুর আহ্বানে সাড়া দেন তিনি।

তাই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল মাসের গুরুত্ব অনেকখানি। কারণ ইসলামে এই রবিউল আউয়াল মাসের নানা ঘটনা ও ইতিহাসের সাথে জড়িত রয়েছে। তাই আশা করি ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল মাসের গুরুত্ব কতখানি তা জানতে পেরেছেন।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল মাসের গুরুত্ব কতখানি তা ইতিমধ্যে আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এবার চলুন  রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত কতটুকু সে বিষয়ে জেনে নিন।

রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত

আজকের এই পোস্টে আমরা রবিউল আওয়াল মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানব ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব কতটুকু সে বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি। আমরা অনেকেই জানি এটা রবিউল আওয়াল মাস আরবি হিজরী বর্ষের মাসের তৃতীয় মাস আর এই মাসের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মবার্ষিকী হয় এই মাসের গুরুত্ব ও ফজলত অত্যাধিক বেশি এবং মর্যাদাবান।

এ দিন আমি জন্মলাভ করেছি এবং এ দিনেই আমি নুবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছি বা আমার উপর (কোরআন) নাযিল করা হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস, ১১৬২) মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালবাসা ও তাঁর প্রদর্শিত পথ অনুযায়ী জীবন-যাপন করা ঈমানের অংশ। এ প্রসঙ্গে ইমাম বুখারী (রহ.) তার কিতাবে স্বতন্ত্র একটি শিরোনাম এনেছেন, যার অর্থ ‘নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালবাসা ঈমানের অঙ্গ’।

আরো পড়ুনঃ জুম্মার দিনে মহিলাদের নামাজ

বিশিষ্ট সাহাবী আনাস (রা.) ও আবূহুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ওই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ আমি তার নিকট নিজ পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সকল মানুষ হতে প্রিয় না হবো’। (বুখারী শরীফ : হা: ১৫, মুসলিম শরিফ: হা: ৪৫, মুসনাদে আহমদ: ১২৪৩)।

এছাড়াও এই মাসে খাদিজাতুল কুবরা (রা.)-এর সঙ্গে রসুলে আকরাম (সা.)-এর পরিণয় হয়েছিল ১০ রবিউল আউয়াল। মহানবী (সা.) হিজরতের উদ্দেশে রওনা করেছিলেন ১ রবিউল আউয়াল। তিনি মদিনায় পৌঁছেন ১২ রবিউল আউয়াল। প্রিয়নবী মোস্তফা (সা.) মসজিদে কুবা নির্মাণ করেন ১৬ রবিউল আউয়াল।

রাসূলের (সা.) জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে আমাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। এ প্রসেঙ্গে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে যারা পরকালে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’। (আল আহযাব : ২১)।

রবিউল আউয়াল মাসের আমল

রবিউল আউয়াল মাস প্রত্যেক মুসলমানের জন্য একটু স্মরণীয় মাস হিসেবে চিহ্নিত এবং ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অত্যাধিক। কারণ রবিউল আওয়াল মাসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু সালামের জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকী। রবিউল আউয়াল মাসের আমল সম্পর্কে অনেকে জানতে চান আসলে রবিউল আউয়াল মাসের জন্য নির্ধারিত কোন এবাদত বা আমল কোরআন বা হাদিসের উল্লেখ নেই।

তবে কিছু আমল আছে অন্যান্য মাসের মতো এই মাসেও করা যায়। যেমন প্রতি চাঁদের ১৩,১৪ ও১৫ তারিখে রোজা রাখা, এবং প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার।

সোমবার রোজা রাখার ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সোমবারের রোজা সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এ দিন আমি জন্মলাভ করেছি এবং এ দিনেই আমি নুবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছি বা আমার উপর (কোরআন) নাযিল করা হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস, ১১৬২)

অন্য হাদিসের মধ্যে এসেছে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তায়ালার দরবারে) আমল পেশ করা হয়। আমার আমলগুলো রোজা অবস্থায় আল্লাহর সামনে পেশ করা হোক এটাই আমি পছন্দ করি। (তিরমিজি, হাদিস, ৭৪৭)

এছাড়াও প্রত্যেকটা মাস বা সময় আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করা আমাদের দায়িত্ব। আল্লাহর কাছে বেশি দোয়া করা বেশি বেশি নামাজ পড়া কোরআন তেলাওয়াত করা। বেশী বেশী দরুদ পাঠ করা। বেশি বেশি সালাম দেওয়া এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর আদর্শ নিজের জীবন গড়ে তোলা।

তাই উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় রবিউল আউয়াল মাসের নির্ধারিত কোন আমল আল্লাহ তা'আলা কোরআনে বা হাদিসে উল্লেখ করেনি তাই যারা রব্বুল আউয়াল মাসের নির্ধারিত কোন আমলের কথা বলবে বা পালন করবে তারা বেদাতিদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্বঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে ১২ই রবিউল আউয়াল ২০২৩, রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব, রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত, রবিউল আউয়াল মাসের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url