মিল্ক শেক খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা - মিল্ক শেকের দাম বাংলাদেশ

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা মিল্ক শেক খেতে পছন্দ করে। কিন্তু আমরা যেই মিল্ক শেক খায় সাধারণত এর মধ্যে কোন উপকার আছে কিনা আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ এই সম্পর্কে জানে না। তাদের খাবার কাজ তাই খেয়ে নেয় কিন্তু কোন ধরনের পুষ্টিকর গুন রয়েছে অথবা ক্ষতিকর দিক কি রয়েছে এ বিষয়ে তাদের কোন ধারণা নেই।

মিল্ক শেক খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা আজকের এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত ভাবে মিল্ক শেক সম্পর্কে জানবো। আশা করি আপনারা এখান থেকে বেশ কিছু তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং বাজার থেকে কিনে যেই মিল্ক শেক খান সাধারণত এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ মিল্ক শেক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - মিল্ক শেক এর দাম বাংলাদেশ

মিল্ক শেক খাওয়ার উপকারিতা

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে যে মিল্ক শেক খেলে কি উপকার হয়? সাধারণত তারা এটি প্রতিদিন খাই কিন্তু এর উপকারিতা সম্পর্কে তাদের তেমন কোন ধারণা নেই বললেই চলে। সাধারণত কেউ ওজন বাড়ানোর জন্য এটি খায় আবার কেউ ওজন কমানোর জন্য এটি খাই। তবে আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি মিল্ক শেক বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এটি খেলে দেহের বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়।

আরো পড়ুনঃ গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

বেশিরভাগ মিল্ক সেক খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না কারণ মিল্ক শেক তৈরি করার সময় বিভিন্ন ধরনের উপাদান যুক্ত করা হয় এর মধ্যে অন্যতম হলো খেজুর, কিসমিস, মিষ্টি কুমড়া গাজর সহ আরো বিভিন্ন ধরনের উপাদান। সাধারণত এর ফলে আমাদের শরীরের ভিটামিন মিনারেল এবং ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ হয়।

  • সাধারণত এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হার্ট এবং দাঁত ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • এছাড়া মিল্ক সেক এর মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি যা আমাদের শরীরে ভিটামিন এ চাহিদা পূরণ করে।
  • নিয়মিত মিল্ক শেক খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং স্বাস্থ্যবান করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি পূরণ করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • নিয়মিত মিল্ক শেক খেলে এটি আমাদের মস্তিষ্ক সঠিক মত কাজ করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • বিশেষ করে আমাদের হার্টের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
  • যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চাই সাধারণত তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো মিল্ক শেক।
  • নিয়মিত এটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর চাহিদা পূরণ করে থাকে।

মিল্ক শেক খাওয়ার অপকারিতা

অনেকেই মনে করে থাকে যে মিল্ক সেকের তেমন কোন অপকারিতা নেই। তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি যে এটি খাওয়ার বেশ কয়েকটি অপকারিতা রয়েছে। যেহেতু আপনি এটি নিয়মিত খাবেন এবং আপনার শরীরের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ তাই আপনাকে অবশ্যই এর অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

  • বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে সাধারণত তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হলো এটি। অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে মিল্ক শেক এলার্জি সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
  • আপনি যদি ওজন বাড়ানোর জন্য এটি খেয়ে থাকেন তাহলে হঠাৎ করে আপনার ওজন অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের আগে থেকেই হজমজনিত সমস্যা রয়েছে সাধারণত তাদের সাবধানে হওয়া উচিত। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে এটি হজমের সমস্যা করতে পারে।
  • যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে সাধারণত তাদেরকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খেতে হবে কারণ হঠাৎ করে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে মিল্ক শেক খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। এছাড়া আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • যাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা রয়েছে সাধারণত তাদেরকে একটু সাবধানের সাথে মিল্ক সেক খেতে হবে কারণ হঠাৎ করে এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরো বাড়িয়ে দেয়।

মিল্ক শেক খেলে কি ওজন বাড়ে

বিষয় হচ্ছে যারা অতিরিক্ত পরিমাণে পাতলা অর্থাৎ তাদের ওজন কোনমতে বাড়ছে না সাধারণত তারা বর্তমান সময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু বিজ্ঞাপন দেখে মিল্কশেক খেয়ে ওজন বাড়াতে চাই। কিন্তু এটি কি সত্য যে মিল্ক শেক খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে? অনেকেই বলে থাকে যে এটি সত্য কারণ ওজন বৃদ্ধি করতে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

বিভিন্ন ধরনের মিল্কশেক বর্তমান সময়ে পাওয়া যায়। আপনি যদি ওজন বৃদ্ধি করার জন্য খেতে চান তাহলে এক ধরনের মিল্ক শেক খেতে পারেন আবার ওজন কমানোর জন্য আরেকটি মিল্ক শেক খেতে পারেন। আপনাদের জানার সুবিধার্থে বলে রাখি যে মিল্ক শেক এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

আরো পড়ুনঃ বড়ই খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

মিল্ক সেক খাওয়ার পরে আপনার ওজন বাড়বে কিনা এটি নির্ভর করে আপনার খাদ্য তালিকার ওপর। সাধারণত আপনি প্রতিদিন কতটুকু ক্যালোরি গ্রহণ করছেন এর উপর নির্ভর করে আপনার ওজন বাড়বে না কমবে। এছাড়া আপনি নিয়মিত কতটুকু মিল্ক শেক গ্রহণ করছেন তার ওপর নির্ভর করে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।

এটি খাওয়ার ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে এর আরো একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি এবং ক্যালোরি। যখন আপনি নিয়মিত মিল্ক শেক খাবেন তখন এগুলো আপনার শরীরের সাথে মিশে যাবে এবং আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করবে। যেহেতু আপনাদের মনে একটি প্রশ্ন থাকে যে আদৌ কি ওজন বাড়ে কিনা? আশা করি আপনার উত্তর পেয়েছেন।

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

আপনি ওজন বাড়ানোর জন্য অথবা ওজন কমানোর জন্য যদি মিল্কশেক খেয়ে থাকেন তাহলে কিভাবে খাবেন অবশ্যই এর নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে জেনে রাখতে হবে। যদি এর নিয়ম যেন না থাকে তাহলে আপনি কখনোই এটি খেয়ে উপকৃত হবেন না। সাধারণত এটি কাজ না করার অন্যতম কারণ হলো খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে না জানা।

আপনি যখন মিল্ক শেক খাবেন এর আগে এক গ্লাস দুধ হালকা গরম করে নেবেন। এরপরে উক্ত দুধের মধ্যে এক থেকে দুই চামচ মিল্কশেক দিয়ে ভালোভাবে মিক্সচার করে নেবেন। এভাবে আপনি যদি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরে তাড়াতাড়ি কাজ করবে। যদি আপনি ওজন বাড়ানোর জন্য খান তাহলে ওজন বাড়বে আর যদি কমানোর জন্য খান তাহলে কমবে।

ওয়েট গেইন মিল্ক সেক খেলে কি হয়

আমরা অনেকেই ওয়েট গেইন এবং ওয়েট লুস এ বিষয়ে থেকে মিলিয়ে দেই। আপনাদের জানার সুবিধার্থে বলে রাখে যে এই দুইটি বিষয় দুই রকম। এখন আপনি যদি আপনার কম ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনাকে ওয়েট গেইন করতে হবে। ওয়েট গেইন করা হচ্ছে শরীরে ওজন বৃদ্ধি করা। আশা করি আজকের পর থেকে এ বিষয়টি আরো ভুল হবেনা।

এখন আপনার ওজন যদি অতিরিক্ত কম হয়ে থাকে এবং এই ওজনের জন্য মনের কাছে অনেক কথা শুনতে হয় তাহলে আপনি ওয়েট গেইন অর্থাৎ আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারেন। এখন একদিনে মানুষের ওজন বৃদ্ধি হয় না এর জন্য বেশ কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো নিয়মিত করতে হয়। নিজের খাদ্য তালিকা সঠিক রাখতে হয়।

আপনি যদি নিজের খাদ্য তালিকা সঠিক রেখে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। সাধারণত এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত খেতে হবে অবশ্যই নিয়ম মেনে। ওয়েট গেইন মিল্ক সেক এর বর্তমান বাজার মূল্য ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা এর মধ্যে। এর দাম কম বেশি হতে পারে।

ওয়েট লুস মিল্ক সেক এর দাম

এখন বিষয় হচ্ছে ওয়েট লুস সম্পর্কে জানা। আমরা যদি অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হয়ে থাকি তাহলে আমাদের অবশ্যই ওজন কমাতে হবে। এখন ওজন কমানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম করতে পারি যেমন নিয়মিত ব্যায়াম করার, জিম করা এবং আমাদের খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করা। এছাড়া বাজারে বেশ কিছু ওয়েট লুজ মিল্ক সেক পাওয়া যায় যেগুলো খেতে পারেন।

যেহেতু ওজন কমানোর জন্য আপনি এটি কিনবেন সেহেতু অন্যান্য মিল্কশেক এর মত অল্প দামে এটি পাবেন না। সাধারণত ওয়েট গেইন করা মিল্ক সেক এর মত ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে কিনতে হবে। আপনি বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম অথবা মার্কেটে গিয়ে সরাসরি এ বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেন।

মিল্ক সেক এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

আমরা ইতিমধ্যেই মিল্ক শেক এর অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। অপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দুইটি এক বিষয়। তবে আপনাদের সুবিধার্থে আবার বলে রাখি যে নিয়মিত মিল্ক শেক খাওয়ার তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। সাধারণত এর জন্য আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। নিয়মের বাইরে খাওয়া যাবে না এতে করে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরো পড়ুনঃ মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এছাড়া আপনি যদি একদিনে অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হবে এর মধ্যে অন্যতম আপনার অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে, যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে তাহলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। তবে শারীরিক কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।

আমাদের শেষ কথা

আমরা ইতিমধ্যেই বাজারে পাওয়া যায় এরকম বিভিন্ন ধরনের মিল্ক সেক নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চায় আবার অনেকেই আছে ওজন কমাতে চাই তাদের জন্য এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। তবে আপনি যেই জন্য খান না কেন আপনার শরীরে যদি কোন সমস্যা থাকে আগে থেকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত করতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। আশা করি আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url