রজব মাসে কি আমল করব

রজব মাসে কি আমল করব তা জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রজব মাসে কি আমল করব সে সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চলেছি। আল্লাহর দেওয়া প্রতিটা মাসেই কিছু না কিছু ফজিলত রয়েছে।

রজব মাসে কি আমল করব

রজবের মাসেও রয়েছে অনেক ফজিলত তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রজব মাসে কি আমল করব সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন আর দেরি না করে রজব মাসে কি আমল করব তা সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ রজব মাসে কি আমল করব

রজব মাসের আমল

জাহিলি যুগে এ মাসকে আরবরা বেশি সম্মান করতো এজন্য এর নাম রেখেছিল রজব মাস। রজব শব্দের অর্থ সম্মানিত।ইসলাম আগমনের পর বছরে ১২ মাসের মধ্য থেকে রজবসহ ৪টি মাসকে ‘আশহুরে হুরুম’ তথা সম্মানিত মাস ঘোষণা করা হয়। এ মাসটিতে যারা ভাবছেন রজব মাসে কি আমল করব তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন আজকে আপনাদের জন্য আমরা রজব মাসের আমল সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি।

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালে রোজার ক্যালেন্ডার

১। মর্যাদার এ মাসটিকে মহান আল্লাহ তাআলা যাবতীয় যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি ও রক্তপাত নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।

২। ১২ মাসে হয় এক বছর এবং বছরের চারটি মাস সম্মানিত এবং নিষিদ্ধ।তিনটি একাধারে জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং চতুর্থটি হলো ‘রজব মুদার’, যা জমাদিউল আখিরা ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস।’ (মুসলিম)

৩। রমজানের আগে রজব মাসটি পরে আর এই রজব মাসে নিজেদের আমল ও ইবাদতের জন্য উপযোগি এবং  গুরুত্বপূর্ণ মাসও রজব।

৪। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রজব হলো আল্লাহর মাস, শাবান হলো আমার মাস; রমজান হলো আমার উম্মতের মাস।’ (তিরমিজি)। তাই এ মাসগুলোতে আমাদের বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে কাটানো উচিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি রজব মাসে (ইবাদত দ্বারা) জমি চাষাবাদ করল না আর শাবান মাসে (ইবাদতের মাধ্যমে) জমি আগাছামুক্ত করল না; সে রমজান মাসে (ইবাদতের) ফসল তুলতে পারবে না।’ (বায়হাকি)

রজব মাসে কি আমল করব

আল্লাহর দেওয়া মনোনীত বারোটি মাসের মধ্যে চারটি মাস হলো সম্মানিত। তার মধ্যে একটি হলো রজব অনেকেই ভাবছেন রজব মাসে কি আমল করব। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রজব মাসে কি আমল করব তা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাবো।

মুসা ইবনে জাফর (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে একদিন রোজা রাখে,সে ব্যাক্তি এক বছর জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পায় এবং যে ব্যক্তি তিনদিন রোজা রাখে তার উপর বেহেশত ওয়াজিব হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেছেন - রজব বেহেশতের একটি ঝর্ণাধারার নাম; যার (পানি) দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়ে মিষ্টি। যে ব্যক্তি এ মাসে একদিন রোজা রাখে সে অবশ্যই এ ঝর্ণাধারা হতে পানি পান করবে।

নবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসে এক হাজার বার (لا إله إلا الله) বলবে, মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে ১ লক্ষ সওয়াব প্রদান করবেন এবং তার জন্য বেহেশতে ১ শত শহর নির্মাণ করে দিবেন।

আরো পড়ুনঃ ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ

মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের রাতসমূহের একটিতে (দুই রাকাত করে) ১০ রাকাত এ পদ্ধতিতে নামায আদায় করে: প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১ বার সুরা কাফিরুন এবং ৩ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে। মহান আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেন।

আল্লাহ তায়ালার নবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে : যে ব্যক্তি রজব মাসে এক হাজার বার (لا إله إلا الله) [লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্] পাঠ করবে, মহান আল্লাহ্ তাকে ১ লক্ষ নেকি দান করবেন এবং তার জন্য বেহেশতে ১০০টি শহর নির্মাণ করবেন।

কোন ব্যক্তি যদি রজব মাসের প্রত্যেক রাতে (দুই রাকাত করে) ১০ রাকাত নামায আদায় করে এ পদ্ধতিতে: প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১ বার সুরা কাফিরুন এবং ৩ বার সুরা ইখলাস। তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দিবেন।

রজব মাসের ফজিলত

হিজরি মাসগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ ও মহিমান্বিত মাসের নাম রজব। এ মাস আসে রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে। তাই অনেকের ভেবে থাকেন রজব মাসের ফজিলত গুলো কি। তাহলে আর দেরি না করে আজকের এই আর্টিকেলে রজব মাসে কি আমল করব তা সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিস্তারিত কিছু আলোচনা নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি তাহলে রজব মাসের ফজিলত গুলো কি তার সম্পর্কে জেনে নিন।

২৭ রজবে রোজা রাখা অনেক ফজিলত। এমনকি অনেকের মধ্যে এ বিশ্বাস রয়েছে যে এই একটি রোজার ফজিলত এক হাজার রোজার সমান।

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুলেকে (সা.) রজব ও শাবান মাসে এত বেশি রোজা রাখতে দেখেছি, রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে এত রোজা রাখতে দেখিনি। আল্লাহর পরে মাখলুকের মধ্যে রাসুলেপাক (সা.) এর প্রথম স্থান হওয়ার পরেও তিনি রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে রজব মাস থেকে রোজা রাখা শুরু করতেন।

তাই আমাদের সকলেরই উচিত রাসূল সাঃ এর অনুসরণ করা।এছাড়া হযরত রাসুল করিম (সা.) শাবান মাসেও অনেক বেশি ইবাদত করতেন আর তিনি (সা.) রমজান ছাড়াও প্রতি মাসে নফল রোজা রাখতেন আর বিশেষ করে রজব মাসে।

আমরাও যদি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত অনুযায়ি প্রতি মাসে কয়েকটি করে নফল রোজা রাখি তাহলে রমজানের রোজা আমাদের জন্য আরো সহজ হবে। এছাড়া আমরা যদি মনের সব দূর্বলতা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে রজব মাস থেকেই রমজানের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করি ,তাহলে আমাদের সব ইবাদত বন্দেগী পরিশুদ্ধ হবে এবং আল্লাহ তায়ালা অনেক খুশি হবেন।

রজব মাসের দোয়া

আজকের এই আর্টিকেলে রজব মাসে কি আমল করব। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আপনাদের জন্য আমরা রজব মাসে কি আমল করব তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।

আরো পড়ুনঃ সেরা ইসলামিক ওয়েবসাইটসমূহ

রজব আল্লাহর মাস। এ মাসে মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে বরকত চাইবেন এবং শোকরগুজার করবেন। রমজানের ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরো রজব মাসজুড়ে বেশি বেশি বরকতের দোয়া পড়তে বলেছেন। তাই আমাদের সকলকে এ দোয়াটি রজব মাসে বেশি বেশি আমল করা উচিত।

রজব মাসের দোয়া-

اَللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

উচ্চারণঃ ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।

অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান মাস আমাদের নসিব করুন।’ (বুখারি ও মুসলিম)

রজব মাসে কি আমল করবঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে রজব মাসে কি আমল করব? রজব মাসের দোয়া, রজব মাসের ফজিলত, রজব মাসের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url