সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে - সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে? এর সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের অনেকের আগ্রহের একটি জায়গা হল সারোগেসি। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা সারোগেসি কি এ সম্পর্কে জানেনা। আজকের এই পোস্টে আমরা সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে এবং সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল এ সম্পর্কে জানব।

আপনি যদি সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে তা জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে - সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল এ বিষয়টি জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে - সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল

সারোগেসি পদ্ধতি কি?

সন্তান গ্রহণের একটি নতুন পদ্ধতির নাম হল সারোগেসি। এর অর্থ হচ্ছে অন্যের গর্ভ ভাড়া করে সেখানে একজন দম্পতির সন্তান জন্ম দেওয়া। একজন নারীর গর্ভধারণের সময় যেসব খরচ দরকার হয় এবং এর যথেষ্ট পারিশ্রমিক দিয়ে অন্য মহিলার গর্ভে এক দম্পতির সন্তান জন্ম দেওয়া। সাধারণত এ পদ্ধতিকে সারোগেসি পদ্ধতি বলা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ পদ্ধতি চালু হয়েছে। তাই আজকে আমরা সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে এ সম্পর্কে আলোচনা করব।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা

যেসব মহিলা সিঙ্গেল মাদার থাকতে চাই অথবা তাদের সৌন্দর্য নষ্ট হবে বলে বাচ্চা নিতে চাই না তারা সারোগেসি পদ্ধতি অবলম্বন করে বাচ্চা নিয়ে থাকেন। এখন সমকামীরাও এই পদ্ধতিতে বাচ্চা নিয়ে থাকে যা ইসলামের দৃষ্টিতে পুরোপুরি হারাম এবং নিষিদ্ধ। এবং সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যদি এভাবে সন্তান গ্রহণ করে তাহলে মানুষের বংশধারার পবিত্রতা বজায় থাকে না।

অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এ পদ্ধতিতে বাচ্চা নেওয়ার ফলে সন্তানের প্রকৃত বাবা-মাকে হবে এই নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই আজকে আমরা সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে? সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল? এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে

আপনি ইতিমধ্যে সারোগেসি পদ্ধতিতে বিষয়টি জানতে পেরেছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন, " তিনিই তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন ও তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে সে তার কাছে শান্তি পায়। তারপর যখন সে তার সঙ্গে সঙ্গম হয় তখন সে এক হালকা গর্ভধারণ করে। অতঃপর গর্ভ যখন ভারী হয়ে আসে তখন তারা উভয়ে তাদের রব আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, যদি আপনি আমাদের এক পূর্ণাঙ্গ সন্তান দান করেন তাহলে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব"{ সূরা আরাফ আয়াতঃ ১৮৯}

অন্য আর এক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন," আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে রাখে সংরক্ষিত, নিজেদের স্ত্রী বা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ছাড়া, এতে তারা হবে না নিন্দিত, অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারাই হবে সীমালংঘনকারী" বর্তমান সময়ে জৈবিক চাহিদা পূরণ ও সন্তান গ্রহণের একমাত্র মাধ্যম হলো নিজের বিবাহিত স্ত্রী। এর বাইরে কারো সাথে চাহিদা পূরণ করা নিষিদ্ধ।

আরো পড়ুনঃ দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে কি করনীয়

আল্লাহতালা এরশাদ করেন, " তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের ফসল ক্ষেত্র। সুতরাং তোমরা তোমাদের ফসল খেতে গমন করো যেভাবে চাও" অনেকেই বলে থাকে যে সারোগেসি পদ্ধতিতে নারী-পুরুষের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক হয় না তাই এটিকে বিবাহ বহির্ভূত ব্যভিচার বলে আখ্যা দেওয়া যায় না। তাদের জন্য উপরের আয়াতটি।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, " যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে তার জন্য বৈধ নয় অন্যের ফসলে নিজের পানি সেচন করেন।" তাছাড়া সারোগেসি মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর আসল মাকে হবে এই নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। আপনি যদি কুরআনের বিধান অনুযায়ী বিবেচনা করেন তাহলে জন্মদাতা নারী হয় সন্তানের আসল মা।

আল্লাহ তা'আলা বলেন, " তোমাদের মধ্যে যারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে জিহার করে অর্থাৎ স্ত্রীকে বলে যে তুমি আমার জন্য আমার মায়ের পিঠের মত তাদের স্ত্রীরা তাদের মা নয়। তাদের মা তো শুধু তারাই যারা তাদের জন্ম দিয়েছে। তারা অবশ্যই ঘৃণা ও মিথ্যা কথা বলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপ মোচনকারী, বড়ই ক্ষমাশীল"

সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল

এই পোস্টে আমরা ইতিমধ্যে সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি যদি সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন সারাদেশে পদ্ধতি কি হালাল তা জেনে নেই।

সন্তান যে মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম গ্রহণ করবে তার অনেক আত্মীয়স্বজন এই সন্তানের নিকটাত্মীয় বলে বিবেচিত হবে। যাদের সন্তানদের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এই সন্তানের জন্য হারাম হবে। কিন্তু যেহেতু সারোগেট মা তারা পাওয়ার পর সন্তানকে তার চুক্তিবদ্ধ পিতা-মাতার কাছে হস্তান্তর করে দেয় আর কোন যোগাযোগ থাকতে পারে না। তাই এই শিশুটি বড় হয়ে কিভাবে শনাক্ত করবে তার সঙ্গে কার বিয়ে হচ্ছে?

আরো পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

যাকে বিয়ে করছে সেই তার সারোগেট মায়ের আত্মীয় হবে কিনা এ বিষয়টি জানার কোন পদ্ধতি থাকে না। তারা পরস্পর ভাই বোন ও হতে পারে। আমরা জানি যে ইসলামে ভাই বোনের মধ্যে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম। কিন্তু সন্তান বড় হবার পর এসব বিষয় শনাক্ত করা কখনও সম্ভব হবে না। তাই এই পদ্ধতিটি হারাম বলে ঘোষণা। ইসলাম কখনোই পদ্ধতি সমর্থন করে না।

তাই আমরা মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত এরকম হারাম পদ্ধতি থেকে সবসময় আমাদের নিজে থেকে বিরত রাখা। যতই কষ্ট হোক না কেন আল্লাহ তালার বিধান এবং নিয়ম অনুযায়ী আমাদের সন্তান জন্ম দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে তৃপ্তি এবং আল্লাহ তাআলার রহমত। তাই আপনি জেনে রাখুন যে সারোগেসি পদ্ধতি একটি হারাম পদ্ধতি।

শেষ কথাঃ সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে - সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল

আপনারা যারা সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে - সারোগেসি পদ্ধতি কি হালাল? এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে ছিলেন তাদের জন্য উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে তা জানার জন্য আপনাকে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে তা জানতে পারবেন। আপনাদের সুবিধার্থে বলে দেই যে সারোগেসি পদ্ধতি একটি হারাম পদ্ধতি।

সারোগেসি পদ্ধতিতে ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Skbd IT এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url